রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন

তাকদিরে বিশ্বাসের অর্থ, প্রকারভেদ ও স্তর

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : ইসলামী আকিদা ও বিশ্বাসের অন্যতম বিষয় হলো ভালো-মন্দ তাকদিরে বিশ্বাস করা। তাকদির শব্দের অর্থ নির্ধারণ করা বা নির্দিষ্ট করা। ইসলামী পরিভাষায় তাকদির হলো আল্লাহ কর্তৃক বান্দার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব বিষয় নির্ধারণ করা।

আল্লামা সাদ বলেন, ‘সৃষ্টির যাবতীয় বিষয় তথা ভালো-মন্দ, উপকার-অপকার ইত্যাদি স্থান-কাল এবং এসবের শুভ ও অশুভ, ইষ্ট-অনিষ্ট, সওয়াব ও আজাব আগে থেকে নির্ধারিত হওয়া।’ (সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, তাকদির শব্দের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)।
আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মানুষের তাকদির লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-জমিন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর আগে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি জগতের ভাগ্য লিখে রেখেছেন আকাশ ও জমিন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর আগে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৫৬)

তাকদিরের প্রকারভেদ

তাকদির সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে।

১. অপরিবর্তনীয়। ২. পরিবর্তনশীল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।’ (সুরা : আলে ইমরান ৩/১৮৫)
এ আয়াতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রাণীকেই মরতে হবে।
এটা অপরিবর্তনীয় ভাগ্য।
তবে কোন প্রাণী কখন মরবে তা আল্লাহর ইচ্ছায় কিছু আগে পরে হতে পারে। তাই ভাগ্যের কিছু অংশ পরিবর্তনশীল থাকে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ যা ইচ্ছা মিটিয়ে দেন এবং বহাল রাখেন। আর তাঁর নিকটেই আছে মূল কিতাব।’ (সুরা : রাদ, আয়াত ৩৯)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, দুটি কিতাব আছে। একটিতে কম-বেশি হয়ে থাকে। কারো দোয়া কিংবা ভালো-মন্দ কাজের কারণে ভাগ্যলিপিতে যে পরিবর্তন হয় সেটা কোন সময়ে বিশেষ শর্তের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। শর্ত পাওয়া গেলে পরিবর্তন হবে, আর শর্ত না পাওয়া গেলে পরিবর্তন হবে না। ভাগ্য পরিবর্তনের বিভিন্ন কারণ আছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ফায়সালাকে কোনো বস্তু পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে না দোয়া ছাড়া।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৩৯)

হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, রক্ত-সম্পর্ক রক্ষাকারীর আয়ু বৃদ্ধি পায়। আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে তার রুজি বৃদ্ধি হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘায়িত হোক সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৬)

তাকদিরে বিশ্বাসের স্তর

তাকদিরে বিশ্বাসের চারটি স্তর আছে, যা পবিত্র কোরআন দ্বারা প্রমাণিত।

প্রথম স্তর : আল্লাহর জ্ঞান। আল্লাহ তাআলা সব কিছু সম্পর্কে জানেন। তিনি যা ছিল এবং যা হবে, আর যা হয়নি যদি হতো তাহলে কি রকম হতো তাও জানেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যাতে তোমরা জানো যে আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাশালী। আর আল্লাহ সব কিছু তাঁর জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে রেখেছেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ১২)

দ্বিতীয় স্তর : লিপিবদ্ধকরণ। কিয়ামত পর্যন্ত যত কিছু ঘটবে সেসব কিছু মহান আল্লাহ লাওহে মাহফুজে লিখে রেখেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর প্রত্যেক বস্তু আমি স্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রেখেছি।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ১২)

তৃতীয় স্তর : আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি যা চান তা হয়, আর যা চান না তা হয় না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমার প্রতিপালক চাইতেন, তাহলে তারা এটা করতে পারত না।’

(সুরা : আনআম, আয়াত : ১১২)

তিনি আরো বলেন, ‘আর তোমরা ইচ্ছা করতে পারো না—যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন।’ (সুরা : দাহর, আয়াত ৩০; সুরা : তাকভির, আয়াত ২৯)

চতুর্থ স্তর : সৃষ্টি। মহান আল্লাহ সব কিছুর স্রষ্টা। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ সব কিছুর স্রষ্টা।’ (সুরা : ঝুমার, আয়াত ৬২)

তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যা করো, তাও।’ (সুরা : সাফফাত, আয়াত ৯৬)

বছরের নির্দিষ্ট এমন সময় আছে যখন আল্লাহ এ বছরের পরিকল্পনা ফেরেশতাদের কাছে প্রদান করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি এটি নাজিল করেছি এক বরকতময় রজনীতে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়, আমার পক্ষ থেকে নির্দেশক্রমে। আমিই তো প্রেরণ করে থাকি।’ (সুরা : দুখান, আয়াত ৩-৫)

কিউএনবি/অনিমা/১৯ অক্টোবর ২০২৫,/সকাল ৭:১৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit