মহাজাগতিক পরমাত্মা
—————————–
আমি কারো কারো ভাগ্যের রেখা হতে পারি,
হতে পারি কারো অনুভূতি তীব্র হবার যন্ত্র।
আমি হতে পারি দুটি যন্ত্রণাময় হৃদয়ের
উপশমের চিরকালীন মূলমন্ত্র ।
আমি হতে পারি সুখ- কান্না কারো জীবনের,
আমি হতে পারি কাকভোরের স্মৃতি অতীতের।
আমি হতে পারি কারো বেঁচে থাকার উৎস একমাত্র।
আমি হতে পারি মুঠো-মুঠো সবুজ,
পরগাছা ধরা বৃক্ষগাত্র ।
আমি হতে পারি দুটি আত্মার মেলবন্ধন
যারা একা একা একত্রে মিলে থাকে না।
আমি হতে পারি দুটি মানুষের প্রিয় মাধ্যম,
যারা থাকে দূরে দুরে একসাথে কথা বলে না!
আমি হতে পারি গাছ, বৃক্ষ বৃহৎ, হতে পারি তার কান্না,
আমি হতে পারি কোনো গ্রাম্যবধূর
মুঠোচালে চড়া রান্না ।
আমি হতে পারি কারো মুখাগ্নি, কারো শেষকৃত্যের আধার।
আমি হতে পারি ছাই, যার কুল নাই
এ পৃথিবীতে ফিরে আসার !
আমি হতে পারি ফুল, কাটার জ্বালায়
পারে না কেউ যা ছুঁইতে,
আমি হতে পারি মালি, মাটি ছুঁয়ে ছুঁয়ে
গাছের সন্ধি করতে ।
আমি হতে পারি মাঠ , বিরান ভূমি
অথবা শুকনো জলাশয়
আমি হতে পারি কোনো পরিত্যক্ত
কুঠির কিংবা হিমালয় ।
আমি হতে পারি আশা, ভাঙ্গা দুর্দশা
কিছু মানুষের শেষ আশ্রয়
আমি হতে পারি প্রাণ, ক্ষুধিত পাষাণ
যাতনাকে করে সাশ্রয় ।
আমি হতে পারি অলৌকিক কোনো ক্ষমতা
কিংবা সত্তা !
আমি হতে পারি কোনো মহামানবের
মহাজাগতিক পরমাত্মা ।
আজ সংকটে আমি !
আমি সংকটে আজ অবশেষে দেখি
নিজেই নিজেকে বেঁধেছি।
সব হতে গিয়ে এখন আমি আমার আমিকে খুয়েছি !
আমি কখনো কখনো হতে পারি আমি
কখনো কখনো পারি না,
আমি তোমাকে জানি, বিশ্বকে চিনি
আমার আমিকে চিনি না !
আমি সব হতে পারি
শুধু
আমিটাই হতে পারি না
শুধু আমিটাই হতে পারি না ।।
লেখিকাঃ ফারহা মৌরিন মৌ। কবি, প্রচ্ছদ শিল্পী এবং বাচিকশিল্পী। নিয়মিত লেখালিখি, আবৃত্তিচর্চা এবং কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করছেন। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর লেখা বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে।ফারহা মৌরিন মৌ একজন প্রফেসনাল ভয়েস ওভার আর্টিস্টও । তিনি নিয়মিত ইউটিউব, ফেসবুক পেজ, টিভি মিডিয়াতে ভয়েস নিয়ে কাজ করছেন। গল্প, কবিতা লেখালিখি তার ভালোলাগার একটি অন্যতম জায়গা। তার কবিতায়, লেখায় জীবনবোধ, আধ্যাত্বিকতা, বাস্তবতার রূপ দেখতে পাওয়া যায়।
কিউএনবি/নাহিদা/০৬.০৫.২০২৩/ দুপুর ১২.৩৫