 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  আন্তর্জাতিক মহলে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩৩ বছর পর আবার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দেওয়ায় পরই এই বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। কিন্তু, ঠিক কতগুলো পরীক্ষা হয়েছে, কেনই বা তা বন্ধ করা হয়েছিল এবং এই মারণাস্ত্রগুলোর অধিকারী বর্তমানে কারা?
পারমাণবিক যুগের সূচনা হয় ১৯৪৫ সালের জুলাই মাসে। যুক্তরাষ্ট্র নিউ মেক্সিকোতে প্রথম পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার চালায়। এর পরপরই জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে বোমা ফেলা হয়।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৬ সালের কম্প্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট-ব্যান ট্রিটি (সিটিবিটি) চুক্তির মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২ হাজারটিরও বেশি পারমাণবিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই করেছে ১ হাজার ৩২টি এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন করেছে ৭১৫টি পরীক্ষা। এছাড়াও, ফ্রান্স ২১০টি, ব্রিটেন ৪৫টি এবং চীনও ৪৫টি পরীক্ষা করেছে।
সিটিবিটি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর মোট ১০টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়েছে, ভারত (২টি, ১৯৯৮), পাকিস্তান (২টি, ১৯৯৮) এবং উত্তর কোরিয়া (৬টি, ২০০৬ থেকে ২০১৭)।
মাটির উপরে, নীচে এবং পানির নিচে হওয়া এই পরীক্ষাগুলির মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। বিশেষত, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এবং কাজাখস্তান ও আর্কটিকে হওয়া সোভিয়েত পরীক্ষার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষের জমি দূষিত হয়েছে এবং তারা দশকের পর দশক ধরে স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন। বিশ্বজুড়ে এই ক্ষতির কথা ভেবে এবং মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যেই কম্প্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট-ব্যান ট্রিটি (সিটিবিটি) চুক্তি আনা হয়, যা সব দেশের জন্য সব ধরনের পারমাণবিক বিস্ফোরণ নিষিদ্ধ করে। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও আজও এটি অনুমোদন করেনি। ২০২৩ সালে রাশিয়াও এই চুক্তির অনুমোদন বাতিল করেছে।
কেন পরীক্ষা পুনরায় শুরু হতে পারে? পারমাণবিক পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো তথ্য সংগ্রহ এবং কৌশলগত বার্তা প্রদান। নতুন অস্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা এবং পুরোনো অস্ত্রের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য এই পরীক্ষাগুলো গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র যদি নতুন করে পরীক্ষা শুরু করে, তবে তা রাশিয়া এবং চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত শক্তির একটি জোরালো বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র পরীক্ষা শুরু করলে রাশিয়াও তাই করবে। তার মতে, একটি বৈশ্বিক পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে, রাশিয়ার ৫,৫৮০ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫,২২৫টি ওয়ারহেড রয়েছে। ১৯৮৬ সালে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি থাকলেও, বর্তমানে তা প্রায় ১২ হাজারে নেমে এসেছে। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন, এই তিনটি দেশই বর্তমানে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণ করছে।
সূত্র: রয়টার্স
কিউএনবি/অনিমা/৩১ অক্টোবর ২০২৫,/বিকাল ৫:৫৯