বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১১:৫০ অপরাহ্ন

কুরবানির আগে দশ দিন চুল-নখ না কাটার তাৎপর্য

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫
  • ৪৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাঈল (আ.)-এর আত্মত্যাগ স্মরণ করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে পশু কুরবানির বিধান দিয়েছেন। 

এ কুরবানির মাধ্যমে পিতা-পুত্র উভয়েই আল্লাহর আদেশের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ, আনুগত্য, ও ধৈর্যশীলতার সুস্পষ্ট কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

কুরবানির অন্যতম শিক্ষা হলো, আল্লাহর দাসত্বকে স্বীকার করে নিয়ে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করা। জাহেলি যুগের মুশরিকরা আল্লাহকে স্রষ্টা হিসাবে স্বীকার করলেও বিভিন্ন ইবাদত ও কুরবানির ক্ষেত্রে তার সঙ্গে অন্য দেবতা, মূর্তি বা প্রাকৃতিক বস্তুর অংশীদারিত্ব করত। তারা তৎকালীন বিভিন্ন কুপ্রথা ও অন্ধ অনুকরণের অনুগামী ছিল।

কুরবানি তো তারাই দেবে, যাদের সামর্থ্য রয়েছে। যাদের রয়েছে কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার মতো নেসাব ও সম্পদ, তাদের ওপরই কুরবানি ওয়াজিব।

কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানি, ইচ্ছা করলে অসামর্থ্যবানরাও কুরবানির সওয়াব হাসিল করতে পারে। তারাও পারে আল্লাহর অফুরন্ত রহমত কুড়াতে, এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে। এটি শুধু কুরবানির ক্ষেত্রেই নয়, অন্যান্য আমলের ক্ষেত্রেও। 

যারা কুরবানির সামর্থ্য রাখে না, তারা যদি ঈদের দিন ক্ষৌর কর্ম করে। অর্থাৎ জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর ক্ষৌরকার্য না করে ঈদের নামাজ পড়ে এসে ক্ষৌরকর্ম করে। 

একটি হাদিসে এমন ব্যক্তিকে একটি কুরবানির সওয়াব দেওয়ার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।

 আমর বিন আস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন: আমাকে আজহার দিনকে ঈদ পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এটিকে আল্লাহতায়ালা সমগ্র উম্মতের জন্য ঈদ করেছেন। 

জনৈক ব্যক্তি বললেন, আমার কাছে ধার করা দুধের বকরি ছাড়া আর কিছু না নেই, আমি কি কুরবানি করবে? নবীজি বললেন— না। তুমি তোমার চুল, নখ, গোঁফ কাটবে, এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এর দ্বারা তুমি আল্লাহর কাছে পূর্ণ কুরবানির সওয়াব প্রাপ্ত হবে। (সুনানে নাসায়ী, হাদিস নং ৪৩৬৫, আবু দাউদ, ২৭৮৯)

এ হাদিসের ভিত্তিতে ফকিহরা বলেন, জিলহজের চাঁদ ওঠার পর থেকে কুরবানিদাতাদের জন্য নখ, চুল, লোম না কাটা মুস্তাহাব। তবে এ হুকুম তাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে যারা জিলকদের শেষে নখ-চুল কেটেছে। নখ-চুল বেশি লম্বা হয়ে গেলে কেটে ফেলতে হবে।

কাজেই, যাদের এখনও জরুরি ক্ষৌরকর্মের প্রয়োজন রয়েছে, তারা জিলহজের চাঁদ ওঠার আগেই তা সেরে নিন। প্রয়োজন না থাকলে করার দরকার নেই। এর পর ঈদের দিনের অপেক্ষা করুন। সেদিন এই ক্ষৌরকার্য সম্পন্ন করুন। ইনশাআল্লাহ একটি পূর্ণ কুরবানির সওয়াব পাবেন।

এ বছর (২০২৫) ঈদুল আজহা হতে পারে ৭ বা ৮ জুন। জিলহজের চাঁদ দেখা যেতে পারে আগামীকাল বুধবার ২৮ মে দিবাগত রাতে। তাই যারা কোরবানি করবে, তাদের আগামীকাল সন্ধ্যার আগেই চুল, গোঁফ, অন্যান্য অযাচিত লোম ও নখ কেটে ফেলতে হবে।

জরুরি মাসয়ালা

ক্ষৌরকার্য ঈদের প্রথম দিন সম্ভব না হলে ২য়, ৩য় দিনও করা যাবে। সকালে সম্ভব না হলে বিকাল বা রাতেও করা যাবে।

যারা কুরবানি করবেন, তারাও ঈদের দিন ক্ষৌরকার্য করা মুস্তাহাব। (সহীহ মুসলিম: ১৯৭৭)

ক্ষৌরকর্মের মধ্যে দাড়ি শেভ করা অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং এক মুষ্ঠির নিচে দাড়ি কাটা মাকরূহে তাহরিমি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৭ মে ২০২৫, /সন্ধ্যা ৭:০৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit