মাইদুল ইসলাম মুকুল ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘুষ দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে ইউএনও কার্যালয় থেকে দৌড়ে পালালেন এক মাদ্রাসা সুপার। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। দৌড়ে পলায়ন করা ওই ব্যক্তির নাম মো. সাইদুর রহমান। তিনি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার বলে জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিস ও সরেজমিন তদন্ত সূত্রে জানাযায়, কামাত আঙ্গারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ প্রদান, নিয়োগ বাণিজ্য, জাল-জালিয়াতি, অকারণে স্টাফদের বেতন বন্ধ করা, সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ, মাদ্রাসার গাছ কেটে নিজের কাজে লাগানোসহ বেশ কিছু মারাত্মক অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্তাধীন রয়েছে। এসব অভিযোগে ইতিমধ্যে সুপারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভূক্তভোগীরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এসব অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করার কথা রয়েছে। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কামাত আঙ্গারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইউএনওর কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে তিনি ইউএনওকে এক বান্ডিল টাকা ঘুষ দেয়ার চেষ্টা করেন। এঘটনায় ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে সুপারকে আটক করতে অফিস স্টাফদের তার কক্ষে ডাকেন।
অফিস স্টাফরা কক্ষে পৌছার আগেই সুপার টাকা নিয়ে দৌড়ে ইউএনওর কক্ষ ত্যাগ করে পলায়ন করেন। ঘটনার সত্যতা জানতে কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসার অভিযুক্ত সুপার মো. সাইদুর রহমানের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ইউএনও মাদ্রাসার সভাপতি। শিক্ষকদের বন্ধ হওয়া বেতন ভাতা ছাড় দেয়ার অনুরোধ করতে আমি তার অফিসে গিয়েছিলাম। বর্তমানে আমি ছাত্র- শিক্ষকদের বাঁধার মুখে প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে পারছি না। এ অবস্থায় আমি থানায় জিডি করার অনুমতি চাইলে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হন।’ঘুষ প্রদান চেষ্টার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. গোলাম ফেরদৌস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ হয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। তিনি অফিসে এসে আমাকে টাকা দিতে চেয়েছেন। তার এমন ধৃষ্টতা মেনে নেয়া যায় না। সুপারের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। দ্রুত তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভূরুঙ্গামারী থানর ওসি রুহুল আমিন বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত রাতে কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদরাসার সুপারের নামে জিডি করেছেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/বিকাল ৪:২৫