মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন

সর্বোত্তম সদকা সম্পর্কে মহানবী (সা.) যা বলেছেন

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২২৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : সৃষ্টিগতভাবে মানুষ ধনী-গরিব দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত। ধনীদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, ‘তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে।’ (সুরা : জারিআত, আয়াত : ১৯)

সুতরাং ব্যক্তি যত সম্পদশালীই হোক না, সম্পদ তার একার নয়; তার সম্পদে অসহায় মানুষেরও অংশ আছে।

সদকা কাকে বলে?

আরবি সদকাহ শব্দের অর্থ দান-খয়রাত ও জাকাত।

আর পরিভাষায় সদকা বলা হয় ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে সম্পদ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অসহায় ও দীন-দুঃখীদের জন্য ব্যয় করা হয় তাকে সদকা ও খয়রাত বলে। (সংক্ষিপ্ত মাআরেফুল কোরআন, পৃষ্ঠা ১৪২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তুমি (আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে) যা কিছু ব্যয় করো তা-ই সদকা। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে নলাটি তুলে দাও সেটাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৪)

কোরআন-হাদিসে সদকা  

কোরআনের বহু স্থানে আল্লাহ তাআলা সদকার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেমন আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করো। সেদিনের পূর্বে, যে দিন থাকবে না ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুবান্ধব এবং কোনো সুপারিশ। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫৪)
রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো। একটি খেজুর সদকা করে হলেও।

(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪১৭)
উত্তম সদকা কোনটি

রাসুল (সা.)-কে  সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কী সদকা করব? জবাবে আল্লাহ আয়াত নাজিল করলেন, ‘হে নবী! বলে দিন, যা (তোমাদের প্রয়োজনের) অতিরিক্ত থাকে।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৯)

হাকিম ইবনে হিজাম (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, সর্বোত্তম সদকা হলো, যা নিজের সচ্ছলতা বজায় রেখে করা হয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০৩৪)

তবে দান করার সময় অবশ্যই উত্তম বস্তুগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে উৎপন্ন করি, তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করো। নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয়ের ইচ্ছা কোরো না।

কেননা তোমরা তা কখনোই গ্রহণ করবে না। তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নাও; তাহলে জেনে রেখো–আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৬৭)
এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, সদকা করতে হবে উৎকৃষ্ট ও সেরা বস্তু।  নিকৃষ্ট বস্তু সদকা করা যথাবিধি নয়।

উত্তম দানে সাহাবিদের প্রতিযোগিতা

পবিত্র কোরআনে উত্তম বস্তু দান করার নির্দেশ দিলে সাহাবিদের মধ্যে নিজের সর্বোত্তম সম্পদ দানের প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, সে সময়ে মদিনার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন আবু তালহা (রা.)। মসজিদ-ই-নববীর কাছে তাঁর একটি বাগান ছিল। নাম ‘বারিহা’। স্বীয় বিষয়-সম্পত্তির মধ্যে এ বাগানটি ছিল তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। রাসুল (সা.) প্রায়ই যেতেন সে বাগানে। বাগানে অবস্থিত কূপ থেকে মিষ্টি পানি পান করতেন। কোরআনে উত্তম বস্তু দানের নির্দেশ দিলে তিনি নবীজি (সা.)-এর দরবারে এসে বললেন, আল্লাহর রাসুল! আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ বাহিরা আল্লাহর পথে সদকা করে দিলাম। নবীজি তাঁকে বাহ! বাহ! দিলেন। এবং বললেন, তোমার এই বাগান তুমি তোমার স্বজনদের মধ্যে বণ্টন করে দাও। রাসুলের নির্দেশানুযায়ী তিনি সে বাগান আত্মীয়-স্বজন ও তাঁর চাচাতো ভাইদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪৬১)

মাআরেফুল কোরআনে আরেকটি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লিখিত নির্দেশ আসার পর জায়েদ বিন হারেসা (রা.) দেখলেন, বাহনের ঘোড়া তাঁর সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। তিনি তা নিয়েই উপস্থিত হলেন নবীজির দরবারে। নবীজি খুশি মনে তা গ্রহণ করলেন এবং ঘোড়াটি জায়েদ (রা.)-এর ছেলে উসামাকে দিয়ে দিলেন। নিজের সম্পদ নিজের ঘরে ফিরে যেতে দেখে তিনি মনঃক্ষুণ্ণ।

নবীজি (সা.) তাঁকে কাছে ডেকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, মনঃক্ষুণ্ণ হয়ো না জায়েদ! তোমার সদকা কবুল হয়েছে। (সংক্ষিপ্ত মাআরেফুল কোরআন, পৃষ্ঠা ১৮৬)

কিউএনবি/অনিমা/৩০ নভেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৩:৩২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit