স্পোর্টস ডেস্ক : বুধবার (২৮ জুন) মাঠে গড়িয়েছে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্ট। মেঘলা আকাশ ও উইকেটে ঘাস দেখে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছিল ইংল্যান্ড। আদর্শ কন্ডিশনে বল পুরনো হয়ে যাওয়ার পরও দারুণ সুইং করছিল। তবুও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের সামনে পাত্তাই পায়নি ইংল্যান্ড। প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৯ রান তুলে বড় সংগ্রহের পথে হাঁটছে কামিন্সের দল। ৮৫ রান নিয়ে আজ আবার ব্যাটিংয়ে নামবেন প্যাট কামিন্স, সঙ্গী ১১ রান করা অ্যালেক্স ক্যারি।
স্মিথ ছাড়াও রান পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন। এজবাস্টন টেস্টে ব্যাট না হাসলেও লর্ডসে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন ওয়ার্নার। টাংয়ের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে আউট হওয়ার আগে ৬৬ রান করেন তিনি। তবে মাত্র ১৭ রানেই এই টেস্টে থেমেছেন আগের টেস্টের নায়ক উসমান খাজা। রান পেয়েছেন ট্রাভিস হেডও। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে ৭৩ বলে ৭৭ রান করেছেন তিনি। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান হারানো লাবুশেন করেছেন ৪৭।
পেস বোলারদের অনুকূল উইকেটে ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার জো রুট। ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২ উইকেট নিয়েছেন জস টাংও। তবে হতাশ করেছেন দলের দুই সেরা বোলার জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। এখনও উইকেটের দেখা পাননি তারা। পেসারদের এই ব্যর্থতায় জন্য তাদের ধুয়ে দিয়েছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা।
বদন্তি কেভিন পিটারসেন মনে করেন, স্টোকসের দল অ্যাশেজের গুরুত্বই অনুধাবন করতে পারছে না, তাই খেলায় যথেষ্ট মনোযোগ নেই তাদের। এই অ্যাশেজে স্কাই স্পোর্টসের হয়ে ধারাভাষ্য দেওয়া পিটারসেন বলেন, ‘আপনি ওদের ব্যাটসম্যানদের দেখবেন ড্রেসিংরুম ছেড়ে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে ছিল মাঠে নামার জন্য। ইংলিশরা তখনো ড্রেসিংরুমে। ওদের উচিত ছিল আগেভাবে মাঠে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে আউট করার চেষ্টা করা। এই দুই অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান নিচে এসে ইংলিশদের অপেক্ষা করছে। এমন কন্ডিশনে ওদের তো ড্রেসিংরুমে বসে থাকার কথা।’
মাঠে অজিদের সঙ্গে ইংলিশদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণও ভালো লাগছে না তার। তিনি বলেন, ‘আপনার কি মনে হয় ২০০৫ সালে রিকি পন্টিং জোন্সের সঙ্গে খোশগল্প করত? মাইকেল ভন কি জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে জিজ্ঞেস করত, “তারপর, কেমন যাচ্ছে? দিনটা সুন্দর, তা–ই না? উইকেট কেমন? লর্ডসের পরিবেশ কেমন?” এটা কি মজা করার ব্যাপার? আমি আশা করব, ইংলিশ কোচ তাদের কড়া করে বকা দেবেন আর বলবেন, ‘‘যা করছ তা যথেষ্ট নয়।” আপনি এমন কন্ডিশন পেয়ে এই বোলিং করতে পারেন না। আপনি ৩৯০ করে ইনিংস ঘোষণা দিতে পারেন না। (স্টোকস) তোমার কি মনে হয়, অস্ট্রেলিয়া ৩৯০ করে ইনিংস ঘোষণা করে বলবে, “যাও এবার ব্যাটিং করো।” কোনো সম্ভাবনা নেই।’
ইংলিশদের শরীরী ভাষা পছন্দ হয়নি আরেক সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভনেরও। অ্যাশেজ জয়ী এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমার ইংল্যান্ডকে খুব খামখেয়ালি মনে হয়েছে। ওদের নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ওদের মধ্যে অতিরিক্ত খামখেয়ালিপনা কাজ করছে। ওদের কাছে এটা আট-দশটা ম্যাচের মতো। কিন্তু অ্যাশেজ আট-দশটা ম্যাচের মতো নয়। অন্য দলের বিপক্ষে আপনি যত ইচ্ছা খামখেয়ালি করেন, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আপনি কেমন করেন, এটা দিয়েই আপনাকে বোঝা যায়।’
আরেক সাবেক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস মনে করেন, অতি-আত্মবিশ্বাস ইংলিশদের খামখেয়ালির জন্য দায়ী। সে জন্যই বোলিংয়ে ঘাটতি থেকে গেছে তাদের। তিনি বলেন, ‘সমস্যা হলো, ইংলিশ বোলাররাও হয়তো ভেবে নিয়েছিল বল ফেললেই কাজ হয়ে যাবে। হয়তো যথেষ্ট চেষ্টাও করেনি। ওরা কিছুটা এলোমেলো বোলিং করেছে। মনে হচ্ছিল ওরা প্রাণশক্তির অভাবে ভুগছে। ওরা নিশ্চয়ই হতাশ। কারণ, আজ সকালে অস্ট্রেলীয়দের চাপে রাখার তাদের দারুণ সুযোগ ছিল ইংলিশদের।’
কিউএনবি/আয়শা/২৯ জুন ২০২৩,/বিকাল ৫:৩৫