ডেস্ক নিউজ : দুই ঈদ আমাদের জন্য একটি বিরাট নিয়ামত। কিন্তু আমরা এ দিনকে নিয়ামত হিসাবে গ্রহণ করি না। এ দিনে অনেক কাজ আছে যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ’তালার নিকটবর্তী হতে পারি। কিছু করণীয় দিক মেনে চললে ঈদ উদযাপন একটি ইবাদতে পরিণত হতে পারে। তাই চলুন এমন কিছু করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই।
গোসল করা
গোসল করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা। হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার আগে গোসল করতেন।
সুগন্ধি ও ভালো পোশাক পরিধান করা:
ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করার পর সুগন্ধি ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। তবে সুগন্ধি ব্যবহার করা মোস্তাহাব। এ ছাড়া ঈদের দিন ভালো পোশাক পরিধানের কথা উল্লেখ আছে। তার মানে এই নয় যে, পোশাকটি নতুন হতে হবে। বরং নিজের কাছে থাকা পোশাকের মধ্য হতে ভালোটা বেছে নিয়ে পরাটাই উত্তম।
ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া হলো সুন্নত। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, সুন্নত হলো ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া।
খাবার গ্রহণ:
ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করা এবং ঈদুল আজহার দিন ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু না খেয়ে নামাজ আদায়ের পর কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের আগে খেতেন না।
তাকবির পাঠ:
ঈদের দিন সকালের আরেকটি সুন্নত হলো, তাকবির পাঠ করতে করতে ঈদগাহে যাওয়া। ওই সময় জোরে জোরে তাকবির পাঠের কথা বলা হয়েছে। আবার তাকবির পাঠ করতে করতেই ঈদগাহ থেকে বাসায় ফেরা।
নামাজ পড়া:
ঈদের দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। প্রকৃতপক্ষে একজন ঈমানদার বান্দা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বেশি আনন্দিত হয়ে থাকে। হাদিসে শরীফে আছে, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে বের হয়ে দুই রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এর পূর্বে ও পরে অন্য কোনো নামাজ আদায় করেননি।
খুতবা শোনা:
ঈদের খুতবা বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। এতে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। হজরত আবদুল্লাহ বিন সায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায় তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের নামাজ শেষ করলেন, বললেন, আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে।
ফিতরা দেওয়া:
রমজান মাসে সিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে এবং অভাবগ্রস্তদের খাবার প্রদানের উদ্দেশ্যে ঈদের সালাতের পূর্বে নির্ধারিত পরিমাণের যে খাদ্যসামগ্রী দান করা হয়ে থাকে, শরিয়তের পরিভাষায় তাকেই জাকাতুল ফিতর বা ফিতরা বলা হয়। হাদিসে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ঈদের নামাজে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিলেন।
পথ:
সব ঈদেই ঈদগাহে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পথ ব্যবহার করার প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যদি ঈদগাহে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পথ ভিন্ন আর কোনো পথ না থাকে তাহলে যাওয়া ও আসার সময় রাস্তার ডান পাশ ব্যবহার করা উচিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটাই করতেন বলে বর্ণিত আছে।
দোয়া করা:
সবশেষে ঈদের নামাজ আদায়ের পর নিজের এবং জীবিত-মৃত সব মুসলমানের জন্য দোয়া করা উত্তম।
অভাবীকে খাওয়ানো
এতিমের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের খাবার খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে তাদের নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া। এটা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সেই সাথে নিজ পরিবার পরিজনের সঙ্গে সময় অতিবাহিত করা, আত্মীয়স্বজন, মাতা-পিতার সঙ্গে দেখা করা ও খোঁজখবর নেওয়া, পাড়া প্রতিবেশী, গরিব অসহায় নির্বিশেষে সকলের খোঁজখবর নেওয়া ও কুশল বিনিময় করা, সম্ভব হলে পরস্পরকে দাওয়াত দেওয়া, আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, ঝগড়া, বিবাদ, কলহ, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে সবার সঙ্গে মোলাকাত আলিঙ্গন ও একাকার হয়ে যাওয়া।
কিউএনবি/আয়শা/২রা মে, ২০২২/১৮ বৈশাখ, ১৪২৯/বিকাল ৩:০৫