শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম

নকশা না মানা ঢাকার ৩৩৮২ ভবন ভাঙা হবে: রাজউক চেয়ারম্যান

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২২ Time View

ডেস্ক নিউজ : নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ঢাকায় নির্মাণাধীন ৩ হাজার ৩৮২টি ভবনের অবৈধ অংশ চিহ্নিত করে ভাঙা হবে, কাজগুলো শুরুও হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত “সমস্যার নগরী ঢাকা : সমাধান কোন পথে?” শীর্ষক এক নগর সংলাপে তিনি এ কথা জানান।

রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, অবৈধ ভবনগুলোর কাজ স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়ে পর্যায়ক্রমে ভবনগুলো আংশিক অংশ ভেঙে ফেলা হবে। প্রথম ধাপে সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ফৌজদারি মামলা দায়ের করা, নকশা বাতিল এবং প্রয়োজনে ভবনগুলো সিলগালা করা হবে। তিনি জানান, রাজউক এলাকায় নির্মাণাধীন ৩ হাজার ৩৮২টি ভবন চিহ্নিত করেছি, যেগুলো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। এই ভবনগুলোর যেটুকু অংশেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে, সেটুকু ভেঙে ফেলবো। আমি যতদিন দায়িত্বে আছি তারমধ্যে এই কাজ চালিয়েই যাবো। এগুলো ভেঙে হোক কিংবা অন্যভাবে হোক, তাদের নিয়মের মধ্যে আনবো। আমরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি।

নগর সরকার কিংবা এক ছাতার নিচে আনার মতো ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব উল্লেখ করে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকাকে এক আমব্রেলার নিচে না আনলে যত পরিকল্পনাই করা হোক না কেন কাজে আসবে না। সবকাজের সিদ্ধান্ত একটি জায়গা থেকে আসতে হবে। সেখানে নগর সরকার হোক কিংবা এক মেয়রের কাছে ক্ষমতা থাকুক, সেটায় সমস্যা নেই। নগরের পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, সেবাসহ সব সেবার বিষয়ে একটি জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, এই মুহূর্তে যারা বাড়ি করে ফেলেছে সেগুলোর ব্যবস্থা পরে নেবো। সব কাজ একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। তবে আন্ডার কনস্ট্রাকশন বিল্ডিংয়ে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না, সেটা নিশ্চিত করছি। আমাদের নতুন করে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা বেদখল হওয়া প্লটগুলো উদ্ধার করে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করবো। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ। 

অনুষ্ঠানে সংগঠনটির প্রকাশনা ‘ঢাকাই’ ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। একইসঙ্গে সংগঠনের সিনিয়র সদস্য হেলিমুল আলম বিপ্লবের প্রকাশিত ঢাকার খালগুলো নিয়ে প্রকাশিত “Dhaka’s Canals on Their Dying Breath, An In-Depth Look at How the capital’s Waterways Are Being Choked” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিআইপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন বলেন, ঢাকাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করতে গিয়ে সমস্যায় জর্জরিত করে ফেলেছি আমরা। ঢাকা শহরের বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। ঢাকার ড্যাপের পরিকল্পনায় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩৫ লাখ মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা। এক্ষেত্রে জোন ভিত্তিক পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। সুশাসন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে ঢাকার বাসযোগ্যতা ফেরানো সম্ভব।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র-ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান বলেন, ঢাকা শহর প্রকৃতি, মায়া, ব্যবস্থাপনায় ঢাকা থাকার কথা। কিন্তু ঢাকা এখন বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, জলজটে, শীষা দূষনে ঢাকা। আমাদের আর কতোদিন এই অপরিকল্পিত নগরের সমস্যাগুলো নিয়ে আমাদের শিশুদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে? শহরের অর্ধেক মানুষ ঘুমাতে পারেন না আমিনবাজার ও মাতুয়াইলের ল্যান্ডফিলের পোড়ানো বর্জ্যের দূষিত ধোয়ার কারনে। শব্দ দূষণ ৮০% হয় যানবাহনের কারনে। ঢাকা শহর এখন তাপের শহর হয়ে গেছে। এই শহরে আড়াই কোটি মানুষকে নিয়ে পরিকল্পনা করা যাবে না। যদি সমস্যার সমাধান করতে না পারি তাহলে সূচকে তলানি থেকে উপরে উঠতে পারবে না।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, দেশের জিডিপির এক পঞ্চমাংশ আসে ঢাকা থেকে। ঢাকার চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঘনবসতি, যানজট, দূষণ, জলাবদ্ধতা প্রভৃতি। এর অন্যতম কারনগুলা হচ্ছে ঢাকার ওপেন স্পেসগুলো দখল করা, খালগুলো দখল করা, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ভবন গড়ে তোলা। কোনো মন্ত্রণালয় স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি, দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করতে পারেনি গত আট মাসে। থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহরের মধ্যে বস্তি ছিলো।

কিন্তু তারা সেই জায়গা থেকে ফিরে এসেছে, তারা কমিউনিটি বেইজড হাউজিং করেছে। তারা পরিবর্তন এনেছে রাজউকের মতো সংস্থার মাধ্যমে। ঢাকায় ৮ ধরনের মহল্লা আছে। সেগুলোতে তিনটি করে উদাহরণ হিসেবে হাউজিং করা যায় তাহলে অনেকেই এটা দেখে উদ্ভুদ্ধ হবো। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুল্লাহ, স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান প্রমুখ।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২১ এপ্রিল ২০২৫,/বিকাল ৫:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit