আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন শুল্ক ঝড়ে বিশ্ব বাণিজ্য যখন টালমাটাল, তখন দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরশত্রু ভারত-পাকিস্তানে বিপরীতমুখী অবস্থা। নরেন্দ্র মোদিকে বারবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু উল্লেখ করে ভারতের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। আর পাকিস্তানের শুল্ক কমানোর পাশাপাশি বিনিয়োগ বাড়ানোর ইঙ্গিত নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে। এতে সীমান্তের একপাশে যখন উচ্ছ্বাস-আনন্দ, তখন অন্যপাশে ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত।
নতুন মার্কিন শুল্কনীতিতে ভারতের ওপর ট্যারিফ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫ শতাংশ, আর পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা কমিয়ে আনা হয়েছে ১৯ শতাংশে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ী মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া। ভারতের কৌশলগত মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে পোশাক শিল্প ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যেন একটু বেশি। দরকষাকষির মাধ্যমে শুল্ক কমবে এমন আশা ছিল তাদের।
এক ভারতীয় ব্যবসায়ী বলেন, আমরা আশা করেছিলাম সর্বোচ্চ ২০ শতাংশের মতো শুল্কারোপ হবে। এতে বাংলাদেশ আর চীনের মতো বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমরা বাড়তি সুবিধা পেতাম; সেইসাথে ভিয়েতনামের সমান অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হতো।
অলঙ্কার ব্যবসায়ীদের ওপরও আঘাত হেনেছে মার্কিন শুল্ক ঝড়। এরই মধ্যে কমে গেছে বিক্রি। জীবিকা হারানোর শঙ্কায় অনেকে। এক শ্রমিক বলেন, আমি সোনা আর রূপার কাজ করি। শ্রমিকদের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন, কাজ নেই বললেই চলে। শিল্পীরা মাসে ১৫-২০ দিন কাজ না করে বসে থাকেন। কমপক্ষে ৭০ শতাংশ দোকানেই একই অবস্থা।
অন্যদিকে, মার্কিন শুল্কের খড়গ থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছে পাকিস্তান। সেইসাথে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুখবরও পেয়েছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে দেশটির জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি ও খনিজখাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।
পাকিস্তানের এক ব্যবসায়ীর মতে, দেশটির অর্থনীতির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ এ চুক্তি। এটি কেবল একটি বাণিজ্য চুক্তি নয়, এর ফলে দু’ দেশের কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিনিয়োগের সুযোগও বাড়বে। এ চুক্তির ফলে আমদানির চেয়ে রফতানি বেশি হবে। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের জন্য এই বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্ক হ্রাস ইতিবাচক। তবে শুল্ক বৃদ্ধির চাপ মোকাবিলায় ভারতকে অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
কিউএনবি/আয়শা/২ আগস্ট ২০২৫/রাত ১০:২২