বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন

জামাতে নামাজ আদায়ে প্রচলিত ১০ ভুল

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের সঙ্গে তুলনীয়।

জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে গিয়ে সাধারণত যেসব ভুল আমরা করে থাকি, তেমন ১০টি বিষয় নিম্নে তুলে ধরা হলো—

১. কাতার সোজা না করা : জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের প্রথম ধাপ হলো কাতার সোজা করে দাঁড়ানো। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই তোমাদের কাতার সোজা করে দাঁড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও মতভিন্নতা সৃষ্টি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৭১৭)

নিয়ম হলো—মসজিদে কাতারের জন্য যে দাগ দেওয়া থাকে, তাতে পায়ের গোড়ালি রাখা।

২. কাতারের মধ্যে ফাঁক রেখে দাঁড়ানো: জামাত শুরু হওয়ার পরও যদি কেউ এসে দেখে, কাতারের মধ্যে ফাঁকা জায়গা আছে, আর সেখানে সে দাঁড়াতে পারবে, তাহলে তাকে সে জায়গাটুকু পূর্ণ করে দাঁড়াতে হবে। (ফতোয়ায়ে শামি : ২/৩১০)

কেননা হাদিস শরিফে এমন ফাঁকা জায়গা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৬৬)

৩. সামনের কাতারে জায়গা খালি রেখে পেছনে দাঁড়ানো: নিয়ম হলো, প্রথমে সামনের কাতার পূর্ণ করবে। এরপর পেছনে নতুন কাতার করবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সামনের কাতার আগে সম্পূর্ণরূপে পূরণ করো, তারপর এর পেছনের  কাতার (এভাবে পর্যায়ক্রমে কাতারগুলো) পূরণ করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭১)

৪. দৌড়ে এসে জামাতে শরিক হওয়া: অনেকে জামাতের সওয়াব অর্জন করতে গিয়ে নবীজির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফেলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নামাজের ইকামত শুনলে তোমরা ধীর ও শান্তভাবে যাও এবং তাড়াহুড়া কোরো না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৬)

৫. রুকু না পেলে পরবর্তী রাকাতের অপেক্ষা করা: রুকু না পেলে অনেকে জামাতে শরিক না হয়ে এমনিই দাঁড়িয়ে থাকে। এ পদ্ধতিটিও ঠিক নয়। হাদিসের নির্দেশ হলো : ‘তোমরা ইমামকে যে অবস্থায় পাও নামাজে শরিক হয়ে যাও, আর যতটুকু ছুটে গেছে তা (জামাত শেষে) আদায় করো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৬)

সুতরাং ইমামকে যে অবস্থায়ই পাওয়া যাক নামাজে শরিক হয়ে যাবে।

৬. ইমামের আগে রুকু-সিজদা করা: জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার সময় অনেকে ইমামের আগের রুকু-সিজদায় চলে যায়। ইচ্ছা করে যারা এমন করে, তাদের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ কি এ নিয়ে কোনো ভয় করে না—যখন সে ইমামের আগে তার মাথা উঠিয়ে নেয় তখন আল্লাহ তার মাথাকে গাধার মাথায় কিংবা তার আকৃতিকে গাধার আকৃতিতে পাল্টে দিতে পারেন!’ (বুখারি, হাদিস : ৬৯১)

৭. সিজদায় হাত বাঁকিয়ে অন্যকে কষ্ট দেওয়া: সিজদার সময় অনেকে হাত এতটাই বাঁকিয়ে রাখে, যার ফলে তার পাশে নামাজ আদায়কারীর কষ্ট হয়। এমন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

৮. ইমাম সাহেবের কোনো ভুল হলে লোকমা না দেওয়া: মানুষ হিসেবে ইমাম সাহেবের ভুল হতেই পারে। কিছু ভুলের জন্য তো সাহু সিজদার বিধানও রয়েছে। আর কিছু ভুল এমন, যেখানে ইমাম সাহেবকে তাৎক্ষণিক সতর্ক করে দিতে হয়। যেমন—জোহর নামাজের তৃতীয় রাকাতেই ইমাম সাহেব শেষ বৈঠকের জন্য বসে পড়লেন। তখন তাঁকে লোকমা দিতে হবে। এ লোকমা যে কেউ দিতে পারে। যিনি ভুলটি ধরতে পারবেন, তিনিই লোকমা দিতে পারেন। (ফতোয়ায়ে রহীমিয়া : ৬/১৮৮)

৯. ইমাম সাহেব এক সালাম ফেরানোর পরই মাসবুক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে যাওয়া: অনেককেই দেখা যায়, ইমাম সাহেব এক সালাম ফেরানোর পর যখন দ্বিতীয় সালাম শুরু করেন, তখনই তারা দাঁড়িয়ে যায়। অথচ নিয়ম হলো, ইমাম সাহেব ডানে-বাঁয়ে উভয় দিকে সালাম ফেরানো শেষ করার পরও কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করে মাসবুক ব্যক্তি দাঁড়াবে, এর আগে নয়। (ফতোয়ায়ে শামি : ২/৩৪৮)

১০. মোনাজাতকে নামাজের অংশ মনে করা: আমাদের সমাজে প্রায় প্রতিটি মসজিদেই ফরজ নামাজের জামাত শেষে সম্মিলিতভাবে মোনাজাত করা হয়। বিশুদ্ধ মত হিসেবে, এভাবে মোনাজাত করাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে এ মোনাজাত নামাজের কোনো অংশ নয়। ফলে তা জামাতেরও অংশ নয়। সালাম ফেরানোর মধ্য দিয়ে যখন নামাজ শেষ হয়ে যায়, যখন ইমাম মোনাজাত করেন, তখন কেউ সেই মোনাজাতে শরিক হতেও পারেন, নাও হতে পারেন।

(সংক্ষেপিত ও পরিমার্জিত)

কিউএনবি/অনিমা/২১ জুলাই ২০২৫,/রাত ৯:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit