স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে ওমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) হাফিজীয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার এক শিক্ষকের বেদম প্রহারে আরিফুল ইসলাম (১৬) নামে ছাত্রের একটি চোখ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক পড়াশুনা না করার অভিযোগে শিক্ষক হাফিজুর রহমান তাকে বেদম প্রহার করায় ওই ছাত্রের বাম চোঁখটির কর্নিয়া নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত ২৮ ফেব্রুারি সকালে মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার আরিফুল ইসলামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা ইসপাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘটলেও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এটা প্রকাশ হয়। আহত মাদ্রাসা ছাত্র আরিফুল ইসলাম উপজেলার জোকা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলীর ছেলে।
কৃষক আইয়ুব আলীর বড় ছেলে মামুন হোসেন জানান, দেড় বছর আগে তার ছোটভাই আরিফুল ইসলামকে মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের বুজতলা ওমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) হাফিজীয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানায় হেফজ বিভাগে ভর্তি করা হয়। ইতিমধ্যে তার ছোটভাই ১৫ পারা কোরান মুখস্ত করেছে। মামুন জানান, ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজুর রহমানের কাছে তার ছোটভাই পড়ছিল। কিন্তু আরিফুলের চোখে পূর্বথেকেই একটু সমস্যা থাকায় সে সব সময় চশমা ব্যবহার করে। মোবাইলফোনে আরিফুল ইসলাম জানায়, ওই দিন কোরান পড়ার সময় চোখ দিয়ে পানি আসায় পড়া বন্ধ করে সে বসে ছিল। আরিফুলের অভিযোগ এ কারনেই হুজুর তাকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করেন। একপর্যায়ে লাঠির আঘাতে তার চশমার গ্লাস ভেঙ্গে বাম চোখের ভেতর ঢুকে যায়। এতে আরিফুলের অবস্থা অবনতি হলে মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ওই দিন দুপুরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
আরিফুলের বড়ভাই মামুন হোসেনের অভিযোগ, তার ছোটভাইয়ের সাথে এমন অমানবিক আচরন করা হলেও শিক্ষকরা প্রথমে তাদেরকে এ সম্পর্কে কিছুই জানাননি। পরে খবর পেয়ে তারা যশোর থেকে আরিফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ইসপাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করেন।তিন দিন ধরে আরিফুল সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আরিফুলের পিতা আয়ুব হোসেন জানান, ছেলের চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত থাকায় এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও পরিচালক মাওলানা হাফিজুর রহামনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে আরিফুলের পিতা জানান, প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ঢাকাতে হাসপাতালে উপস্থিত থেকে তার ছেলের চিকিৎসার রেখাজখবর রাখছেন।
কিউএনবি/অনিমা/৩রা মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:১৫