ডেস্ক নিউজ : দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সময় থাকতে পদত্যাগ করুন। আগামী তিন মাস নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অনেকবার পার পেয়েছেন, এবার আর পার পাবেন না। দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানুষ কিন্তু ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদদের চিনবে না। তাই পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করুন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। যাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় কে কত অস্ত্র নিয়ে আসল ওইটা কিন্তু তারা দেখবে না। জনগণের যে উত্তাল আন্দোলনের ঢেউ, সেই ঢেউয়ের কাছ কোনো আগ্নেয়াস্ত্র টিকতে পারে না। সরকারের তৈরি করা কোনো প্রাইভেট বাহিনীও টিকতে পারবে না।
এর আগে, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আগামীকালের সমাবেশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হচ্ছে গুণ্ডাদের নেতা, সন্ত্রাসীদের নেতা। সারা বাংলাদেশে যারা সন্ত্রাস পরিপালন করছে, তাদেরকেই তিনি তোষণ করছেন।
বিএনপিকে ওবায়দুল কাদেরের ৩৬ দিনের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে দলটির এই মুখপাত্র বলেন, ওবায়দুল কাদেরের এই কথার মধ্যে আছে মানবতাহীন আক্রমণাত্মক সন্ত্রাসীর মতো কথা। বিরোধী দলের কি সভা-সমাবেশ করার অধিকার নেই? ওবায়দুল কাদেরের কথা তো গেস্টাপো বাহিনীর কথা, তার কথা তো নাৎসিদের কথা। এই ৩৬ দিন পর উনি কি করবেন? তারপর কি উনি উনার দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেবেন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে? এটাই তো বোঝা যায় কাদেরের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
আইনমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ১/১১-তে যখন মাইনাস ফর্মুলার প্রচেষ্টা চলেছে, যখন সমস্ত প্রতিষ্ঠান ভাঙার প্রচেষ্টা চলেছে, সেই সময়ে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে সবচাইতে বেশি যিনি কাজ করেছেন- তিনি দুদকের আইনজীবী এই অবৈধ আইনমন্ত্রী। তাকে শেখ হাসিনা পছন্দ করেছেন কারণ এই লোকটা সুচারুভাবে কিভাবে মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হয় সেটা খুব ভালো করে জানে।
তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় আইনমন্ত্রী এই ব্যক্তিটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর টাইপের একজন ব্যক্তি। নির্দয় একজন ব্যক্তি। এই আইনমন্ত্রীর কোনো বিবেক নেই, কোনো মানবতাবোধ নেই, এই আইনমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাস একজন পেটুয়া হিসেবে শেখ হাসিনার নিপীড়নের যে নীলনকশা সেই নীলনকশার একজন বাস্তবায়নকারী হিসেবে তিনি কাজ করছেন। শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করার জন্য উনি কি চান তার মুখের দিকে চেয়েই তো দেশের আইন কানুন চলছে।
‘দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো কাজ হচ্ছে না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি- দেশে এখন বাকশালী আইন চলছে, নৌকা মার্কা আইন চলছে, বর্তমান আইনের সাথে প্রচলিত আইনের, ন্যায়বিচারের আইনের কোনো মিল নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন ধরনের সভা-সমাবেশে বলেছি বাংলাদেশের এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে বিরোধী কোনো নেতা অসুস্থ হয়ে পড়লে দেশের বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার কথা। পুতিন সরকার তাদের একজন বিরোধী নেতাকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে পাঠিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা তো তিনি নিজেই প্রমাণ, তিনি অভিযুক্ত থেকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তার মামলা যখন চলছিল তখন তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন, নাসিম সাহেব গেছেন, মায়া গেছেন, শেখ সেলিম গেছেন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে।
এ সময় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার, নিলুফা ইয়াসমিন মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কিউএনবি/অনিমা/২৮.০৯.২০২৩/দুপুর ২:৫১