সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন

গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপনে আওয়ামীপন্থি ইউপি চেয়ারম্যানরা, স্থবির সেবা কার্যক্রম

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫০ Time View
বাদল আহাম্মদ খান ,নিজস্ব প্রতিবেদক, আখাউড়া  : আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে। এসব ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগপন্থি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। হামলা, মামলার ভয়ে নিজেদের নিরাপত্তা  নিশ্চিতে গাঢাকা দিয়েছেন। পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা আত্মগোপনে থাকায় নাগরিকরা ওয়ারিশ সনদ, জন্ম ও মৃত্যুসনদসহ সংশোধিত জন্মনিবন্ধন পেতে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে সেবাদানে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
জানাযায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার কিছু দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি মামলায় আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আসামী করা হয়। এরপর থেকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারমানগণ দায়িত্ব পালনে সমস্যায় পড়েন। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান তারা। আবার অনেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলেও গুঞ্জন উঠেছে।সরজমিন গিয়ে দেখাযায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ, শুধু সচিব অফিস করছেন। আওয়ামীপন্থি চেয়ারম্যানদের অনেকেই ক্ষমতার পালাবদলের কারণে নিজেদের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের রোষানল থেকে বাঁচতে ইউনিয়ন পরিষদে আসছেন না। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের সেবাগ্রহীতারা বিভিন্ন সনদের আবেদন করেও চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর না থাকায় প্রয়োজনীয় সনদ পাচ্ছেন না। এতে করে জরুরি দাপ্তরিক কাজে ব্যাহত হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের।
দ্বীন ইসলাম নামের এক উত্তর ইউনিয়নের এক যুবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খুব জরুরি প্রয়োজনে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য তিনদিন পরিষদে এসে ঘুরেফিরে যাচ্ছি কিন্তু চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর মিলে নি।আনোয়ারপুর এলাকার তানবীর নামে আরেক যুবক একই অভিযোগ করে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন,জনপ্রতিনিধিরা পলাতক থাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের মতো ইউনিয়ন পর্যায়ের সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। 
স্থানীয়রা বলছেন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আওয়ামীপন্থি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা নানা অপকর্ম করেছে। এখন তারা জনরোষে পড়ার ভয়ে গাঢাকা দিয়েছেন কিন্তু সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে নাগরিকদের। প্রশাসনের কাছে দাবি, জনগণের সেবা নিশ্চিতে যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার জন্য দুইটি ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান এবং একটিতে প্রশাসক নিয়োগে দিয়েছেন।  আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন কাজী ইউসুফ, আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে আয়েত আলী এবং মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলা প্রতিবন্ধি সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালট্যান্ট ডাঃ এ. এইচ. এম মামুনকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, মনিয়ন্দ ও ধরখার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণও মামলা জনিত কারণে নিয়মিত পরিষদে আসছেন না। এতে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন সেবা নিতে আসা ভোগান্তিতে পড়ছেন। তবে, গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলেও জানাযায়। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, জনসেবা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (ইউনয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় উপজেলার দুইটি ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান এবং একটিতে প্রশাসক নিয়োগে দেওয়া হয়েছে। আশা করি জনসেবায় আর কোন বিঘ্ন ঘটবে না। 
কিউএনবি/অনিমা/১৬ নভেম্বর ২০২৪,/সকাল ১০:৫২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit