বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে বাড়ছে ঝড়ে পড়া শিশুর সংখ্যা

রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, কুড়িগ্রাম
  • Update Time : সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৭৪ Time View

রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে না যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের অভাবে দিন দিন বাড়ছে ঝড়ে পড়া শিশুর সংখ্যা। এ নিয়ে সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় অভিভাবকরা।কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, জেলায় ১২’শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নদ-নদী অববাহিকার ৪ শতাধিক চরাঞ্চলেই ১’শ ৬৯টি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এর মধ্যে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের ছাট কালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর হলোখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সারডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক দুর্গম চরের অজুহাতে বিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হন না।

সরেজমিনে সোমবার সকাল ৯টায় সারডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহিনুর আখতার এবং সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস শিক্ষক মিলনায়তনে বসে আছেন। বিদ্যালয় জুড়ে শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণীতেই ৩জন শিক্ষার্থী আপেল, রঞ্জিনা ও সুমাইয়া বই খাতা নিয়ে বসে আছে। ক্লাসে কোন শিক্ষক না থাকায় খেলাধুলায় ব্যস্ত এসব কোমলমতি শিক্ষার্থী।সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন অপর দুই সহকারী শিক্ষক আরজু আরা ও মাহমুদা আখতার। সংবাদকর্মীদের দেখে ঘাবড়ে যান ওই দুই শিক্ষিকা। এই দুই শিক্ষক সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে আসলেও হাজিরা খাতায় সকাল ৯টায় স্বাক্ষর করে উপস্থিতি দেখান।এলাকার আজিজুল, মজিবর, মর্তুজা, খোকা, বজলার রহমান সহ আরো অনেকে বলেন, এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুল আসেন না। মাঝে মধ্যে আসলেও দেরিতে আসেন। যার কারণে বাচ্চারা পড়ালেখায় আগ্রহ হারাচ্ছেন। অনেক ছাত্র-ছাত্রী ইতোমধ্যে স্কুল থেকে বিমুখ হয়েছে। কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা সময়মত ক্লাসে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে। শিক্ষকরা ক্লাসে না আসায় বিরক্ত হয়েই এখন বাচ্চারা স্কুল আসে না।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ে দেরিতে আসা সহকারী শিক্ষিকা আরজু আরা জানান, তার নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু জনিত কারণে বিদ্যালয়ে আসতে দেরি হয়েছে।বিদ্যালয়ে দেরিতে আসা অপর সহকারী শিক্ষক মাহমুদা আখতার বলেন, আমার বাড়ি হলোখানায়। স্কুল থেকে অনেক দূরে। যে কারণে স্কুলে আসতে দেরি হয়। তাছাড়া পারিবারিক কাজ সমাধান করে স্কুলে পৌঁছতে একটু আধটু দেরি হয়েই থাকে।দায়িত্বরত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইয়াসিন আলী জানান, চর সারডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দেরিতে উপস্থিতির বিষয়টির অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সত্যতা পেয়েছি। আমি তাদের বিষয়ে যথাযথ প্রতিবেদন দাখিল করব।এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, সকাল ৯টার পর শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কিউএনবি/অনিমা/২৩ জানুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৭:১১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit