সেমিনারে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান, আল্লামা রুমি সোসাইটির উপদেষ্টা সৈয়দ মাহমুদুল হক, অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খানসহ বিভিন্ন ধর্মের বিশেষজ্ঞগণ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে ‘প্রবন্ধ সংকলন, আন্তর্জাতিক রুমি সম্মেলন ২০২২’-শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকের সেমিনারটি খুবই সময়োপযোগী, অর্থবহ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, প্রতিবার জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে আমরা দেখতে পাই, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আন্তঃধর্মীয় সহাবস্থানের ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। মহান মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সমাজজীবনের এমন এক বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা তাই প্রতিনিয়ত অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক শান্তিময় ও সকলের সম্মিলনে সহাবস্থানপূর্ণ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে যিনি আমৃত্যু তাঁর অকৃত্রিম প্রয়াস অব্যাহত রেখেছিলেন, তিনি হলেন বাংলার রুমি সৈয়দ আহমদুল হক। তাঁর জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞালব্ধ কর্মসমূহের মাঝে এ দেশ, সমাজ ও মানুষের মাঝে অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির চেতনাকে কীভাবে কার্যকর ও জাগরুক রাখা যায় তার প্রয়াসই আমরা লক্ষ করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ এবং বাংলার রুমির আন্তঃধর্মীয় চেতনা ধারণ করলে আমরা সম্প্রীতিময় এক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবো। মূল প্রবন্ধে ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, ‘নিজ ধর্মের প্রতি আনুগত্য ও অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল’ এই উপজীব্যকে ধারণ করে যিনি বাংলাদেশে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিকাশে আমৃত্যু নিরন্তর কাজ করে গেছেন, তিনি হলেন বাংলার রুমি সৈয়দ আহমদুল হক। অসাম্প্রদায়িক ও সুফিতাত্ত্বিক পরিবারের ঐতিহ্যিক প্রভাবে বাংলার রুমি একজন দেশপ্রেমিক, সুশিক্ষিত, কর্মবীর ও উদারনৈতিক চিন্তাধারার অধিকারী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি মূলত বাংলাদেশে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির বিকাশে তিনটি পর্যায়ে কাজ করেছেন; প্রথমত, লেখা, রচনা ও গবেষণা এবং এগুলোর প্রকাশনা; দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে তাঁর রুহ আফজা কুটিরে নানা ধর্মের মানুষের জমায়েত, আলোচনা সভা বা সেমিনার আয়োজন ও বক্তব্য উপস্থাপন এবং তৃতীয়ত, সাংগঠনিক কর্মপ্রক্রিয়া তথা আল্লামা রুমি সোসাইটির মাধ্যমে এ বিষয়ে জনমানসে সচেতনতার সৃষ্টি করা। তাঁর রচিত প্রেমবাদ, আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ও সুফিসাহিত্যের অমূল্য সম্পদকে আমাদের জাতীয় জীবনে দেশমাতৃকার বৃহত্তর স্বার্থ সুরক্ষায় কাজে লাগানো আবশ্যক বলে প্রবন্ধকার উল্লেখ করেন। সেমিনারে দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, ধর্মতাত্ত্বিক ও গবেষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
কিউএনবি/অনিমা/০৯.০৯.২০২৩/সকাল ১১.৩১