সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
কোরআনের দৃষ্টিতে কিয়ামত দিবস গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ সাংবাদিক নিহত রোমাঞ্চকর ম্যাচে লিভারপুলকে হারিয়ে কমিউনিটি শিল্ড জিতল ক্রিস্টাল প্যালেস নদী ভাঙ্গনে গৃহহীন মাজেদা বেগমের পাশে বিএনপি নেতা আসিফ সিরাজ রব্বানী রড বোঝাই ট্রাক লুট, নোয়াখালীতে যুবদল কর্মিসহ গ্রেপ্তার-২ “পার্বত্য চট্টগ্রামে বাজার ফান্ডের ঋণ-বন্দোবস্তিপ্রক্রিয়া চালু না করলে আন্দোলনের হুশিয়ারি” মনিরামপুরে যুবলীগ নেতাসহ তিনজন আটক নওগাঁর পত্নীতলায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত  শার্শার সীমান্তে ভারতীয় ইছামতি নদীর পানিতে শত শত একর জমির ফসল, মাছের ঘের, পুকুর ভেষে ছয়লাব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক মঙ্গলবার

কোরআনের দৃষ্টিতে কিয়ামত দিবস

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
  • ২ Time View

ডেস্ক নিউজ : পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে কিয়ামত দিবসের বর্ণনা এসেছে। কোরআনে কিয়ামত দিবসকে বিভিন্ন গুণবাচক নামে উল্লেখ করা হয়েছে। যে নামগুলোর মাধ্যমে কিয়ামত দিবসের অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো—

কিয়ামত দিবসের বৈশিষ্ট্য

পবিত্র কোরআনে কিয়ামত দিবসকে ১৮টি গুণবাচক নামে উল্লেখ করা হয়েছে।

তা হলো—
১. আর্তনাদ দিবস : কোরআনে কিয়ামত দিবসকে ইয়াউমুত-তানাদ বলা হয়েছে। তানাদ শব্দের অর্থ সজোরে আহবান করা, আর্তনাদ করা। কিয়ামতের দিন মানুষ ভয়ে আর্তনাদ করতে থাকবে। তাই কিয়ামত দিবসকে তানাদ ও আর্তনাদ দিবস বলা হয়েছে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের জন্য আশঙ্কা করি আর্তনাদ দিবসের।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৩২)
২. প্রতিশ্রুত দিবস : কিয়ামত দিবসের বৈশিষ্ট্য হলো তা ‘ইয়াউমুল মাওউদ’ বা প্রতিশ্রুত দিবস। যেহেতু আল্লাহ এই দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং এই বান্দাদের প্রতিশ্রুত পুরস্কার ও শাস্তি দেওয়া হবে, তাই পরকালকে ইয়াউমুল মাওউদ বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘শপথ নক্ষত্ররাজি বিশিষ্ট আকাশের শপথ, প্রতিশ্রুত দিবসের শপথ।’ (সুরা : বুরুজ, আয়াত : ১-২)

৩. সত্য দিবস : কিয়ামত দিবস সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ ও সংশয় নেই। তাই এই দিবসকে ‘ইয়াউমুল হক’ বা সত্য দিবস করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘এই দিবস সুনিশ্চিত; অতএব, যার ইচ্ছা সে তার প্রতিপালকের শরণাপন্ন হোক।’
(সুরা : নাবা, আয়াত : ৩৯)

৪. কঠিন দিবস : কিয়ামত দিবস অবিশ্বাসীদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুন আসির’ বা কঠিন দিবস বলা হয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন হবে এক সংকটের দিন, যা অবিশ্বাসীদের জন্য সহজ নয়।’ (সুরা : মুদ্দাসসির, আয়াত : ৯-১০)

৫. লাভ-লোকসানের দিন : কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীরা ঈমান না আনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং মুমিনরা ঈমান-আমল দ্বারা উপকৃত হবে। এ জন্য এই দিনকে লাভ-লোকসানের দিন বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যেদিন তিনি তোমাদের সমবেত করবেন সমাবেশ দিবসে সেদিন হবে লাভ-লোকসানের দিন…।’ (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ৯)

৬. বের হওয়ার দিন : কিয়ামতের দিন মৃতরা কবর থেকে বের হয়ে আসবে এবং তাদের আমলের বিচার হবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুল খুরুজ’ বা বের হওয়ার দিন বলা হয়েছে। (সুরা : কাফ, আয়াত : ৪২)

৭. অনন্ত জীবনের দিন : কিয়ামত দিবসে মানুষের বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর জান্নাত ও জাহান্নামের অনন্ত জীবন শুরু হবে। অবশ্য কোনো মুমিন শাস্তি ভোগের পর চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ জন্য এই দিবসকে ‘ইয়াউমুল খুলুদ’ বা অনন্ত জীবনের দিন বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তাদেরকে বলা হবে, শান্তির সঙ্গে তোমরা তাতে প্রবেশ করো; এটা অনন্ত জীবনের দিন।’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ৩৪)

৮. শাস্তির দিন : কিয়ামত দিবসে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুল ওয়াইদ’ বা শাস্তির দিনও বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে, এটাই শাস্তির দিন।’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ২০)

৯. সমবেত হওয়ার দিন : কিয়ামতের দিন সব মানুষ ও প্রাণীকে সমবেত করা হবে এবং সবাই সেদিন উপস্থিত হবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুন মাশহুদ’ ও ‘ইয়াউমুল জাময়ি’ বা সমবেত হওয়ার দিন বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘এটা সেই দিন, যেদিন সব মানুষকে একত্র করা হবে; এটা সেই দিন, যেদিন সবাইকে উপস্থিত করা হবে।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১০৩)

১০. কর্মফল দিবস : কিয়ামত দিবসে মানুষ নিজ নিজ কাজের ফল লাভ করবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুদ্দিন’ বা কর্মফল দিবস বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘(যিনি) কর্মফল দিবসের মালিক।’ (সুরা : ফাতিহা, আয়াত : ৩)

১১. আসন্ন দিন : কিয়ামতের দিনকে কোরআনে ‘ইয়াউমুল আজিফাহ’ বলা হয়েছে। যার অর্থ অতি নিকটে অবস্থানকারী, যা আসন্ন। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের সতর্ক করে দাও আসন্ন দিন সম্পর্কে, যখন দুঃখ-কষ্টে তাদের প্রাণ কণ্ঠাগত হবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ১৮)

১২. সাক্ষাৎ দিবস : কিয়ামত দিবসের একটি গুণবাচক নাম হলো ‘ইয়াউমুত তালাক’। যার অর্থ সাক্ষাৎ দিবস। এই নামকরণের কারণ হলো, ‘কিয়ামতের দিন বান্দা আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে, উম্মত নিজ নিজ মুখোমুখি হবে, অনুসরণকারীরা নেতাদের সাক্ষাৎ পাবে এবং মুমিনরা পরস্পরের সাক্ষাৎ পাবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ১৫)

১৩. হিসাবের দিন : কিয়ামতের দিন বান্দার সব কাজের হিসাব নেওয়া হবে। এ জন্য এই দিনকে ‘ইয়াউমুল হিসাব’ তথা হিসাবের দিন বলা হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা বলে, হে আমাদের রব! হিসাব দিবসের আগেই আমাদের প্রাপ্য আমাদের শিগগির দিয়ে দাও না।’ (সুরা : সোয়াদ, আয়াত : ১৬)

১৪. পুনরুত্থান দিবস : কিয়ামতের দিনে মানুষ, জিনসহ সব প্রাণীকে পুনরুত্থিত করা হবে। তাই এই দিনকে পুনরুত্থান দিবস বা ‘ইয়াউমুল বাআস’ বলা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কিন্তু যাদের জ্ঞান ও ঈমান দেওয়া হয়েছে তারা বলবে, তোমরা তো আল্লাহর বিধানে পুনরুত্থান দিসব পর্যন্ত অবস্থান করেছ। এটাই তো পুনরুত্থান দিবস, কিন্তু তোমরা জানতে না।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ৫৬)

১৫. পার্থক্যকারী দিন : কিয়ামতের দিন সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদীদের ভেতর এবং পাপী ও পুণ্যবানদের ভেতর পার্থক্য হয়ে যাবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুল ফাসল’ বা পার্থক্যকারী দিন বলা হয়েছে। (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ২১)

১৬. আক্ষেপের দিন : কিয়ামতের দিন বহু মানুষ নিজ কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে এবং আক্ষেপ করবে। তাই এই দিনকে ‘ইয়াউমুল হাসরাতি’ বা আক্ষেপের দিন বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের সতর্ক করে দাও পরিতাপ দিবস সম্পর্কে, যখন সব সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। এখন তারা উদাসীন এবং তারা বিশ্বাস করে না।’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ৩৯)

১৭. সুনির্ধারিত সময়ের দিন : আল্লাহ কিয়ামতের দিনকে ‘ইয়াউমুল ওয়াক্তিল মালুম’ বা সুনির্ধারিত সময়ের দিন বলেছেন। কেননা কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে তা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। (সুরা : হিজর, আয়াত : ৩৭-৩৮)

১৮. কিয়ামত দিবস : কিয়ামত শব্দের অর্থ পুনরুত্থান। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ কিয়ামত দিবসে তাদের ভেতর ফয়সালা করে দেবেন—যেসব বিষয়ে তারা পরস্পরের সঙ্গে মতবিরোধ করত।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১১৩)

 

কিউএনবি/অনিমা/১১ আগস্ট ২০২৫/সকাল ১০:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit