বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন

১৭ বছর পর বাড়ি ফিরল আইসক্রিম কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া কিরণ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৫৪৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আইসক্রিম কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া পাকিস্তানের কিরণ অবশেষে ১৭ বছর পর বাড়ি ফিরেছে। মাত্র ১০ বছর বয়সে বৃষ্টির মধ্যে আইসক্রিমের জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়া সেই ছোট্ট মেয়েটি এক মুহূর্তেই হারিয়ে যায় পরিবার ও শৈশবের পরিচিত পৃথিবী থেকে। 

দীর্ঘ সময় ধরে নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবার ধীরে ধীরে আশা হারালেও ভাগ্য বদলে যায় পাঞ্জাব পুলিশের ‘সেফ সিটি’ প্রজেক্টের একটি উদ্যোগ-‘মেরা প্যায়ারা’ দলের হাতে সূত্র আসার পর।

কিরণের বাড়ি পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুর জেলার ছোট্ট গ্রাম বাগরি। নিখোঁজ হওয়ার দিন সে ইসলামাবাদের জি-১০ সেন্টারে আইসক্রিম কিনতে গিয়েছিল পিসির বাসা থেকে। প্রবল বৃষ্টিতে বাসার পথ হারিয়ে ফেলে। অনেকক্ষণ এদিক-সেদিক ঘুরেও বাড়ি খুঁজে না পেয়ে অবশেষে এক ব্যক্তি তাকে ইসলামাবাদের ইধি সেন্টারে পৌঁছে দেয়। কয়েকদিন পর ইধি ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি বিলকিস ইধি তার শারীরিক অবস্থা দেখে করাচির ইধি সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে কেটেছে তার দীর্ঘ ১৭ বছর।

ইধি সেন্টারের কর্মীরা জানান, কিরণের স্মৃতিতে ছিল শুধু বাবার নাম আব্দুল মাজিদ, গ্রামের নাম এবং ইসলামাবাদে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার বিষয়টি। কিছুদিন আগে ‘মেরা প্যায়ারা’ দলের সদস্যরা করাচির ইধি সেন্টারে শিশুদের সাক্ষাৎকার নিতে গেলে কিরণের কথাগুলো তারা নথিভুক্ত করেন এবং পরবর্তী অনুসন্ধান শুরু করেন।

তথ্য পাঠানো হয় কাসুরের সেফ সিটি অফিসে। দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মুবশ্বির ফইয়াজ জানান, প্রথমে স্থানীয় প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলেও সঠিক ব্যক্তি শনাক্ত করা যাচ্ছিল না, কারণ সেখানে আব্দুল মাজিদ নামের লোকের সংখ্যা বেশি। শেষ পর্যন্ত পুরোনো পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য মিলে যায়—১৭ বছর আগে কিরণ নামে একটি মেয়ে নিখোঁজ হয়েছিল এবং পরিবারের অভিযোগও নেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্রে পৌঁছে যাওয়া হয় মাজিদের বাড়িতে। তিনি কিরণের পুরোনো ছবি ও নিবন্ধন সনদের তথ্য দেখে নিশ্চিত হন।

পরে ভিডিও কলে হয় প্রথম কথা। এরপর সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কিরণকে তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২৫ নভেম্বর সে বাড়ি ফিরে আসে। পরিবারের লোকজন জানান, কিরণ ছিল আব্দুল মাজিদের বড় মেয়ে। তাকে হারানোর পর থেকেই বাবা প্রায়ই কান্নায় ভেঙে পড়তেন। মেয়েকে ফেরত পেয়ে এবার তাঁর চোখে আনন্দাশ্রু।

কিরণ জানায়, ইধি সেন্টারে থেকে সে পড়াশোনা, রান্না ও সেলাই শিখেছে। কঠিন সময় পার করলেও সংগঠনের কর্মীরা তাকে সবসময় মানসিকভাবে শক্ত রেখেছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর অবশেষে নিজের বাবা, ভাইবোন এবং হারানো পৃথিবীর কাছে ফিরে গিয়ে কিরণ এখন নতুনভাবে জীবন শুরু করতে চাইছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

কিউএনবি/অনিমা/ ০১ ডিসেম্বর ২০২৫,/সকাল ১০:৩৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit