বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ: এক ম্যাচে ৬ রেকর্ড ঢাকার ১১ স্থানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১৩১ ৯ বলের সুপার ওভার, পাঁচ বলে ৫ রান করতে পারেনি বাংলাদেশ চিকিৎসক হয়েও সুরের ভুবনে ঝংকার তুলছেন রানা প্রশাসনে রদবদল নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি তাঁবেদার থেকে দেশ রক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে: রেজাউল করিম দৌলতপুরে ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে দেহ ব্যবসা : আটক-২ অবিশ্বাস্য থ্রোতে ভাঙল ৪৪ রানের জুটি, বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেন মিরাজ ফুলের মতো পবিত্র মানুষগুলোই আপনাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে”–কুড়িগ্রামে পথসভায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ কিম বাহিনীর সঙ্গে উত্তেজনা, প্রতিরক্ষা জোরদারের ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ার

তানজানিয়ায় ইসলাম ও মুসলমান

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : স্বাধীন রাষ্ট্র তানজানিয়া পূর্ব আফ্রিকান দেশ, যা নিরক্ষরেখার ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত। ১৯৬৪ সালে তানজানিয়া একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পূর্ববর্তী দুটি পৃথক রাজ্য টাঙ্গানিক ও জানজিবারের মিলনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল। তানজানিয়া পূর্ব আফ্রিকার একটি বৃহৎ দেশ, যার উত্তরে উগান্ডা ও কেনিয়া, পশ্চিমে রুয়ান্ডা ও জায়েরে, দক্ষিণে মোজাম্বিক ও জাম্বিয়া অবস্থিত।

মোট আয়তন ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪০৩ বর্গকিলোমিটার।

২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশটির লোকসংখ্যা ৬৬.৬২ মিলিয়ন। জনসংখ্যার ৫৫.৩ শতাংশ খ্রিস্টান, ৩১.৫ শতাংশ মুসলিম এবং বাকি ১১.৩ শতাংশ ঐতিহ্যবাহী ধর্ম পালন করে। দেশটিতে ইসলাম একটি প্রভাবশালী ধর্ম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মুসলমানদের বেশির ভাগ সুন্নি মুসলিম।

জানজিবার দ্বীপপুঞ্জ এবং অন্য ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ৯৯ শতাংশ মুসলিম অধিবাসীর বাস। 

তানজানিয়ার ইতিহাস

তানজানিয়ার সঙ্গে আরব ও ভারত উপদ্বীপদ্বয়ের যোগাযোগ বহুকালের। খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে এতদঞ্চলে মুসলিম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গে মিসরের মামলুক ও দাক্ষিণাত্যের বাহমনী সুলতানদের ছিল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক।

১৬ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এখানে পর্তুগিজদের আগমন ঘটে। ১৬৫২ সালে ওমানের সুলতানদের সাহায্যে পর্তুগিজরা বিতাড়িত হয়। ১৮৮৮ সালে দেশটি ব্রিটেন, জার্মানি ও ইতালির মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন তানজানিয়ার ম্যান্ডেট এবং পরে অছিপ্রাপ্ত হয়। ১৯৬১ সালে টাঙ্গানাইকা এবং ১৯৬৩ সালে জানজিবার স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৬৪ সালের ২৫ এপ্রিল দেশ দুটি একত্রে তানজানিয়া প্রজাতন্ত্র গঠন করে।

ইসলামের আগমন

৯৫০ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে মুসলমান ব্যবসায়ীরা এসে হাজির হয়। এসব মুসলমান প্রধানত আরবের হাজরামাউত থেকে পূর্ব আফ্রিকায় এসেছিল। পরবর্তী সময়ে ওমানের আরবরাও এখানে আসে এবং মাফিয়া, বাগামু, কিলওয়া ও জানজিবারে বসতি স্থাপন করে। ফলে ইসলাম তানজানিয়ায় শক্তি অর্জন করে এবং বিভিন্ন স্থানে ইসলামের আলো খুব দ্রুত প্রসারিত হতে থাকে। ১৯৫০ সালে সাঈদ ইবনে সুলতান জানজিবারে সরকার প্রতিষ্ঠা করলে মুসলমানদের প্রতিষ্ঠা সেখানে পাকাপোক্ত হয়ে যায়। ১৭ শতক পর্যন্ত আরবের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা খ্রিস্টান মিশনারিরা তানজানিয়ায় এসে হাজির হয় এবং খ্রিস্টধর্মের প্রচার শুরু করে। জনগণকে আকৃষ্ট করার জন্য খ্রিস্টানরা তাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে থাকে এবং খ্রিস্টানরা তানজানিয়ায় বিপুলসংখ্যক গির্জা, হাসপাতাল, পাঠশালা ও পাঠাগার গড়ে তোলে। তারা বড় বড় খামার গড়ে তোলে এবং অজ্ঞ কৃষকদের কৃষির উন্নত পদ্ধতিগুলো শিক্ষা দিতে থাকে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং দেশের উন্নয়নের জন্য খ্রিস্টান মিশনগুলো বেশ জোরেশোরে প্রয়াস চালায়। খ্রিস্টানদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলোতে কিছুসংখ্যক মুসলমান শিক্ষালাভ করতে থাকলে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ মতাদর্শ শিকড় গাড়তে শুরু করে এবং ইসলামী আদর্শ থেকে তাদের বিচ্যুতি ঘটতে থাকে। ফলে মুসলমানরা সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী এবং খ্রিস্টানরা বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীতে পরিণত হয়।

মুসলমানদের মধ্যে ইসলামী শিক্ষা

তানজানিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা মূলত ধর্মনিরপেক্ষ পদ্ধতির ওপর ভিত্তিশীল। দেশের বড় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলামী শিক্ষার কোনো নামগন্ধও নেই। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বিভিন্ন শহর যেমন—দারুস সালাম সিটি, কিলুসা, ডুডুমা, টাঙগা, মনিওনি, ইটাকি, টারুরা, উরামরু, কালিওয়া, ইউভাজলা প্রভৃতি স্থানে ছোট ছোট ছেলেমেয়ের জন্য কোরআন শিক্ষার পাঠশালা রয়েছে।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মুসলমানরা খুব পিছিয়ে আছে। প্রাথমিক শিক্ষায় প্রায় ৮০ শতাংশ মুসলিম ছেলেমেয়ে শিক্ষিত হলেও মাধ্যমিক শিক্ষায় এদের সংখ্যা মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উপকূল এলাকায় বেশ কিছু মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনো ইসলামী আচার-আচরণ পরিলক্ষিত হয়। তাদের মধ্যে নামাজ-রোজার নিয়মিত অনুশীলন লক্ষ করা যায়।

তানজানিয়ায় মুসলিম সংগঠন

তানজানিয়ায় মুসলমানরা সংখ্যালঘু হলেও সেখানে ইসলাম শিক্ষা ও ধর্ম পরিপালনের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মসজিদ রয়েছে। ‘রেনটেক ডিজিটাল’ নামক এক প্রতিষ্ঠানের হিসাব মতে, দেশটিতে ৮৬১টি ছোট-বড় মসজিদ আছে। ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য তানজানিয়ার মুসলমানদের মধ্যে ন্যাশনাল মুসলিম কাউন্সিল নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে ১৯৬৯ সালে। এটিই মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র সংগঠন, যার মাধ্যমে তারা তাদের বিভিন্ন মতামত পেশ করে থাকে।

ইসলামের কাজ করার জন্য তানজানিয়ায় তাবলিগ জামাতও কাজ করছে। এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মুসলমানরা মূলত এই তাবলিগ জামাতে কাজ শুরু করে এবং তারা বহু আফ্রিকানকে দ্বিনের দিকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে তানজানিয়ায় ইসলামের তৎপরতা আগের যেকোনো সময় থেকে অগ্রসরমাণ—এ কথা জোর দিয়েই বলা যায়।

লেখক : শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও সিনিয়র ইসলামী ব্যাংকার

কিউএনবি/অনিমা/৮ আগস্ট ২০২৫/সকাল ১০:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit