স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডিউটির তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করতে দুই হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্যের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত’শ টাকা করে উৎকোচ আদায়ের খবর লোকসমাজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার জেলা কমান্ড্যান্টসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কয়েকটি ইউনিয়নের সদস্য বাছাই করা হয়েছে। তবে জেলা কমান্ড্যান্ট সনজয় কুমার সাহা কড়া নির্দেশনা দেন প্রশিক্ষন সনদ ছাড়া কাউকে ডিউটিতে অন্তর্ভূক্ত না করতে। ফলে প্রশিক্ষণ বিহীন সদস্যরা ডিউটির জন্য উৎকোচ দিয়ে পড়েছে এখন মহা বিপাকে।
জানাযায়, আগামি ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনিরামপুর মোট ১৬৫ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি কেন্দ্রসমুহে মোট দুই হাজার ২০ জন আনসার ও ভিডিপি (পুরুষ-মহিলা) সদস্য নিয়োজিত করা হবে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতি সদস্যের জন্য এবার বরাদ্দ রয়েছে তিন হাজার দুই’শ টাকা। ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসের প্রশিক্ষক(টিআই) ফারুক হোসেন একমাস আগে থেকে সদস্যদের নামের তালিকা প্রস্তুত শুরু করেন।
অভিযোগ রয়েছে ফারুক হোসেন ভোটের ডিউটির তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করতে সদস্যদের কাছ থেকে উৎকোচের টাকা আদায়ের জন্য আবুল হোসেন, মোশাররফ হোসেন, আশরাফ হোসেন, রাহাত আলী, রবিউল ইসলাম, আবুল কালাম, কামাল হোসেন, আব্দুল মান্নান, লাভলী ইয়াসমিন সহ উপজেলার মোট ৯০ জন কমান্ডারকে দায়িত্ব দেন। আর এ সব কমান্ডাররা প্রতি সদস্যদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত’শ টাকা করে আদায় করেন। প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন প্রতি গ্রুপের(১২ জন) নাম চুড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে কমান্ডারদের কাছ থেকে চার হাজার করে আদায় করেন। সে ক্ষেত্রে আদায়কৃত টাকার পরিমান হয় ১০ লক্ষাধীক টাকা। এ ব্যাপারে ২৭ এপ্রিল লোকসমাজসহ বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমে বস্তনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।
২৭ এপ্রিল জেলা কমান্ড্যান্ট সনজয় কুমার সাহাসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা এসে মনিরামপুর সদর সহ কয়েকটি ইউনিয়নের সদস্য অন্তর্ভূক্ত বাছাই প্রক্রীয়া প্রত্যক্ষ করেন। এসময় জেলা কমান্ড্যান্ট কড়া নির্দেশনা দেন প্রশিক্ষন সনদ ছাড়া কাউকে ডিউটিতে অন্তর্ভূক্ত না করতে। ফলে প্রশিক্ষণ বিহীন সদস্যদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায় করা নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছে ইউনিয়ন কমান্ডাররা এবং টিআই ফারুক হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক কমান্ডার অভিযোগ করেন উৎকোচ আদায়ের প্রধান পৃষ্ঠপোষক টিআই ফারুক হোসেন সব ইউনিয়ন কমান্ডারদের ডেকে শাসিয়েছেন সাংবাদিকদের কাছে অনিয়মের কোনপ্রকার তথ্য না দিতে।
ফলে উৎকোচের ব্যাপারে এখন আর মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেননা কমান্ডাররা। তবে বরাবরের ন্যায় এবারও প্রশিক্ষক(টিআই) ফারুক হোসেন এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। জেলা সার্কেল অ্যাডজেুট্যান্ট মহব্বত আলী মোড়ল জানান, প্রশিক্ষন সনদ দেখে সব সদস্যকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এর কোন ব্যত্যয় বরদাশত করা হবেনা। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় প্রশিক্ষন সনদ যাচাই বাছাই করেই সদস্যদের এ নির্বাচনে অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে।
কিউএনবি/আয়শা/৩০ এপ্রিল ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:১৪