বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বাংলাদেশের হারে ব্যাটারদের সমালোচনা করে যা বললেন রুবেল উইকিপিডিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইলন মাস্কের ‘গ্রকিপিডিয়া’ চালু দৌলতপুরে পদ্মার চরে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় বাহিনী প্রধান কাকন কে প্রধান আসামি করে হত্য মামলা সঞ্চয়পত্রের সার্ভার ব্যবহার করে হাতিয়ে নিলো গ্রাহকের ২৫ লাখ টাকা বিজয়ের সঙ্গে বাগদানের পরেই যে পরিকল্পনার কথা জানালেন রাশমিকা নতুন বছরের প্রথম মাসেই নির্বাচন হওয়া উচিত : নুর দক্ষিণী সিনেমায় অভিষেক সোনাক্ষীর ভারতীয় মিডিয়ার উস্কানিতেই সালমান খানকে নিয়ে বিতর্ক বেড়েছে বাজারে এখন খাবার আছে, কেনার সামর্থ্য নেই টেকসই গণতন্ত্র-জবাবদিহিতা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: মাসুদ সাঈদী

বাজারে এখন খাবার আছে, কেনার সামর্থ্য নেই

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধবিরতি হলেও গাজা এখনো এক ধ্বংসস্তূপের শহর। টানা দুই বছর ধরে বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসযজ্ঞ সহ্য করেছি আমরা। আমি প্রতিদিন যে পথ দিয়ে হেঁটে যাই, সেগুলো ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে বেঁচে থাকার গল্প বলে। যেখানে একসময় দালানকোঠা দাঁড়িয়ে ছিল, সেখানে এখন শুধুই ধ্বংসের স্তূপ। ভাঙা জানালা, গুলির দাগ, রকেটের ক্ষতচিহ্নে জর্জরিত দেওয়ালগুলো যেন সাক্ষী হয়ে আছে আমাদের অস্তিত্বের সংগ্রামের।

নীরবতায় এখনো ছেয়ে আছে পুরো শহর। যা ভেঙে যায় শুধু দূর থেকে ভেসে আসা শিশুদের কান্নার শব্দে। গাজার সবচেয়ে বড় সংকট এখন খাদ্য। যদিও বাজারে এখন খাবার পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তা কেনার সামর্থ্য নেই অনেকের। বাজার ভর্তি খাবার রেখে কী লাভ, যদি মানুষের পকেটে কোনো টাকাই না থাকে? ঘরবাড়ি নেই, চাকরি নেই, রোজগার নেই। পণ্যের দামও এত অস্বাভাবিক যে অধিকাংশ পরিবারেরই নাগালের বাইরে।

গাজায় গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের সাত মাসের মধ্যে গত শুক্রবার আমরা প্রথমবার মাংস খেয়েছি। তবে মুরগির স্বাদ পাইনি এখনো। কয়দিন আগে বহু মাস পর একটি আপেল খেয়েছি। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে কফি পাওয়া যাচ্ছে। আর চিনি এখন তুলনামূলক সস্তা, আলহামদুলিল্লাহ। প্রতিটি ছোট আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞতা। বাজারে এখন খাবার পাওয়া যাচ্ছে, তবে তা মানবিক সহায়তার কারণে নয়। কিছু ব্যবসায়ী পণ্য এনে অতি দামে বিক্রি করার সুযোগ পেয়েছে। মাসের পর মাস সেদ্ধ ডিম খেতে পারছে না শিশুরা। সাত মাস পর বাজারে হিমায়িত মাংস ও মুরগি এসেছে। কিন্তু এক কেজি মুরগির দাম ১৭০ শেকেল (প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা)।
এখনো ভয়াবহ পানি সংকটেও ভুগছে গাজা। একজন মানুষ দিনে কয়েক লিটারও বিশুদ্ধ পানি পায়। যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নর্দমার পানি রাস্তায় জমে আছে। এতে নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। শীত নামলেই আরেক ভয়ংকর কষ্টে জর্জরিত হয়ে পড়ে গাজা। গাজায় শীত মানে শুধু ঋতু পরিবর্তন নয়, বরং ইতোমধ্যেই বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন তাদের জন্য এটি দুর্ভোগের এক নতুন স্তর। যুদ্ধে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাদের জন্য এই শীত যেন আগের যে কোনো সময়ের চেয়েও নির্মম। তবে বৃষ্টি যে স্বস্তি বয়ে আনে, তেমনটা নয়। বৃষ্টি বয়ে আনে জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগ। যা তাঁবুগুলোকে দ্রুত ভিজিয়ে দেয়। এদিকে গাজা ধ্বংসের মধ্যেও গত দুই বছরে বেশ কয়েকটি বিয়ে হয়েছে। অত্যন্ত সরলভাবে, কোনো সংগীত নেই, বড় কোনো আয়োজন নেই। হয় তাঁবুতে, নয় তো ভাঙা ঘরে।

খান ইউনিস শহরের বাজার। ছবি:  সৌজন্যে মোনা হামদা

আজ বোমা পড়ছে না। সবকিছু শান্ত হয়ে আছে। কিন্তু গাজা এখন আর এই নীরবতাকে বিশ্বাস করে না। কারণ এই নীরবতা যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। এই তথাকথিত যুদ্ধবিরতির মাঝেও আমাদের চলাচলে স্বাধীনতা নেই। কিছু এলাকাকে এখনো ‘নিষিদ্ধ অঞ্চল’ বলা হয়। সেখানে ঢুকলেই গ্রাস করতে পারে ইসরাইলি ড্রোন। তবে এই হামলাকে কেউ যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন বলে না। আমরা শিখেছি বেদনার সঙ্গে বাঁচতে, বালতিতে গোসল করতে, যা হাতে আছে তাই খেতে, বৃষ্টির রাতে ছেঁড়া তাঁবুর নিচে দোয়া করতে। আমরা এত কেঁদেছি যে চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। তবুও আমরা জেগে উঠি। আমরা সহানুভূতি চাই না। আমরা চাই সবাই আমাদের মনে রাখুক। আমাদের মর্যাদা যেন মুছে না যায়। পৃথিবী যেন আমাদের ভুলে না যায় এবং আমরা শুধু বেঁচে থাকার গল্প নয়, পুনর্গঠনের গল্প বলতে পারি।

 

কিউএনবি/আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১১:০৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit