রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৩১ অপরাহ্ন

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু আজ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩
  • ৯৪ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই, বিপণনের জন্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের এমন গালভরা নামই দিয়ে থাকেন আয়োজক কিংবা সম্প্রচার সংস্থা। আদতে এই আসরটি হচ্ছে তলানির লড়াই, অর্থাৎ খারাপদের মধ্যে কম খারাপ নির্ণয়ের প্রতিযোগিতা।

বৈশ্বিক ফুটবল মানচিত্রে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো প্রভাব, অবদান, অর্জন কিছুই নেই। না এই অঞ্চল থেকে কোনো খেলোয়াড় বড় কোনো আসরে খেলেন, না এই দেশগুলোতে ফুটবল জনপ্রিয়তায় শীর্ষে। ক্রিকেট এখানে অনেকটাই ধর্মের সমান্তরাল। তবুও গোল পৃথিবীতে, গোল ফুটবলের খেলায় অংশ নেওয়ার দায় আছে। টিকে থাকাকেই সার্থকতা মেনে ফুটবল এই অঞ্চলে টিকে আছে এবং সেই অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্যই এই প্রতিযোগিতা। এর ওর ঘাড়ে ঠেলে দেওয়ার পর অবশেষে ভারত স্বাগতিক হতে রাজি হয়েছে এবং আজ বেঙ্গালুরুতে কুয়েত-নেপাল ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৪তম আসর।

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্কের সদস্য ৭ দলই সাফ ফুটবলে অংশ নেয়। বার চারেক আফগানিস্তানও অংশ নিয়েছিল, এই অঞ্চলের ফুটবলের পড়তি মান দেখে তারা মধ্য-এশিয়াতে পাড়ি জমিয়েছে। ফিফার নিষেধাজ্ঞায় এবার নেই শ্রীলঙ্কা। অতিথি দুই দল লেবানন এবং কুয়েত। লেবানন দল চলতি মাসের শুরু থেকেই ভারতে আছে, রবিবার স্বাগতিকদের কাছে তারা হেরেছে চার-জাতি হিরো ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের ফাইনালে। আসরের সর্বোচ্চ ফিফা র‍্্যাংকিং লেবাননের, ১০২। ৩৮ নম্বর স্থানে ভারত। দেশে চারজাতি আসরে শিরোপা জিতে সুনীল ছেত্রীর দলই ফেভারিট। লেবানন দিতে পারে কড়া টক্কর। হয়তো সাফের ফাইনালে দেখা যাবে এই দুই দলকেই।

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপে খেলতে ভারতে আসা নিয়ে অনেক চাপান-উতোর হলেও ফুটবল দল কিন্তু ঠিকই আসছে। পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশন টুইট করে জানিয়েছে, তারা মরিশাস থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে উড়াল দিয়েছে। মরিশাসে জিবুতি, কেনিয়া ও স্বাগতিকদের নিয়ে চারজাতি টুর্নামেন্ট খেলে ভারতে আসছে পাকিস্তান। ভিসা জটিলতায় দেরিতে রওনা হয়ে ম্যাচের মাত্র ১২ ঘণ্টারও কম সময় আগে তারা এসে নামবে বেঙ্গালুরুতে। ভ্রমণ ক্লান্তির জন্য স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশন।

কিন্তু সাফের সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের আনোয়ারুল হক হেলাল দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তান শেষ মুহূর্তে আসর পেছানোর অনুরোধ করেছে। যেটা আমাদের পক্ষে রাখা সম্ভব নয়। কারণ অনেকগুলো স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। এখানে অনেক কিছু জড়িত। তাছাড়া বিলম্ব যেটা হয়েছে তার দায়ভার পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনকেই নিতে হবে। তারা নিজ দেশের সরকারের অনুমতি পেয়েছে অনেক দেরিতে।’

বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় কুয়েত-নেপাল ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। রাত ৮টায় পরের ম্যাচে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। এবারের পাকিস্তান দলটায় বেশ কিছু পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বিদেশি খেলোয়াড় আছেন। ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়নশিপের দল কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সে খেলা হারুন হামিদ, রেডিচে খেলা রাহিস নবী, গ্রিমসবি টাউনে খেলা ওটিস খান আছেন দলে; আছেন ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া এবং ডেনিশ ক্লাবে খেলা কয়েকজনও। যদিও মরিশাসে তারা কোনো ম্যাচেই জেতেনি, তবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে কপাল ফিরতেও পারে।

অন্যদিকে সুনীল ছেত্রীর নেতৃত্বে লেবাননকে ফাইনালে হারানো ভারত ফুটছে আত্মবিশ্বাসে। চারজাতি আসরে লেবানন বাদে অন্য দুই দল ছিল মঙ্গোলিয়া ও ভানুয়াতু। কোনো ম্যাচেই হারেনি ভারত। ফাইনালে গোল করেছেন ছেত্রী ও চাংঘাটে। তাই ঘরের মাঠে নবমবারের মতো সাফ শিরোপা জয়ের উৎসবে মাততে সব প্রস্তুতিই নিয়ে রেখেছে ‘মেন ইন ব্লু’রা।

ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও কুয়েতকে নিয়ে ‘এ’ গ্রুপ। গ্রুপ ‘বি’-তে আছে লেবানন, মালদ্বীপ, ভুটান ও বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো হবে সিঙ্গেল লিগ। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল খেলবে সেমিফাইনালে, এক গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন খেলবে অন্য গ্রুপের রানার্সআপের বিপক্ষে। সেমিফাইনালের দুই জয়ী দল খেলবে ফাইনালে। সবগুলো ম্যাচই হবে বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে। দিনে দুটো করে ম্যাচ, দুই দিন খেলার পর একদিন বিরতি।

আগামী জানুয়ারিতে এশিয়ান কাপে খেলবে ভারত। তাই অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিম এশিয়ার দলের অন্তর্ভুক্তিকে, বলেছেন, ‘আমি লেবানন ও কুয়েতকে অন্তর্ভুক্ত করাকে স্বাগত জানাই। জানি না সাফ অঞ্চলের অন্য দলেরা কী ভাবছে, তবে আমরা সত্যিই খুশি কারণ এতে করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মান বাড়বে আর নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজে পাওয়া যাবে।’

একই শিরোপা ৮ বার জেতার পর এমন কথা ভারত অধিনায়ক বলতেই পারেন, বিশেষ করে সামনে যখন এশিয়ান কাপ যেখানে সিরিয়া, উজবেকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা। বাকিদের অবশ্য ‘এক রামে রক্ষা নেই সুগ্রীব দোসর’ অবস্থা। ১৩ বারে ৮ বার কাপ নিয়েছে ভারত, আফগানরা কাপ নিয়ে আর এমুখো হচ্ছে না আর শ্রীলঙ্কা নেই। ফাঁকফোকর দিয়ে বাংলাদেশ আর মালদ্বীপের যে সুযোগ ছিল, সেসবও এবার বন্ধ। বাংলাদেশ নিজেরাই লক্ষ্য ঠিক করেছে যদি সেমিফাইনালে ওঠা যায়। তাই বলা যায়, ৪ জুলাইয়ের ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ কে- কুয়েত না লেবানন?

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২১ জুন ২০২৩,/বিকাল ৪:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit