রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

“পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে বৈষম্যমূলক কোটা ভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের দাবি”

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি।
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫
  • ৭৩ Time View
আলমগীর মানিক,রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি : বৈষম্য দূরীকরণের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকারের অধীনস্থ পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে এখনো বৈষম্যমূলক নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পার্বত্য নাগরিদ পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ উত্থাপন করে নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি রাঙামাটি জেলা পরিষদের অধীনে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এসময় পার্বত্য নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলার নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আবু বক্কর মোল্লাসহ বিভিন্ন স্তুরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দ তাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ এ ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনবল নিয়োগের বৈষম্য দূর করার জন্যই ২০২৪ সালে জুলাই বিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্যপূর্ণ কোটা ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে সরকার ৭ শতাংশ কোটা রেখে অবশিষ্ট ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা গত ২০২৪ সালের ২৩ জুলাই গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে চুড়ান্ত করা হয়েছে।

অথচ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ উল্টো পথে হাঁটছে। বৈষম্য বিরোধী চেতনার অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়েও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আগের মতো বৈষম্যনীতি নিয়েই চলছে। আর্শ্চ্যযের বিষয় হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা পরিষদসমূহ জেলা পরিষদ আইনের দোহাই দিয়ে পূর্বের নিয়মে এখনো উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার দিয়ে সকল নিয়োগে বৃহত্তর জনগোষ্ঠি বাঙালি প্রার্থীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। উদাহরণ স্বরূপ ২০২৪ সালের ২৩ নভেম্বর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে জঐউঈ-ঊজজউ-ঈঐঞ, টঘউচ এর যৌথ প্রকল্পের জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে মাত্র ১০ শতাংশ বাঙালি প্রার্থী নিয়োগ দিয়েছিল।

অবাঙালি তথা উপজাতীয় নিয়োগ দিয়েছিল ৯০ শতাংশ, অবাঙালিদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল চাকমা জনগোষ্ঠির। অন্যদিকে ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর রাঙামাটি জেলা পরিষদের অধীনে জঐউঈ ও ওখঙ এর যৌথ বাস্তবায়নাধীন চজঙএজঊঝঝ প্রকল্পের শতভাগ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র চাকমা জনগোষ্ঠি থেকে। বাঙালিসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠির নিয়োগ প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শাসনের পতনের পর এই ধরনের জাতিগত বৈষম্য কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যেকোনো মূল্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান এসব জাতিগত বৈষম্যের অবসান করা প্রয়োজন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের অধীনে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী নিয়োগের জন্য গত ২০/০৬/২০২৫ তারিখে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এ নিয়োগ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
এই নিয়োগ থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান বৈষম্য থেকে স্থানীয় অধিবাসীদের মুক্তি দেয়া হোক। আমাদের প্রত্যাশা, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল নিয়োগ, শিক্ষাবৃত্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে হয় বৈষম্যমুক্তভাবে জনসংখ্যানুপাতে প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে অথবা উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে ২০২৪ সালের ২৩ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের আলোকে ৭ শতাংশ কোটা (মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫%, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১%, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১%) এবং অবশিষ্ট ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে।

তাই চলমান স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে সকল নিয়োগ ও শিক্ষাবৃত্তি বিতরণে জনসংখ্যানুপাতে বন্টনের ব্যবস্থা নিতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় জেলা পরিষদের বৈষম্যনীতি দূর করতে পার্বত্যবাসী কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান পার্বত্য নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

 

কিউএনবি/আয়শা//২৬ জুন ২০২৫, /বিকাল ৩:০২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit