জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের কারণে আজ দুর্গন্ধ, অপরিচ্ছন্ন এবং কোলাহল মুখর এক ভিন্নরকম ক্যাম্পাস দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি যেন হোন্ডার গ্যারেজ ,মল চত্বর যেন বাস টার্মিনাল, প্রতিটি হলের আবাসিক রুম গুলো যেন শরণার্থী শিবির! পুরো ক্যাম্পাস যেন পাবলিক টয়লেট!ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন উপজেলা,থানা, জেলা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহানগর থেকে ছাত্রলীগের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক রুমে অবস্থান করে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হয়। এসব নেতাদের প্রটোকল দিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের কে “সঙ্গ” দিতে দিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হয়।
আজ ৬ ডিসেম্বর(২০২২) মঙ্গলবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের দিন পুরো ক্যাম্পাস সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন ইউনিট থেকে আগত নেতাকর্মীরা সকাল আটটার আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের ভেন্যু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিছিল নিয়ে যোগ দিতে বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে টিএসসির মোড়ে জড়ো হতে থাকে। সকালের নাস্তার প্যাকেট এবং পানির বোতল যত্রতত্র ফেলে পুরো ক্যাম্পাস ময়লা করে ফেলে। যত্রতত্র দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার ফলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীর বাইরের এলাকা থেকে আগত নেতাকর্মীদের বহনকারী বাসগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় পার্কিং করা হয়। ফলে মল চত্বর পরিণত হয় সাময়িক বাস টার্মিনালে।দুপুরে সম্মেলন শেষ হওয়ার পর নেতাকর্মীরা খাবার খেয়ে খাবারের প্যাকেট , পানির বোতল, মাংসের হাড় ইত্যাদি সেখানে ফেলে রাখে।বিকেলে শত শত হোন্ডা নিয়ে টিএসসিতে নেতাকর্মীদের আড্ডা দিতে দেখা যায়। টিএসসি পরিণত হয় হোন্ডার গ্যারেজে।
এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি শাখার আহবায়ক আরমানুল হক জানান, “কয়েকদিন আগেই ঢাবি ক্যাম্পাসে ঘটে গেল ভয়ংকর এক সড়ক দুর্ঘটনা, যা আমি কাঠামোগত হত্যা মনে করি। ঢাবি ক্যাম্পাসে ভারি যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এই জায়গায় সরকার দলীয় সংগঠন ৪০/৫০ টা বাস পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে যত্রতত্র রেখেছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড অসুবিধার কারণ হচ্ছে। এই সবকিছু দেখেও প্রশাসন নিরব ভূমিকা রাখছে।”এই বিষয়ে ছাত্রলীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলতে চাইলেও তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ডক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে কিংবা বাহিরে কোন প্রোগ্রাম হলে তার প্রভাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পড়ে। ক্যাম্পাসে যত জনসমাগম কম হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য তত মননশীল এবং প্রতিভার বিকাশে সহায়ক হবে।বাস পার্কিংয়ের বিষয়টি ট্রাফিক পরিবহন দেখভাল করে।ক্যাম্পাস ভিত্তিক প্রোগ্রাম যত কম হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য তত মঙ্গল।