এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় ওএমএসের পণ্য চাল-আটা কিনতে ভোর থেকেই লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষায় থাকেন ক্রেতারা। খোলাবাজারের (ওএমএস) পণ্য পরিবেশকের (ডিলার) দোকান খোলার কথা সকাল ৯টায়, কিন্তু এই পণ্য কেনার জন্য নিন্ম আয়ের অনেকে সকাল ৬টা থেকে এসে লাইনে দাড়িয়ে থাকেন। চাহিদার তুলনায় ক্রেতা বেশি থাকায় শেষ সময়ে খালি হাতে ফিরে যাওয়ার শঙ্কায় তারা এত আগে এসেছেন। শনিবার চৌগাছা পৌর শহরের খোলাবাজারের চাল ও আটা বিক্রিয় কেন্দ্রে এমন ভিড়ের চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায় “খ” শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে চৌগাছায় প্রতিদিন বিক্রি করার জন্য তিনজন ডিলারকে তিন হাজার কেজি চাল ও তিন শ কেজি আটা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এগুলো চারজন ডিলার সমান ভাগ করে চার স্থানে বিক্রি করছেন। শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে এত বেশি ভিড় যে, ডিলারেরা কাউকে শুধুই চাল আবার কাউকে শুধুই আটা দিয়ে ভিড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এতেও তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্য দিকে ক্রেতারাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ সময় অনেকে অভিযোগ করে বলেন,(ওএমএস) চাল-আটা কিনতে ভোর থেকেই লাইনে দাড়িয়ে থেকেও অনেককে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
শনিবার সকালে শহরের হাইস্কুল রোডে খোলাবাজারের পণ্য বিক্রয় কেন্দ্রে গেলে দেখা যায়, তখনো ডিলার দোকান খুলতে পারেননি। তবে তার দোকানের দুই পাশ ধরে নারী ও পুরুষ ও শিশুরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। আরও অনেকেই এসে ভিড় জমাচ্ছেন। চাল কিনতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, এখানে ভোর ৪টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারে এক কেজি মোটা চালের দাম ৪২ থেকে ৪৮ টাকা। এক কেজি আটা ৩৮ থেকে ৪২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সে জন্য কম দামে এখানে চাল ও আটা কিনতে এসেছি। আরেক ক্রেতা বলেন, আমি এখানে এসেছি ভোর ৬টার দিকে। এসে দেখি কয়েকজন লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ কেউ তাদের ছোট শিশুকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য কাজ সারতে গেছেন। কারণ, দেরি করে এলে শেষ সময়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০ জানুয়ারি থেকে পৌর এলাকার চারজন ডিলারের মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি হচ্ছে।শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন এই খোলা বাজার থেকে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ক্রেতারা প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি আটা ১৮ টাকা দরে এক দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আটা কিনতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। চৌগাছা খাদ্যগুদামের সামনের খোলাবাজারের ডিলার মিলার সিরাজ হোসেন বিশ্বাস বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর বরাদ্দ কম। অথচ ক্রেতার ভিড় বেশি, যা সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বরাদ্দ বাড়িয়ে অন্তত গত বছরের সমপরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হলে কিছুটা সামাল দেওয়া সম্ভব হতো। চৌগাছা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান লিটন বলেন, টিসিবির পণ্য কিনতে প্রচ- ভিড়ের বিষয়টি আমি নিজেই সরেজমিন দেখেছি। তবে বরাদ্দ কম বা বেশি করার ক্ষমতা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আমরা জানাব।
কিউএনবি/আয়শা/৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৩৮