রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা প্রচারে পবা উপজেলায় উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ নতুন মৌসুমে নিজের লক্ষ্যের কথা জানালেন ওলমো হিজবুল্লাহ অস্ত্র সমর্পণ করবে না, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধেই থাকবে মোহরে ফাতেমি কী, বর্তমান কত টাকা? এশিয়া কাপে বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ আবুধাবিতে জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনে আগ্রহ নেই মানুষের, জানালো জাতিসংঘ ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন ৮ ফল, পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের আজওয়া খেজুরের উপকারিতা নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে দেশ নিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা ছিল তার অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়নি: সারজিস ঐকমত্য হলে ৮ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে: উপদেষ্টা আসিফ

রদ্রি কি আসলেই ব্যালন ডি’অর জেতার যোগ্য?

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪০ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক :

ব্যালন ডি’অর বরাবরই ফুটবল দুনিয়াকে বিভক্ত করে দেয়। ২০২১ সালে লিওনেল মেসি এবং রবার্ট লেভান্ডভস্কির ভক্তদের মধ্যে এই ইস্যুতে বৈরিতা তৈরি হয়েছিল। দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডায় সামাজিক মাধ্যম তখন রীতিমত ‘রণক্ষেত্রে’ পরিণত হয়। এবার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং রদ্রির পক্ষে-বিপক্ষে সামাজিক মাধ্যম সরগরম।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় প্যারিসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকেই ফেভারিট মনে করা হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে পাশার দান উল্টে গেছে!

ইতালিয়ান সাংবাদিক ফাব্রিজিও রোমানো হঠাৎ জানিয়ে দেন, ভিনিসিয়ুসের জেতার সম্ভাবনা নেই; তাই রিয়াল মাদ্রিদের কোনো প্রতিনিধি ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না। বলা যায়, ভিনিসিয়ুস পুরস্কার জিতবেন না আঁচ করে রিয়াল ব্যালন ডি’অর ‘বয়কট’ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরে সেটাই সত্যি হয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদের কেউ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। ভিনিসিয়ুসেরও ব্যালন ডি’অর জেতা হয়নি। এই পুরস্কার গেছে ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলা স্প্যানিশ সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার রদ্রির হাতে। গত মৌসুমে সিটিজেনদের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছেন তিনি, পাশাপাশি স্পেনের ইউরো জয়েও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

অন্যদিকে ভিনিসিয়ুস রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগের অন্যতম প্রধান অস্ত্র। গত মৌসুমে রিয়ালের লা লিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে বড় অবদান রয়েছে তার। তবে কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের জার্সিতে খেললেও শিরোপা অধরা ছিল তার। তাই শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শিরোপাই ব্যালন ডি’অরের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক হয়ে উঠেছে কিনা সে ব্যাপারে কৌতূহল জাগা স্বাভাবিক।

তবে এই লেখার উদ্দেশ্য সে কৌতূহল মেটানো নয়। বরং রদ্রির হাতে ব্যালন ডি’অর কি আসলেই শোভা পায় বা রদ্রি কি আসলেই যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে এই পুরস্কার জিতেছেন-এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতেই এই লেখা। এই আলচনায় যাওয়ার আগে একটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো, সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারদের হাতে ব্যালন ডি’অর সচরাচর ওঠে না। তারা রক্ষণের সামনে বা মাঝমাঠে বসে খেলার নাটাই নিয়ন্ত্রণ করলেও যেহেতু গোল করেন কম, তাই তাদের নিয়ে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীরা একটু কমই মাথা ঘামান। তাদের অবদানও সেজন্য অনেক সময় চোখের  আড়ালেই থেকে যায়।

তবে রদ্রির সে ‘নীরব নায়ক’ সত্তা ফুটবল বোদ্ধাদের চোখ এড়ায়নি। বলা ভালো, রদ্রি নিজেই তার নৈপুণ্যের মাধ্যমে বোদ্ধাদের নজর কেড়েছেন। ২০২৩-২৪ মৌসুমে সিটিজেনদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। পেপ গার্দিওলার দলে যেটা মোটেও কম কথা নয়। বল দখলে রেখে খেলায় ফুটবলারদের অনেক এনার্জি এবং ম্যাচ সচেতনতার প্রয়োজন হয়। ম্যাচের পর ম্যাচ সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে এই দুটি জিনিস ধরে রেখে খেলে যাওয়া একেবারেই সহজ কাজ নয়।

আর শুধুই কি খেলে যাওয়া? মোটেই নয়। বলা চলে, ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে গত মৌসুমে সবচেয়ে ‘অ্যাক্টিভ’ ফুটবলার ছিলেন রদ্রি। সবমিলিয়ে ২২ গোলে অবদান রেখেছেন, এর মধ্যে ৯টি নিজে করেছেন আর ১৩টি করিয়েছেন সতীর্থদের দিয়ে।

সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে রদ্রির ৯ গোল মোটেই কম নয়। তবু যদি কারও গোলসংখ্যা নিয়ে খচখচানি থাকে, তাহলে বলতে হয় শেফিল্ড ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৮৮ মিনিটে জয়সূচক গোল, চেলসির বিপক্ষে দুই লেগেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল বা ওয়েস্ট হ্যামের সঙ্গে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ৩-১ গোলের জয়ে তার পা থেকে আসা তৃতীয় গোলের মাহাত্ম্য ফুটবল বোদ্ধাদের ভালোই জানা।

এছাড়া ম্যান সিটির পাসিং ফুটবলভিত্তিক খেলায় প্রতি ৯০ মিনিটে গড়ে ১১১.২টি পাস খেলেছেন রদ্রি, এর মধ্যে ৯২.৩ শতাংশই ছিল সফল পাস। পরিসংখ্যান বলছে, গত মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে প্রতি ৯০ মিনিটে তার চেয়ে বেশি পাস খেলেননি কেউ।

গত মৌসুমে সিটিজেনদের মধ্যমাঠে এককথায়’ অতিমানবীয়’ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন রদ্রি। প্রায় এক দশকের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগে গত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সফল পাস (৩৩৫৯) এবং প্রতিপক্ষের অর্ধে সর্বোচ্চ সফল পাস (২১২২) খেলেছেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

প্রিমিয়ার লিগে গত মৌসুমে ম্যাচপ্রতি ১০০-র বেশি সফল পাস খেলা একমাত্র ফুটবলার ছিলেন রদ্রি (১০৩)। আর তিনি যে তারকায় ঠাঁসা ম্যান সিটির সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা সেটা প্রমাণ করে ম্যাচপ্রতি তার ১২৬ টাচ। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি ৯০ মিনিটে নিজের সতীর্থদের চেয়ে গড়ে ২৬ বার তার কাছে বল বেশি এসেছে। এছাড়া ওপেন প্লে থেকে আক্রমণে ওঠার সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার পা ঘুরে এগিয়েছে বল। প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমে অন্তত ২ হাজার মিনিট খেলা ফুটবলারদের মধ্যে ম্যাচপ্রতি সর্বোচ্চ ৮.৪টি আক্রমণে যুক্ত থেকেছেন তিনি।

মধ্যমাঠে রদ্রির এমন দাপুটে পারফরম্যান্সের ফল? গত মৌসুমে রদ্রি যে ৫০ ম্যাচ খেলেছেন তার মধ্যে সিটি মাত্র একটি ম্যাচে হেরেছে, জয় পেয়েছে ৩৮ ও ড্র করেছে ১১ ম্যাচ। আর যে ৯টি ম্যাচে রদ্রি মাঠে নামেননি, তার মধ্যে চারটি ম্যাচেই হারের মুখ দেখেছে সিটিজেনরা। ২০১৯ সালে সিটির জার্সিতে অভিষেকের পর থেকে রদ্রিকে ছাড়া ২৫ ম্যাচ খেলে সাতটিতে হেরেছে পেপ গার্দিওলার দল। পরিসংখ্যান বলছে, এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারকে ছাড়া খেলতে নামলেই সিটির জয়ের হার ১০ ভাগত কমে যায়। ম্যাচপ্রতি সম্ভাব্য পয়েন্ট ২.৪ থেকে নেমে আসে ২-এ।

টানা প্রিমিয়ার লিগ জেতা সিটির জার্সিতে এমন ধারাবাহিক হওয়ার পুরস্কার অবশেষে পেলেন দারুণ ‘অধ্যবসায়ী’ রদ্রি। সিটির হয়ে অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছিল ইউরো-সাফল্য। অপেক্ষাকৃত তরুণ স্পেন দলের মধ্যমাঠে আস্থা জুগিয়েছেন ২৮ বছর বয়সি এই মিডফিল্ডার। লামিন ইয়ামালদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ফ্রি-লাইসেন্স দিয়ে মধ্যমাঠ নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। আর তাতেই প্রায় এক যুগ পর ফের ইউরোপসেরার খেতাব জিতেছে স্প্যানিশরা।

তাই ক্লাব আর জাতীয় দলের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা রদ্রির যে আসলেই একটা ব্যালন ডি’অর প্রাপ্য ছিল, তা বলাই বাহুল্য। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরও ভিনিসিয়ুসের ব্যালন ডি’অর না জেতা তার ভক্তদের দুঃখ দিয়েছে নিশ্চয়ই। কিন্তু তাই বলে রদ্রির অর্জন আর অধ্যবসায়কে মোটেও খাটো করে দেখা উচিৎ হবে না।

তথ্যসূত্র: অপটা অ্যানালিস্ট

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৪,/বিকাল ৫:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit