এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : সুখবর, সুখবর, সুখবর। মাংসপ্রিয় ভোজনবিলাসীদের জন্য সুখবর। আগামীকাল সকালে ভোলার মাংসের দোকানে একটি মহিষ জবাই করা হবে। মহিষটির মূল্য ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। আগে আসলে আগে পাবেন ফুরিয়ে গেলে পাবেন না।প্রতিনিয়ত উচ্চ শব্দে মাইকে এমন সব প্রচারণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পৌর শহরসহ উপজেলার মানুষ।শহরের বাসিন্দা শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, শহরে সকাল থেকে মধ্য গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে সিনেমা, সভা-সমিতি, রাজনৈতিক- সামাজিক সংগঠনের কর্মসূচি, ভোগ্যপণ্য, চিকিৎসকের সেবা, ছাগল-গরুর মাংস, দেশী ও বয়লার, মলম-মাজন বিক্রি, গরু-ছাগল হারানোসহ নানা প্রচারণা চালানোহয়। ফলে সড়কের পাশে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাসপাতাল, অফিস,ব্যাংক-বিমার দাপ্তরিক কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।শহরের বাকপাড়া এলাকার এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০২৫ সোনিয়া বেবী বলে,এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি চলছে।
দিন-রাত মাইকিংয়ের আওয়াজে পড়ার মনোযোগ নষ্ট করে দেয়। শহরের প্রেসক্লাব চত্বর এলাকার ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান বলেন, শহরে উচ্চ শব্দে রাত-দিন মাইকিং চলছে। মাইকিংয়ের আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। এতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ এ নীরব, আবাসি, মিশ্র, বাণিজ্যি ও শিল্প এ পাঁচটি এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিধিমালায় নীরব এলাকায় দিনে (ভোর ছয়টা থেকে রাত নয়টা) ৫০ ডেসিবল ও রাতে (রাত নয়টা থেকে ভোর ছয়টা) ৪০ ডেসিবল,আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ রাতে ৪৫, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০, রাতে ৫০,বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০, রাতে ৬০ ও শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বিধিমালায় শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম না করার শর্তে মাইক, এমপ্লিফায়ার ব্যবহার করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধানও আছে। তবে শহরবাসীর অভিযোগ, শহরে মাইকিংয়ের ক্ষেত্রে এ বিধান মানা হয় না। বিধান মানা না হলেও প্রশাসন আইনের প্রয়োগ করে না।
শহরের বিভিন্ন সড়কে সম্প্রতি উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে এনার্জি সেভার বৈদ্যুতিক বাল্ব বিক্রি করছিলেন আফজাল হোসেন (২৮)। তিনি বলেন, ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে মাইক বাজাতেই হয়।চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুরাইয়া পারভীন বলেন, নিয়মিত শ্রবণে সাধারণত ৬০ ডেসিবল শব্দের তীব্রতায় মানুষ সাময়িক বধির ও ১০০ ডেসিবল স্থায়ী বধির হয়ে যেতে পারে। মাইকিংয়ের শব্দ মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত করে। এতে শ্রবণশক্তি হ্রাস ছাড়াও হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। তবে শব্দদূষণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গর্ভবতি মা ও শিশুরা। শব্দদূষণ তিন বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মানসিক বিকাশের অন্তরায়।পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক বলেন, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ এর ১৮ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি বিধিমালার বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি প্রথম অপরাধের জন্য অনধিক এক মাসের কারাদন্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য অনধিক ছয় মাস কারাদন্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন। কিন্তু অধিদপ্তর লোকবলের অভাবে জেলা পর্যায়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা
করতে পারে না।
কিউএনবি/অনিমা/২১ জানুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৩:৫৪