শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন

তাকওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • ৪৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : তাকওয়ার শাব্দিক অর্থ ভয় করা, বিরত থাকা, সংকোচ বোধ করা, রক্ষা করা, সতর্কতা অবলম্বন করা ইত্যাদি। তবে তাকওয়া শব্দের সবচেয়ে সুপরিচিত ও সুপ্রসিদ্ধ অর্থ ভয় করা। পারিভাষিক অর্থে তাকওয়া বলা হয় আল্লাহর প্রতিটি বিধিবিধান পালনের ক্ষেত্রে ভয় করাকে। কীভাবে ভয় করতে হবে সেই দৃষ্টান্ত হাদিসে রয়েছে।

উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) একবার উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে তাক্বওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কাঁটাযুক্ত পথে চলেছেন? উমর (রা.) বলেন, হ্যাঁ। উবাই ইবন কাব (রা.) পুনরায় বললেন, কিভাবে চলেছেন? জবাবে উমর (রা.) বলেন, পোশাকে যেন কাঁটা বিদ্ধ না হয়, গায়ে যেন কাঁটা না লাগে সে জন্য চেষ্টা করেছি ও সতর্কভাবে চলেছি। উবাই ইবনে কা’ব (রা.) বলেন, এটাই হচ্ছে তাক্বওয়ার উদাহরণ। (আবদুল্লাহ নাসের আলওয়ান, তারবিয়াতুল আওলাদ ফিল ইসলাম (বৈরুতঃ দারুস সালাম, ১৯৮১ খৃ.)।

উপরের হাদিস থেকে বোঝা যায় জীবনযাপনের ক্ষেত্রে হারাম থেকে, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের অপছন্দীয় কাজকর্ম থেকে গুটিশুটি হয়ে চলার নাম-ই হল, তাকওয়া। তাকওয়া বিষয়টি এমন নয়, ইচ্ছে হলে অবলম্বন করলাম, ইচ্ছে হলনা অবলম্বন করলাম না। প্রতিটি মুমিন মুসলমানের অন্তরে আল্লাহর ভয় তথা তাকওয়া থাকা অপরিহার্য কর্তব্য। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে অসংখ্য জায়গায় তাকওয়া অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

আমি তোমাদের পূর্বের আহলে কিতাবদের এ উপদেশ দিয়েছিলাম আর এখন তোমাদেরকেও উপদেশ দিতেছি যে তাক্বওয়া অবলম্বন করো- (সুরা: ১৩১) হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের সেই প্রভুকে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে একই আত্মা থেকে সৃষ্টি করেছেন। (সুরা নিসা: ১) রসুল (সা.) বলেন, আমি তোমাদের নসীহত করছি আল্লাহকে ভয় করার এবং (ইমাম বা নেতার) কথা শুনা ও তার আনুগত্য করার। যদিও সে হয় হাবশী গোলাম।’’ (আহমদ; নাসাঈ; দারেমী, মিশকাত ১৬৫)

উক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, অবশ্যই তাকওয়ার গুরুত্ব রয়েছে। তাকওয়ার যেমন রয়েছে গুরুত্ব, তেমনই রয়েছে ফজিলত। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে কোথাও মুত্তাকীনদের গুণ বর্ণনা  করেছেন। আবার কোথাও মুত্তাকীনদের ফযিলত বর্ণনা করেছেন। মোটকথা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মুত্তাকীনদের সুসংবাদ সম্বলিত অসংখ্য আয়াত রয়েছে। নিশ্চয় খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে। (সুরা দোখান ৫১) কিন্তু যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, তাদের জন্যে নির্মিত রয়েছে প্রাসাদের উপর প্রাসাদ। এগুলোর তলদেশে নদী প্রবাহিত। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আল্লাহ প্রতিশ্রুতির খেলাফ করেন না। ( সুরা যুমার ২০)

খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে। যোগ্য আসনে, সর্বাধিপতি সম্রাটের সান্নিধ্যে। ( সূরা কামারঃ ৫৪-৫৫) নিশ্চয় খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে- উদ্যানরাজি ও নির্ঝরিণীসমূহে। তারা( পরিধান করবে চিকন ও পুরু রেশমীবস্ত্র, মুখোমুখি হয়ে বসবে। এরূপই হবে এবং আমি তাদেরকে আনতলোচনা স্ত্রী দেব। তারা সেখানে শান্ত মনে বিভিন্ন ফল-মূল আনতে বলবে। তারা সেখানে মৃত্যু আস্বাদন করবে না, প্রথম মৃত্যু ব্যতীত এবং আপনার পালনকর্তা তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন। আপনার পালনকর্তার কৃপায় এটাই মহা সাফল্য। ( সূরা দোখানঃ ৫১-৫)

মানুষের বাহ্যিক অবস্থা দেখে তাকওয়াবান কী না উপলব্ধি করা যায় না। তাকওয়া এমন একটি গুণ যেটা অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত। রাসূল (সাঃ) কে তাকওয়া সম্পর্কে জিগ্যেস করায় তিনি বুকে হাত দিয়ে দেখিয়েছেন তাকওয়া থাকে এখানে। আমারা মানুষকে সম্মান করি বাহ্যিক অবস্থা দেখে, সম্মান করি অর্থকড়ির মানদণ্ডে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার নিকট বান্দাদের মধ্যে অধিক সম্মানিত, যারা অধিক তাকওয়াবান। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আমাদেরকে তাকওয়াবান হিসেবে কবুল করুক, আল্লাহুম্মা আমিন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৪ মে ২০২৫, /বিকাল ৫:২০

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit