শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

প্রিয়জনের অভিমান ভাঙাতে ইসলামের উৎসাহ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : তবে অভিমান যেন সম্পর্ক নষ্ট না করে সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। ইসলাম মানুষের ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতিকে মূল্য দিলেও তা যখন সম্পর্কচ্ছেদের প্রশ্ন হয়ে ওঠে তাকে প্রশ্রয় দিতে বারণ করে। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,কোনো মুসলমানের জন্য বৈধ নয় যে সে তার ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সময় সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে থাকবে। (বুখারি, হাদিস ৬০৭৬)

এসব ক্ষেত্রে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক হাদিস বিশারদরা বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানের সঙ্গে কথা বন্ধ করার ব্যাপারে তিন দিনের অবকাশ দিয়েছেন, যেন মানুষ তার রাগ, ক্ষোভ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পায়। এখানে হাদিসের শিক্ষা হলো, মানুষের আবেগকে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে তা যদি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে সংকট তৈরি করে তাহলে তা বর্জন করতে হবে; বিশেষত যখন আবেগ সৃষ্টির পেছনে কোনো নৈতিক ভিত্তি ও শরয়ি কারণ না থাকে।

অভিমান যেন বিদ্বেষে পরিণত না হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। মান-অভিমান থেকে যে দূরত্ব তৈরি হয়, তা যেন পরস্পরের মনে বিদ্বেষ তৈরি করতে না পারে। কেননা রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে বান্দার আমল পেশ করা হয়। আল্লাহ সব মুসলিমকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু যে ব্যক্তির সঙ্গে তার ভাইয়ের মধ্যে বিদ্বেষ ছিল, তাদের ছেড়ে দাও, যতক্ষণ না তারা মিলিত হয়।’ (মুসলিম ২৫৬৫) হাসিমুখে মানুষ একে অন্যের সাথে কথা বলবে সেটার প্রতি হাদিসে উৎসাহিত করা হয়েছে। মান-অভিমান আড়াল করে হাসিমুখে কথা বলাই ইসলামের নির্দেশনা। রসুলুল্লাহ (স.) হাসিমুখে কথা বলাকে সদকা আখ্যা দিয়ে বলেন,

প্রতিটি ভালো কাজই সদকাস্বরূপ। তোমার ভাইয়ের সঙ্গে সহাস্য দেখাসাক্ষাৎ করা এবং তোমার বালতির পানি দিয়ে তোমার ভাইয়ের পাত্র ভর্তি করে দেয়াও ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত। (তিরমিজি ১৯৭০)

অভিমান যেন সম্পর্কচ্ছেদে রূপ না নেয়

সম্পর্কচ্ছেদ কোনো কোনো মানুষের জন্য মৃত্যু তুল্য। প্রিয়জনের সঙ্গে বিচ্ছেদ কখনো কখনো মানুষকে অস্বাভাবিক জীবন, এমনকি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। রসুলুল্লাহ (স.) এ জন্য দীর্ঘ বিচ্ছেদের ব্যাপারে সতর্ক করে বলেন, ‘যে তার ভাইয়ের সঙ্গে এক বছর সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখল, সে যেন তাকে হত্যা করল।’ (আবু দাউদ ৪৯১৫)

হাদিসে যে অভিমান ভাঙে তাকে উত্তম বলা হয়েছে। রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে সে তার ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে দুজনের দেখা হলেও দুজন দুদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখবে। তাদের মধ্যে যে আগে সালাম দেবে সে-ই উত্তম ব্যক্তি।’ (বুখারি ৬০৭৭)
তবে দীনি কারণে কথা বন্ধ রাখা বৈধ। আল্লামা ইবনুল আরাবি মালেকি (রহ.) বলেন, ‘দীনের ব্যাপারে কাউকে সতর্ক করতে অথবা অন্যদের পাপী ব্যক্তির পাপ সম্পর্কে সতর্ক করতে যদি তার সঙ্গে কথা বন্ধ রাখা হয়, তাহলে তা বৈধ।’যেমন কেউ কোনো পাপ কাজ করল অথবা বিদআতে লিপ্ত হলো তখন প্রয়োজন পড়লে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করা যেতে পারে।

কেননা রসুলুল্লাহ (সা.) তাবুক যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে পড়া তিন সাহাবির সঙ্গে ৫০ দিন কথা বন্ধ রাখার অনুমতি দেন। এরপর আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করেন এবং সাহাবিরা তাদের সঙ্গে আগের মতোই সদ্ব্যবহার করেন। (আরিদাতুল আহওয়াজি ৮/৯১)

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৯ অক্টোবর ২০২৪,/রাত ১১:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit