বিনোদন ডেস্ক : দেখতে দেখতে ১৫ বছর পার হয়ে গেল। দীর্ঘ সময় ক্যামেরাবন্দি থাকার পর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র ৯০তম বছরে মুক্তি পেতে চলেছে সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’।
সেই উপলব্ধি থেকেই সম্প্রতি সিনেমার ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠানে এসে ঔপন্যাসিকের বিখ্যাত সংলাপ— ‘শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম?’-এর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন অভিনেত্রী। ‘কুসুম’ যদি শরীরকে এগিয়ে রাখে, জয়া কাকে প্রাধান্য দেন— মনকে? এমন প্রশ্ন ছিল অভিনেত্রীর কাছে। স্মিত হেসে জয়া বলেন, মন দিয়ে তো মানুষকে ছোঁয়া যায় না। শরীর দিয়ে মন ছুঁতে হয়। আমার জীবনে মন ও শরীর— উভয়ের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস কুসুমেরও তাই।
২০০৬ সালে পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসকে পর্দায় ধরবেন। কিন্তু ভাবলেই তা হচ্ছে কই? কখনো তিনি মানিকবাবুর গল্পের স্বত্ব পাচ্ছেন না। আবার কখনো প্রযোজক। প্রযোজনা সংস্থা ক্যালাইডোস্কোপের কর্ণধার সমীরণ দাস এগিয়ে আসার পর দুই সমস্যার সমাধান যদিও বা হলো, বাধ সাধল অতিমারী।
সিনেমার প্রত্যেক চরিত্র একুশ শতকের মতোই ভাগ্যের হাতের ‘পুতুল’? জানতে চাইতেই পরিচালক বলেন, কমবেশি প্রত্যেকে। সিনেমার নায়ক শশী যেমন হাজার চেয়েও নিজের গ্রামের বাইরে পা রাখতে পারেনি। ইচ্ছে থাকলেও আমি তেমনি সিনেমা নির্মাণ করেই তার মুক্তি ঘটাতে পারিনি। যদিও এত লম্বা সময় বৃথা যায়নি।
সুমন বলেন, তিনি এই সময় নানা জায়গায় গেছেন। যে জায়গা তার ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র শুটিংয়ের উপযুক্ত মনে হয়েছে, সেসব জায়গার ভিডিও তুলে রেখেছিলেন।
পরিচালক বলেন, সিনেমা শুরুর পর কাজ দ্রুত এগিয়েছে। হোমটাস্ক করা ছিল বলে বেশি সময় নিইনি। সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
স্থান নির্বাচনের পাশাপাশি চিত্রনাট্য তৈরির গোড়া থেকেই সুমনের মনে নায়ক-নায়িকা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল। তিনি বলেন, আবীর এর আগেও উপন্যাসধর্মী সিনেমায় সফল, তাই ‘শশী’ চরিত্রে ওকেই বেছেছিলাম। যদিও অভিনেতা নিজের কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন— তিনি প্রথমে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ‘সুমন দা’ বলার পর সত্যিই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। কেবলই মনে হচ্ছিল, পারব তো?
সুমন বলেন, অতিমারী আমার ভীষণ সহযোগিতা করেছিল। ওই সময় উপন্যাস, আমার অভিনীত চরিত্র মন দিয়ে পড়েছিলাম। নায়ক আবার এও বলেছেন— ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ মোটেই গম্ভীর মুখে দেখার সিনেমা নয়। ৯০ বছর আগে এখনকার সমাজ তুলে ধরেছিলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইভাবে জয়ার মধ্যে বাকি পরিচালকদের মতোই মাটির গন্ধ পেয়েছেন সুমন। ‘চেহারা, মাটিতে পা রেখে জীবনযাপন, নিজের হাতে বাগানচর্যা— সব মিলিয়ে জয়া ভীষণ মেটো। ওকে ছাড়া ‘কুসুম’ চরিত্রে আর কাকে ভাবব? পাল্টা প্রশ্ন তার।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিসর্জন’ বা ‘বিজয়া’ সিনেমার মতো এখানেও জয়ার তাঁতের লাল পাড়, ডুরে শাড়ি, কপালজোড়া অল্প ধেবড়ে যাওয়া সিঁদুরের টিপ। বিপরীতে আবীর—এমন প্রশ্ন করার আগেই বললেন জয়া আহসান বলেন, আমায় ভারতীয় পরিচালকরা ভালোবাসেন, সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ডাকেন— তার জন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু এখনই শশী-কুসুমের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে জানতে চাইবেন না। ওটা ১ আগস্ট পর্দার জন্য তোলা থাক?
কিউএনবি/আয়শা/২৫ জুলাই ২০২৫,/বিকাল ৫:৫০