খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরে পুত্রবধু ও ভাইদের দুই ঘন্টা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক শ^াশুরীর বিরুদ্ধে। ১৭ আগস্ট রোববার সকাল ৯টার দিকে জেলা শহরের রূপনগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে আটককৃতদের আত্মীয়-স্বজন ও সংবাদ কর্মীদের উপস্থিতিতে মুক্ত করা হয়।স্থানীয় ভাবে জানাগেছে, ডোমসার এলাকার তোতা মোল্যার পুত্র রুবেল মোল্যার সাথে ২ বছর পূর্বে মাদারীপুর জেলার শহরের কাঠপট্রি এলাকার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মরত মো. লুৎফর রহমান খানের মেয়ে নিশির বিয়ে হয়। বর্তমানে রুবেল মোল্যার পরিবার জেলা শহরের রূপ নগর এলাকায় বসবাস করে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করা রুবেল খান নিজেকে বিএসসি প্রকৌশলী দাবী করে প্রতারণার মাধ্যমে সমাজকর্ম বিষয়ে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে বিয়ে করে।
বিয়ের পর থেকেই শ^াশুরী ও স্বামীর পছন্দের হতে পারেনি নিশি। সিঙ্গাপুর ফেরত রুবেল মোল্যা কয়েক মাস পূর্বে আবার ইথোনিয়া প্রবাসে চলে যায়। তার পর থেকে শ^াশুরী আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। যত্রতত্র অন্তস্বত্তা পুত্রবধুকে মানসিক নির্যাতন করে। আজ সকালে নিশি তার ভাই নিয়ন খান ও ইমন খানের সাথে পিত্রালয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তখন তার শ^াশুরী পুত্রবধুর গহনা ও দামী কাপড়চোপর কেড়ে নেয়। বাঁধা দেওয়ায় পুত্রবধু ও তার দুই ভাইকে একটি কক্ষের ভেতরে আটকে রেখে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে রাখে। আটক অবস্থায় বিষয়টি মোবাইল ফোনে সংবাদকর্মী ও আত্মীয়দের জানায় তারা। পরে আত্মীয়-স্বজন ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে আটককৃতদের মুক্ত করা হয়। স্থানীয়রা আরো জানায়, রুবেল মোল্যার মা শাহিদা বেগম একজন অসামাজিক মহিলা। স্বামী-সন্তানসহ সকলকেই সে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সে জন্য যত নিচে নামার দরকার হয় ততই নিচে নামতে পারে শাহিদা বেগম।
রুবেলের স্ত্রী নিশি জানায়, রুবেল প্রবাসে যাওয়ার পরে শ^াশুরী তার ছেলেকে বলেছে বউয়ের সাথে সম্পর্ক রাখলে আমাকে মা ডাকবি না। শ^শুর শ^াশুরী যেমনই হোনক না কেন স্বামী ভালো থাকলে স্ত্রী ভরসা পায়। আমার স্বামীই ভালো না। আমার গর্ভ ধারণের কথা তাকে জানানোর পরে সে বলে আমাকে ব্লাকমেলিং করতে চাস। এখানে আমি কার ভরসায় থাকব। মিথ্য ও প্রতারনা দিয়েই তাদের সকল কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে আমি কিভাবে শান্তিতে থাকব।নিশির ভাই নিয়ন খান ও ইমন খান জানায়, সমাজের উচ্চ শিক্ষিত লোকদের নিয়ে আমাদের বাড়িতে রুবেলের পরিবার যায়। তাদের ছেলে বিদেশ থেকে বিএসসি পাশ বলে দাবী করে। এখন দেখি তাদের ছেলে রুবেল উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। সে কোন বিএসসি প্রকৌশলী না। প্রথম থেকেই এই পরিবার আমাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। আমার বোন অন্তস্বত্তা। তার পরিচর্যা ও বিশ্রামের দরকার। এখানে থেকে সে কোন কিছুই পায়না বরং মানসিক যন্ত্রণা পায়। তাই আজ আমরা দুই ভাই মিলে বোন নিশিকে নিতে আসি। নিশি যখন তার ব্যাগ গুছিয়ে নেয় তখন তার শ^াশুরী গিয়ে ব্যাগ থেকে গহনা বের করে নেয়। নিশি বাঁধা দেওয়ায় কক্ষের দরজা বন্ধ করে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে দেয়।
শাহিদা বেগম জানায়, পুত্রবধু ও তার ভাইরা শাহিদা বেগমকে মারধরের চেষ্টা করে। তখন আত্মরক্ষার্থে তাদের বন্ধি করে রাখে। তার স্বামী কানে শুনেনা। এই বিষয়ে সে কিছুই জানে না। পরিবারের সকল সিদ্ধান্ত সে নিজেই নেয়।
কিউএনবি/অনিমা/১৭ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৭:০৬