বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন

প্রয়াত হলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায়

লুৎফর রহমান : রাজনীতিবিদ ও লেখক।
  • Update Time : শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৩৮ Time View

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এবং লেখক, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মারা গেছেন। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ১৮ জানুয়ারি ১৯৫১ জন্ম গ্রহণে করেন। প্রয়াত হলেন ১০ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ছিলেন একজন কথাসাহিত্যিক ও সাহিত্যসমালোচক। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে তাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুর রাহমানেরর উপর তার উল্লেখযোগ্য গবেষণা কর্ম রয়েছে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সিলেট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আমীরুল ইসলাম এবং মাতা রাবেয়া খাতুন। তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সিলেট এমসি কলেজ থেকে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটস-এর কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি করেন।

পেশাগত জীবনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর তিনি ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন।

শিক্ষাবিদ পরিচয় ছাড়াও সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বিচরণ ছিল বাংলা সাহিত্য ও মুক্ত চিন্তার জগতে। লেখক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন ৪৩ বছর। তিনি সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়টির ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন।

সত্তরের দশকে বাংলার সাহিত্যে বিচরণ শুরু হয় এই শিক্ষক ও লেখকের। এরপর দেড় দশকের দীর্ঘ স্বেচ্ছা বিরতি দিয়েছিলেন। তবে আশির দশকে আবার একেবারে ভিন্ন রূপে সাহিত্যে পদচারণা শুরু করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এবার লেখালেখির জগতে বিশেষত ‘গল্পে’ নিয়মিত হন এই লেখক।

সাহিত্য জগতে তার সহকর্মী ও বন্ধুরা জানান, এবার প্রথাগত গল্পধারার বাইরে বেরিয়ে এসে এক ভিন্ন শৈলীতে লিখতে শুরু করেন তিনি। অত্যন্ত, সহজ, সাবলীল ভাষায় লেখা তার গল্পগুলো সবসময় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে- বিষয়টি এমন নয়। কিন্তু তাঁর লিখনীতে নিগূঢ় তত্ব উম্মোচিত হয়েছে।
কোনো দশকওয়ারি বিভাজনে না পড়েও বাংলা গল্প সাহিত্যের প্রথম সারির একজন লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

তাঁর লেখা অন্যতম গল্পগ্রন্থসমূহের মধ্যে স্বনিরবাচিত শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৯৪),থাকা না থাকার গল্প (১৯৯৫),কাচ ভাঙ্গা রাতের গল্প (১৯৯৮),
অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প (২০০১),প্রেম ও প্রার্থনার গল্প (২০০৫), সুখদুঃখের গল্প, বেলা অবেলার গল্প।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের অত্যন্ত জনপ্রিয় উপন্যাস সমূহের মধ্যে আধখানা মানুষ্য (২০০৬)দিনরাত্রিগুলি,আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন যোগাযোগের গভীর সমস্যা নিয়ে কয়েকজন একা একা লোক, ব্রাত্য রাইসু সহযোগে, কানাগলির মানুষেরা।

তাঁর লেখা প্রবন্ধ ও গবেষণাগ্রন্থ ছিল অধিক গবেষণালব্ধ। নন্দনতত্ত্ব (১৯৮৬),কতিপয় প্রবন্ধ (১৯৯২)। অলস দিনের হাওয়া, মোহাম্মদ কিবরিয়া, সুবীর চৌধুরীর সহযোগে, রবীন্দ্রানাথের জ্যামিতি ও অন্যান্য শিল্পপ্রসঙ্গ।

লেখকঃ লুৎফর রহমান একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি নিয়মিত লেখালেখির পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক নিউজ মিডিয়ার সম্পাদক ও প্রকাশক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র লুৎফর রহমান ৮০ এর দশকের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরতে চারটি রাজনৈতিক উপন্যাস লিখেছেন, যা দেশ বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবনের খন্ডচিত্র এঁকে তিনি এখন ব্যাপক পরিচিত পাঠক মহলে। গঠনমূলক ও ইতিবাচক লেখনীতে তিনি এক নতুন মাত্রা সংযোজন করতে সক্ষম হয়েছেন।

 

 

কিউএনবি /রাজ /১০.১০.২০২৫/ রাত ১০.০৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit