শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

রেকর্ডের বন্যা বইয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৬ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম ইনিংস শেষেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল জয়টা। কেন? সৌম্য সরকার আর সাইফ হাসানের ১৭৬ রানের রেকর্ডভাঙা জুটিটা শেষেই যে উইকেটের আসল রূপের দেখা মিলছিল। বল আসছিল থেমে, যা খেলতে বাংলাদেশেরই হাঁসফাঁস লাগছিল। সে উইকেটে সফরকারী উইন্ডিজ যে নাকানিচুবানি খাবে, তা নিশ্চিতই ছিল। সেটা হলো শেষমেশ। ২৯৬ রানের জবাবে উইন্ডিজ ১১৭ রানেই অলআউট হলো। ১৭৯ রানের রেকর্ড জয় নিয়ে নিশ্চিত করে ফেলেছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ও।

তাদের বিদায়ের পরই বাংলাদেশের রানের গতি কমে যায়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫০ রান তুলতে তাওহীদ হৃদয় আর নাজমুল হোসেন শান্ত খেলে ফেলেন ৭০ বল। ৪৪ বলে ২৮ রান করা হৃদয় বিদায় নিলে ভাঙে সে জুটি। এরপর ৫৫ বলে ৪৪ রান করা শান্তও বিদায় নেন। 

রিশাদ হোসেনকে এরপর উইকেটে আনা হয়। উদ্দেশ্য ছিল চল্লিশ ওভার থেকেই চড়াও হওয়ার। তবে সে উদ্দেশ্যটা সফল হয়নি দলের। ৪৬তম ওভারে আকিল তাকে তো বিদায় করেনই, সঙ্গে বিদায় করেন মাহিদুল অঙ্কন আর নাসুম আহমেদকেও। ৬ বলে ৩ উইকেট খুইয়ে বাংলাদেশ বিপাকেই পড়ে গিয়েছিল। ৩০০ কে মনে হচ্ছিল তখন অনেক দূরের পথ।

তবে শেষে নুরুল হাসান সোহান খেলেন ক্যামিও। ৮ বলে ১৬ রানের ইনিংসেই বাংলাদেশ ৩০০র কাছাকাছি পৌঁছায়। তাকে সঙ্গ দেন মিরাজ, তিনি ১৭ বলে তোলেন ১৭ রান। আউট হন শেষ বলে। আর তাতেই ৮ উইকেট খুইয়ে ২৯৬ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।

জবাবে উইন্ডিজ চাপে ছিল শুরু থেকেই। ২৯৭ রানের বিশাল লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে। এই লক্ষ্য তাড়া করতে হলে ভালো শুরু প্রয়োজন ছিল সফরকারীদের। তবে তাদের সেটা পেতে দেননি নাসুম আহমেদ। শুরুতেই তুলে নিয়েছেন উইকেট। উইকেটের সম্ভাবনা বাংলাদেশ আগেই তৈরি করেছিল। তৃতীয় ওভারে ব্রেন্ডন কিংয়ের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। 

তবে উইন্ডিজ রিভিউ নেয় সঙ্গে সঙ্গে। সেখানে দেখা যায় বল প্যাডে লেগেছে ব্যাটে লাগার পর। কিং টিকে যান তাতে। ওপাশে থাকা এথানেজ অবশ্য টিকতে পারলেন না। নাসুমের করা পঞ্চম ওভারে এলবিডব্লিউর শিকার বনে যান তিনি। ১৬ রানে প্রথম উইকেটের বিদায় হয় উইন্ডিজের।

নাসুম পরের ওভারে আরও একবার আঘাত হানেন উইন্ডিজ শিবিরে। এবার তার শিকার বনে যান আকিম আগুস্তে। এবারও এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। শুরুতে অবশ্য আম্পায়ার সম্মত হননি। রিভিউ নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটটা শিকার করতে হয় নাসুমকে, বাংলাদেশকেও।

বাংলাদেশের তৃতীয় শিকারটাও নাসুমের হাত ধরেই। ২ চার আর ১ ছক্কা হাঁকানো ব্রেন্ডন কিংকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান নাসুম। ৩৫ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে বসে উইন্ডিজ। দ্বিতীয় ম্যাচে যখন ১৩৩ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে বসল উইন্ডিজ, তখন শেই হোপ তাদের আশা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৬৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে তিনি উইন্ডিজকে নিয়ে যান সুপার ওভারে। সেখানে ১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।

তবে আজ ২৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা উইন্ডিজের আশা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। শুরু থেকেই স্পিনের সামনে হাঁসফাঁস করছিলেন। শেষমেশ তানভীর ইসলামের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। উইন্ডিজ ৪৬ রানে খুইয়ে বসে ৪ উইকেট।

এরপর দৃশ্যপটে আসেন রিশাদ হোসেন। পুরো সিরিজজুড়ে আলো ছড়িয়েছেন ব্যাটে বলে। শেষ দিনে ব্যাটে না পারলেও আসল দায়িত্ব ব্যাটিংয়ে ঠিকই মুন্সিয়ানা দেখালেন। তার শুরুর ৩ ওভারে অবশ্য ছিলেন বেশ খরুচে। ওভারপ্রতি ৬ করে রান দিয়ে গেছেন তিনি। তবে তার ওপর চতুর্থ ওভারেও ভরসা রেখেছিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।

সে ভরসার প্রতিদানটা তিনি দিলেন এবার। অফ স্টাম্পের চ্যানেলে ফুলার লেন্থের ডেলিভারি করেছিলেন। এরপর শর্ট মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে সীমানাছাড়া করতে চেয়েছিলেন শেরফান রাদারফোর্ড। পারলেন না, ক্যাচ দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে।

দুই বল পর আবারও আঘাত হানেন রিশাদ। এবার তিনি ফেরান রস্টন চেসকে। লং অনের ওপর দিয়ে সীমানাছাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড অনে থাকা নাসুম আহমেদের হাতে। ৬৩ রানেই ৬ উইকেট খুইয়ে হারের খুব কাছে চলে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সেখান থেকে ফিরতে হলে অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হতো। তবে উইন্ডিজের কোনো ব্যাটার সেটা করতে পারেননি। শেষ চার উইকেটের দুটো নেন মিরাজ, আর বাকি দুটো ভাগাভাগি করেন রিশাদ আর তানভীর মিলে। তাতেই ১৭৯ রানের বিশাল এক জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৩ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ৮:০০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit