বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

ইসলামে ইতিবাচক চিন্তার গুরুত্ব

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : জীবন মহান আল্লাহর দেওয়া অমূল্য নিয়ামত। মহান আল্লাহ তাঁর প্রত্যেক বান্দার জীবনকে অফুরন্ত নিয়ামত দিয়ে সাজিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিটি প্রাণ মহান আল্লাহর পরম রহমতের আশ্রয়ে থাকে, যা গভীরভাবে চিন্তা না করলে কখনো উপলব্ধিই হয় না। পৃথিবীর স্থিরতা, নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন থেকে শুরু করে এমন অনেক নিয়ামত প্রতিটি প্রাণ সার্বক্ষণিক ভোগ করছে, যেগুলোর নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নেই।

অথচ এগুলো এক মুহূর্তের জন্য বন্ধ হলে প্রাণের অস্তিত্ব বলে কিছু থাকবে না। তাই কোনো মানুষের ক্ষেত্রে এ কথা বলার সুযোগ নেই যে সে আল্লাহর রহমতের বাইরে আছে বা জীবনের কোনো না কোনো একটি ক্ষুদ্র মুহূর্তে সে আল্লাহর রহমতের বাইরে ছিল।

হ্যাঁ, মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের পরীক্ষা করার জন্য মাঝেমধ্যে কিছু অপ্রিয় পরিস্থিতির সম্মুখীন করেন, যারা সেই অবস্থায়ও মহান আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর ধৈর্য ধরতে পারে, মহান আল্লাহর ওপর আস্থা রাখতে পারে, তাদের জন্য সেই সাময়িক দুঃখ-কষ্টও বহু বড় পুরস্কার বয়ে আনে। তাই মানুষের উচিত জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ও প্রতিটি ঘটনাকে ইতিবাচকভাবে নেওয়া।

নিম্নে হাদিসের আলোকে ইতিবাচক চিন্তার কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হলো— 

আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করা : সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর সুধারণা পোষণ করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যদি কেউ সত্যি সত্যি সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর সুধারণা পোষণ করে, তবে দুনিয়ার পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হওয়া তার জন্য সহজ হয়ে যায়। আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য সৌভাগ্যের দরজা খুলে যায়, যা তাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমাকে আমার বান্দা যেভাবে ধারণা করে আমি (তার জন্য) সে রকম।

যখন সে আমাকে মনে করে সে সময় আমি তার সঙ্গেই থাকি। সুতরাং সে আমাকে মনে মনে স্মরণ করলে তাকে আমিও মনে মনে স্মরণ করি। আমাকে সে মজলিসে স্মরণ করলে আমিও তাকে তাদের চেয়ে ভালো মজলিসে (ফেরেশতাদের মজলিসে) মনে করি। সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে এলে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই। যদি সে আমার দিকে এক হাত এগিয়ে আসে, তবে তার দিকে আমি এক বাহু এগিয়ে যাই।

সে আমার দিকে হেঁটে অগ্রসর হলে আমি তার দিকে দৌড়িয়ে এগিয়ে যাই। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬০৩)

সব পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে নেওয়া : যে আল্লাহর ওপর ঈমান রাখে তার হারানোর কিছু নেই। ভালো-খারাপ সব পরিস্থিতি তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে, তাকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুহাইব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সব কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে শুকর গুজার করে আর অসচ্ছলতা বা দুঃখ-মুসিবতে আক্রান্ত হলে সবর করে, প্রতিটিই তার জন্য কল্যাণকর। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৯০)

প্রতি মুহূর্তে আশাবাদী থাকা : জীবনের প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর ওপর সুধারণা রাখা এবং তাঁর গায়েবি সাহায্যের আশায় থাকা আবশ্যক। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে তাঁর মৃত্যুর তিন দিন আগে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ যেন আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ না করে মৃত্যুবরণ না করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩১১৩)

ইতিবাচক কথা বলা : জীবনের সব পরিস্থিতিকে ইতিবাচক ভাবে নেওয়া জরুরি। এমনকি কোনো পরীক্ষার সম্মুখীন হলেও নেতিবাচক উক্তি করা উচিত নয়। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়য়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তুমি কোনো ব্যক্তিকে বলতে শুনবে, সব লোক ধ্বংস হয়েছে, তখন সে-ই তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসের কবলে পড়বে। অথবা সে যেন তাদের ধ্বংস করল।

(আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৮৩)

তাই মুমিনের উচিত সর্বদা মহান আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা, আল্লাহর সাহায্য ও উত্তম প্রতিদানের আশা রাখা এবং সব পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করা। ইনশাআল্লাহ, মহান আল্লাহর সাহায্য সব সময় সঙ্গে থাকবে।

কিউএনবি/অনিমা/৭ আগস্ট ২০২৫/রাত ৯:১১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit