মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন

বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বিস্তীর্ণ জনপদ, থামছে না বৃষ্টিও

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : নোয়াখালী থেকে বন্যার পানি ঢুকে লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণ জনপদ ডুবে গেছে। এরসঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে পুরো জেলায়। এতে সময় যত যাচ্ছে বন্যার পরিস্থিতি ততই অবনতি হচ্ছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয়ণ কেন্দ্রে উঠেছেন। আবার অনেকের গন্তব্য উজানে স্বজনদের বাড়ি। 

এরমধ্যে অনেকেই আছেন যাদের গন্তব্য অজানা। অনেকে আবার চকির ওপর রান্নাবান্না করেই ঘরেই অবস্থান নিয়েছেন। কোমর পানিতে যাতায়াতে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া সুপেয় পানিরও অভাব দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। 

বন্যা কবলিত লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন ও বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ও ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে এসব জানা গেছে। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে রয়েছে গৃহস্থরা। 
রোববার (২৫ আগস্ট) রাত পর্যন্ত কোথাও বন্যার পানি কমেনি। পুরো জেলায় বৃষ্টিও অব্যাহত ছিল। পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকতে শুরু করে। শনিবার বিকেল থেকে পানির চাপ বেড়ে যায়। এর মধ্যে শনিবার রাত থেকে লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, উত্তর জয়পুর, বাঙ্গাখাঁ, মান্দারী, তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন, শাকচর ও চররুহিতা ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৪-৫ ফুট পানিতে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর জেলা শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী খালসহ ওয়াপদা খালগুলোতে পানি উপচে পড়ছে। এতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লামচরী, মধ্য বাঞ্চানগর, শিশু পার্ক এলাকা ও লাহারকান্দি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। এসব এলাকার ১২ হাজার ৭৫০ জন মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

তবে অধিকাংশ মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে উঠেছে। আবার অনেকেই নিজের ঘরে চৌকি বা খাটের ওপর রান্না-বান্না করছেন বলে জানা গেছে। 

ভারত থেকে আসা পানিতে নোয়াখালী ও ফেনীতে যখন বন্যা তখন লক্ষ্মীপুরে প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ। এ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বহু মানুষ প্রায় ১ মাস ধরে পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। সদর, রায়পুর, রামগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল মানুষ। সবশেষ গত শুক্রবার নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়ে। এতে লক্ষ্মীপুরও এখন বন্যা কবলিত। 

 জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়,  জেলার ৫টি উপজেলায় ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪২০ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫৫ মেট্রিক টন জিআর চাল ও ১০ লাখ নগদ টাকা (জিআর ক্যাশ) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া পৃথক দুটি চিঠিতে চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেন। বরাদ্দ চালের মধ্যে জেলার সদর উপজেলায় ৩০ মেট্রিক টন, রায়পুরে ২৫ মেট্রিক টন, রামগঞ্জে ৫০ মেট্রিক টন, রামগতিতে ২০ মেট্রিক টন ও কমলনগরে ৩০ মেট্রিক টন রয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে প্রত্যেক উপজেলার জন্য দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, নোয়াখালীর বন্যা পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়েছে। এজন্য পানি বেড়ে গেছে। প্রায় ৮ হাজার মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদেরকে শুকনো খাবার বিতরণ করছি। একই সঙ্গে খিচুড়ি রান্না করেও আশ্রয়ণ কেন্দ্রের মানুষদেরকে পরিবেশন করা হচ্ছে। 

কিউএনবি/অনিমা/২৬ অগাস্ট ২০২৪,/বিকাল ৩:৫৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit