আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর ডোমারে জোড়াবাড়ী সিদ্দীকিয়া দ্বি-মূখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য হাফেজ মোঃ মোক্তারুল ইসলাম গত ৬ সেপ্টেম্বর নীলফামারী জেলা প্রশাসক বরাবরের সুপারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উক্ত মাদ্রাসায় সহকারী সুপার, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে ৩ জন লোক নেয়ার জন্য নিয়োগর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। উল্লেখিত পদে অনেকে নিয়ম মোতাবেক আবেদন পত্র জমা করেন। মাদ্রাসার সুপার এবিএম মকবুল হোসাইন নিয়ম নিতিকে তোয়াক্কা না করে একই পদে চাকুরী প্রত্যাশী একাধীক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ বাণ্যিজ্য সহ দূর্নীতি করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে তাল বাহানা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
৮ জানুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষায় ওই মাদ্রাসার নাম উল্ল্যেখ থাকলেও সুপার প্রার্থীদের ফোন করে গোপনে সৈয়দপুর পোড়ার হাট আলিম মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে ডিজি প্রতিনিধি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার কোন সদুত্তোর দিতে না পাড়ায় অনিয়মের কারণে কর্মকর্তাগণ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষনা করেন। পরে ১২ জানুয়ারি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ হলেও সুকৌশলে সুপার ১০ তারিখে নোটিশের মাধ্যমে তা বন্ধ করে দেন।
চাকুরী প্রত্যাশী প্রার্থীদের কাছ থেকে চাকুরী দেয়ার নাম করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে নিয়োমিত মাদ্রাসায় উপস্থিত না হয়ে তালবাহানা করায় চাকুরী প্রত্যশী প্রার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ উত্তেজনা বিরাজ করছে। সহকারী সুপার পদে চাকুরী প্রত্যাশী আব্দুর রহমান জানান, তার কাছে চাকুরী দেয়ার নাম করে ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সুপার। চাকুরী না পেলে টাকা ফেরতের দাবী জানান তিনি।
অপরদিকে আয়া পদে চাকুরী প্রত্যাশী মারুফার কাছে ১ লক্ষ, নিরাপত্তা কর্মী পদের জন্য জমি দাতা সদস্যরে প্রার্থী নুরুজ্জামানের কাছে ২ লক্ষ টাকা সুপার মকবুল ও তার সহযোগিরা হাতিয়ে নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা প্রদানে গরিমশি করছে বলে প্রার্থীরা জানান। তারা আরো জানান, একই পদে একাধীক ব্যক্তির কাছে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের নামে তামাশা শুরু করে আমাদের হয়রানি করছে, সেই থেকে সুপার আর মাদ্রাসায় আসে না, কবে পরিক্ষা হবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
দূর্নীতির অভিযোগ তুলে সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য প্রভাষক এনছানুল হক বলেন, সুপার দিগত দিনে ইউএনও ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তলন করায় কর্তৃপক্ষ সাময়িক ভাবে তাকে বরখাস্ত করেন। চাকুরী জীবনের শেষ সময়ে এসে তিনি আবারো চাকুরী প্রত্যাশী প্রার্থীদের কাছে নিয়োগের নামে টাকা হাতিয়ে নিয়ে তালহাহানা করছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাকেরিনা বেগম জানান, বিধি মোতাবে যে ভাবে নিয়োগ হওয়ার কথা সে ভাবে না হওয়ায় তা স্থগিত করা হয়েছে। টাকা লেন দেনের বিষয়টি আমি শুনেছি, তদন্ত করে প্রমানিত হলে সুপারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার মকবুল হোসাইন টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বিকার করেন বলেন, আমি কারো কাছে কোন টাকা পয়সা নেইনি, আমার নামে মানুষ মিথ্যা বদনাম রটাচ্ছে বলে ফোন কেটে দেন। দূর্নীতি বন্ধ করে সুস্ট ভাবে নিয়োগ পরিক্ষা সম্পন্ন করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন চাকুরী প্রত্যাশী প্রার্থীরা।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:৫৮