 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরাইলে বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বৃহস্পতিবার জেরুসালেমের প্রধান প্রবেশপথ অবরোধ করে প্রায় দুই লাখ অতিআর্থডক্স ইহুদি পুরুষের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘মিলিয়ন ম্যান প্রোটেস্ট’ নামে এই বিশাল সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরাইল।এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরাইল।
বিক্ষোভ চলাকালে শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে ২০ বছর বয়সি এক তরুণ পড়ে মারা যান। পুলিশ ঘটনাটি আত্মহত্যা কিনা তা তদন্ত করছে। হিব্রু গণমাধ্যমে নিহতের নাম মেনাখেম মেনডেল লিটজম্যান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। আয়োজকদের ভাষ্যমতে, এটি ছিল একটি ‘প্রার্থনা সমাবেশ’, তবে বাস্তবে এটি ইসরাইলের বিভিন্ন অতিআর্থডক্স সম্প্রদায়ের বিরল ঐক্য প্রদর্শন।
সাধারণত এসব সম্প্রদায় নিজেদের মধ্যে সীমিত থাকলেও এই বিক্ষোভে তাদের যৌথ উপস্থিতি সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় গণসমাবেশগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিক্ষোভের কয়েক ঘণ্টা আগে শহরের পশ্চিম প্রাচীর এলাকায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নতুন হারেদি ব্রিগেডের রিজার্ভ সদস্যদের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যা এই আন্দোলনের সঙ্গে স্পষ্ট বৈপরীত্য তৈরি করে।
প্রায় দুই হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও সমাবেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কিছু বিক্ষোভকারী সরাসরি সম্প্রচারে থাকা এক নারী সাংবাদিকের দিকে বোতল নিক্ষেপ করেন এবং পথচারীদের হয়রানি করেন। পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়লে পুলিশ ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে। নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আয়োজকরা দ্রুত বিক্ষোভ স্থগিতের ঘোষণা দেন এবং সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে সরে যেতে অনুরোধ করেন।

বিক্ষোভের পেছনে মূল কারণ হলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে অতিআর্থডক্স (হারেদি) পুরুষদের বাধ্যতামূলক নিয়োগের সরকারি পরিকল্পনা ও সাম্প্রতিক খসড়া আইনের বিরুদ্ধে অসন্তোষ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেনা নিয়োগ এড়ানো হারেদি যুবকদের মধ্যে ৮৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা মোট তালিকাভুক্ত প্রায় সাত হাজার খসড়া এড়ানো ব্যক্তির মাত্র ৭ শতাংশ।
বিতর্কের সূত্রপাত ২০২৩ সালের জুনে, যখন নিরাপত্তা পরিষেবা আইনের একটি ধারা অনুযায়ী হারেদি যেশিভা শিক্ষার্থীদের জন্য থাকা সামরিক সেবার ছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। পরের বছর ইসরাইলের উচ্চ আদালত রায় দেয় যে সরকারকে হারেদি যুবকদেরও সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিতে হবে।
তবে এখন পর্যন্ত খুব অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। সরকারের আশঙ্কা, নতুন কোনো নিয়োগ আইন পাশ হলে হারেদি রাজনৈতিক দল শাস ও ইউনাইটেড টোরাহ জুডেইজমের তীব্র বিরোধিতার কারণে ক্ষমতাসীন জোট ভেঙে পড়তে পারে। এ কারণেই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা চলছে।
কিউএনবি/আয়শা/৩১ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:১৫