বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

কাহারোলে বাঁশের সাঁকোই ১৫ গ্রামের মানুষের ভরসা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪১ Time View

ডেস্ক নিউজ : বর্ষাকালে নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সেতু। এই দুইয়ের উপরই ভরসা করতে হয় দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ঢেপা নদীর দুইপাশের ১৫টি গ্রামের মানুষকে। বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিদের নানান আশ্বাসের পরও দশকের পর দশক পার হলেও ঢেপা নদীর পরমেশপুর ঘাটে হয়নি সেতু। নদীর দুইপাশের পাকা সড়ক হলেও সেতু না হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছেন ওই ১৫ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষসহ দিনাজপুর-কাহারোলগামী লাখ লাখ মানুষ। 

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নেরে মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ঢেপা নদী। নদীর দুইপাশে ১৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যোগাযোগের জন্য পরমেশপুর ঘাটে রয়েছে চারশ ফুট দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাঁকো। এই ১৫ গ্রামের মানুষের নদী পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা এই বাঁশের সাঁকোটি। তবে বর্ষা মৌসুমে আর সাঁকোটি ব্যবহার করা যায় না। তখন নৌকা দিয়ে পার হতে হয় এই নদী। 

রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পরমেশপুর ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীর একপার থেকে অন্যপারের দূরত্ব প্রায় এক হাজার ফুট। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় আড়াআড়িভাবে বাঁশের বাতা দিয়ে ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। ভোর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঘাট দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। নদীর পূর্বপারে পরমেশপুর গ্রামের কিছু অংশ, গড়নুরপুর, ইটুয়া, তেরমাইল, দশমাইল, নশিপুর গ্রাম। রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। নদীপাড়ের সঙ্গে লাগোয়া আশ্রমপাড়া। আর পশ্চিমে পরমেশপুর গ্রাম, ইশ্বরগ্রাম, ফুলতলা, মোল্লাপাড়া, মুটুনি, ডাঙ্গাপাড়া, ফেফসাডাঙ্গা গ্রাম। 

পশ্চিমপাড়ের সঙ্গে লাগোয়া পরমেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব গ্রামের ১৫  হাজারেরও বেশি মানুষ ঘাট দিয়ে চলাচল করে। বর্ষাকালে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। সাঁকো পার হতে প্রায়শই ঘটে দুর্ঘটনা। পরমেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিমল চন্দ্র রায় বলেন, ঘাটের পূর্বপাড়ের মানুষকে যদি উপজেলায় যেতে হয় তাহলে কান্তনগর দশমাইল, কান্তনগর মোড় হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। সেতুটি হলে ৬ কিলোমিটার রাস্তা কমবে। আবার পূর্বপাড়ের মানুষকে দিনাজপুর জেলাশহর কিংবা সৈয়দপুর, বীরগঞ্জ যেতে হলে ১৬ থেকে ১৮ কিলোমিটার যেতে হয়। সেতু হলে পূর্বপাড়ের মানুষেরও রাস্তা কমবে ৮ কিলোমিটার।

দশমাইল এলাকায় সুবল চন্দ্র রায় বলেন, দশকের পর দশক পার হয়ে গেলেও এখানে কোনো সেতু হয়নি। বিগত সরকারের এমপি সাহেবকে অনেকবার বলেছি, উনি আশ্বাস দিলেও আর সেতু হয়নি। ভোট আসে ভোট যায় কিন্তু সেতু আর হয় না। পরমেশপুর গ্রামের নবদ্বীপ কুমার বলেন, আমাদের গ্রামের আশ্রম পাড়ায় ৮০টি পরিবারের বসবাস। এ গ্রামের মানুষের সেতু না থাকায় ভোগান্তি বলে বোঝানো যাবে না। দ্রুত একটা রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার উপায় নাই। আমরা যারা কৃষক আছি তাদের জন্য সেতুটা খুব জরুরি। উৎপাদিত কৃষিপণ্য দিনাজপুর কিংবা রামডুবির হাট নিয়ে যেতে অনেক বেশি পরিবহণ খরচ পড়ে।

এ ব্যাপারে কাহারোল উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফিরোজ আহমেদ জানান, ঢেপা নদীর পরমেশপুর একটি গুরুত্বপুর্ণ ঘাট। এখানে নদীর দুই পাশের পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু না হওয়ায় বর্ষকালে নৌকা, আর শুস্ক মৌসুমে বাঁশের সাকো দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হন। তিনি বলেন, এ ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দরপত্র আহবান করা হতে পারে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২১ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ১০:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit