রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

ইতালির যে গ্রামে বাড়ি কিনলেই মিলবে ২৩ হাজার ডলার

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : সবুজ পাহাড়, জলপাই গাছ আর আঙুরবাগানে ঘেরা শান্ত এক ইতালিয়ান গ্রাম—রাদিকন্ডোলি। টাসকানি অঞ্চলের সিয়েনা শহরের কাছে ছবির মতো এই গ্রাম একসময় ছিল প্রাণচঞ্চল। কিন্তু এখন প্রায় জনশূন্য—যেখানে একসময় তিন হাজার মানুষ থাকতেন, এখন সেখানে বাস মাত্র ৯৬৬ জনের। ৪৫০টি বাড়ির মধ্যে শতাধিক খালি পড়ে আছে।

এই নিস্তব্ধ গ্রামে আবার প্রাণ ফেরাতে স্থানীয় প্রশাসন নিয়েছে অভিনব উদ্যোগ। রাদিকন্ডোলিতে গিয়ে বাড়ি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাস করলে পাওয়া যাবে প্রায় ২৩ হাজার ডলার পর্যন্ত নগদ সহায়তা।

২০২৩ সালে চালু হওয়া এই কর্মসূচিতে যারা খালি বাড়ি কিনবেন, তাদের দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ইউরো (প্রায় ২৩ হাজার ডলার), পাশাপাশি পরিবহন ও অন্যান্য খাতে আরও ৬ হাজার ইউরো সহায়তা।

এ বছর প্রকল্পটি আরও সম্প্রসারিত হয়েছে—এবার ভাড়াটিয়ারাও পাচ্ছেন সরকারি সহায়তা। যারা ভাড়া থাকবেন, তাদের প্রথম দুই বছরের অর্ধেক ভাড়া বহন করবে সরকার, ২০২৬ সালের শুরু পর্যন্ত। মেয়র ফ্রান্সিসকো গুয়ারগুয়াগ্লিনি জানিয়েছেন, “দুই বছর আগে যে কর্মসূচি শুরু করেছিলাম, সেটি আরও জোরদার করেছি। এ বছর নতুন বাসিন্দাদের জন্য ৪ লাখ ইউরোর বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে।”

এখানকার বাড়িগুলোর মধ্যে ছোট অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে পুরোনো ফার্মহাউস পর্যন্ত আছে। দাম ৫০ থেকে ১ লাখ ইউরো। সংস্কারে লাগে প্রায় ১০ হাজার ইউরো। ফলে পুরো সহায়তা পেলে কেউ চাইলে ৩৫ হাজার ডলারের মধ্যে একটি সুন্দর অ্যাপার্টমেন্ট কিনে নিতে পারেন। ভাড়াটেরাও পাচ্ছেন সুবিধা—৪০০ ইউরোর ভাড়া এখন মিলছে মাত্র ২০০ ইউরোতে। তবে শর্ত হলো, ক্রেতাকে অন্তত ১০ বছর ও ভাড়াটিয়াকে ৪ বছর সেখানে থাকতে হবে।

১৯৫০ সালের পর থেকে রাদিকন্ডোলির জনসংখ্যা কমতে শুরু করে। তখন তরুণেরা কাজের সন্ধানে বড় শহরে চলে যান। বর্তমানে প্রতিবছর ১৫ জনের মৃত্যু হলেও জন্ম হয় মাত্র ৩টি শিশুর। ২০২৩ সালে প্রকল্প শুরুর পর এখন পর্যন্ত ২৩টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে, নতুন ৬০ জন বাসিন্দা যোগ হয়েছেন—তাদের বেশিরভাগ ইতালিয়ান, কয়েকজন বেলজিয়ানও আছেন। মেয়র গুয়ারগুয়াগ্লিনির লক্ষ্য অন্তত ১ হাজার বাসিন্দার প্রত্যাবর্তন।

রাদিকন্ডোলি শুধু মনোরম নয়, টেকসইও। পুরো গ্রাম চলে ভূ-তাপীয় শক্তিতে, এখানেই উৎপন্ন হয় বিদ্যুৎ। সেখান থেকে গ্রামটি রয়্যালটি পায়। মেয়র বলেন, “আমরা ছোট হলেও অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল।”

গ্রামটি সিয়েনা শহর থেকে ৪০ মিনিট ও ফ্লোরেন্স থেকে দেড় ঘণ্টার দূরত্বে। পর্যটক কম হলেও এখানে আঙুরের মদ, জলপাই তেল, পিচি পাস্তা ও বুনো শূকরের মাংস বেশ জনপ্রিয়। সারা বছরই চলে উৎসব, মেলা ও সংগীতানুষ্ঠান।

বাড়ি দেখতে চাইলে স্থানীয় রিয়েল এস্টেট এজেন্সি ভি পি ইমোবিলিয়ারি বা বিভিন্ন ইতালিয়ান ওয়েবসাইটে তালিকা পাওয়া যাবে। মেয়রদের আশা, নতুন মানুষদের আগমনে এই ঘুমন্ত গ্রাম আবার জেগে উঠবে—টাসকানির ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যে ফিরে আসবে প্রাণ।

কিউএনবি/অনিমা/১৯ অক্টোবর ২০২৫,/সকাল ৭:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit