পিতার মৃত্যবার্ষিকীতে পুত্রের ফেসবুক স্ট্যাটাস
এডভোকেট আতিক উল্লাহ হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি। তিনি হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই) আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। হবিগঞ্জ জেলার নিজামপুর ইউনিয়নের বাগুনীপাড়া গ্রামে তিনি জন্ম গ্রহন করেন।
হবিগঞ্জ সদর -লাখাই উপজেলা নিয়ে হবিগঞ্জ ৩ আসন। এই আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট আতিক উল্লাহ’র আজ ২৫ তম মৃত্যবার্ষিকী। ২০০১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ এডভোকেট আতিক উল্লাহ মৃত্যবরণ করেন।
শায়েস্তাগঞ্জের বাগুনীপাড়ায় সাবেক এমপি এডভোকেট আতিক উল্লাহ চিরনিদ্রায় শায়িত হয়ে আছেন। প্রতি বছর দিনটিতে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী আত্মীয় স্বজন সহ এলাকাবাসী পরম শ্রদ্ধায় কবর জেয়ারত করেন, তার আত্মার শান্তি কামনা করেন।
প্রয়াত সাবেক এমপি এডভোকেট আতিক উল্লাহ একজন বিজ্ঞ আইনজীবী ছিলেন। তিনি সৎ, নির্লোভ, সাহসী ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন বিধায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাবেক হবিগঞ্জ মহকুমায় তাঁকে বিএনপি’র সাংগঠনিক দায়িত্ব প্রদান করেন। এডভোকেট আতিক উল্লাহ ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
হবিগঞ্জ জেলায় রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসাবে তিনি আজও ব্যাপকভাবে পরিচিত। সাবেক এমপি এডভোকেট আতিক উল্লাহ এর সন্তান অধ্যাপক ড. আমানউল্লাহ ফেরদৌস বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। গর্বিত পিতার সন্তান হিসাবে ড. আমানউল্লাহ ফেরদৌস তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। পিতার মৃত্যবার্ষিকী উপলক্ষে সন্তানের আকুতিভরা পোস্টটি কুইকনিউজবিডি.কম এর ফেসবুক কর্নার বিভাগে হুবহু প্রকাশ করা হলো।
উচ্চশিক্ষিত, সৎ, নির্লোভ, বেশভূষায়া কেতাদুরস্ত, আধুনিক এবং একই সঙ্গে ধার্মিক, ভীষণ পরোপকারী, অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল, বিপদগ্রস্ত ও অসহায় মানুষকে সাহায্যকারী, গণমানুষের নেতা এবং একজন সফল আইনজীবী ছিলেন আমাদের বাবা।
আমার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতার প্রথম হাতেখড়ি আব্বার হাতে। তিনি বলতেন, ‘তোমার ক্লাসে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ, অধার্মিক, ধনী-গরীব, গ্রাম-শহরের বাসিন্দা, বেশি বুঝার, কম বুঝার মানুষ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তোমার প্রতি বিরূপ মনোভাবের ছাত্র-ছাত্রীও থাকতে পারে — সবার প্রতি একই মনোভাব পোষণ করাটা হলো তোমার প্রথম কাজ। আর কোন মতবাদ নিয়েই (বিশেষত মার্কসীয় তত্ত্ব) নিজের ধারণা অন্যের উপর চাপিয়ে দিও না।’
মাহবুব স্যার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তখন আমি মার্কসের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ ছাড়া চোখে আর কিছুই দেখি না, নব্য-মার্কসবাদী, ক্রিটিক্যাল মার্কসবাদীদের সন্দেহের চোখে দেখতাম! এনিয়ে আব্বার সাথে প্রচুর তর্ক-বিতর্ক হতো। উনি মুচকি হেসে বলতেন ‘একদিন বুঝবা, আরো পড়াশোনা কর।’ বাম রাজনীতি দিয়ে জীবন শুরু করা এই মানুষটি কোন অভিমানে ইউটার্ন নিয়েছিলেন আমার আর বুঝা হলো না, মাঝ থেকে উনি চলে গেলেন হঠাৎ করে, অকালে!
আজকে উনার মৃত্যুবার্ষিকী। আপনাদের সবার কাছে উনার জন্যে দোয়া চাই।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক ড. আমানউল্লাহ ফেরদৌস
পাদটীকাঃ বর্তমানে স্বল্পকালীন সফরে আমেরিকা প্রবাসী ড. আমানউল্লাহ ফেরদৌস এর অনুমতি স্বাপেক্ষে তার ফেসবুক টাইমলাইন থেকে স্ট্যাটাসটি প্রকাশ করা হয়েছে।
কিউএনবি/রাজ/১৬.০৯.২০২৫/বিকাল ৩.৪৫