শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন

শরণার্থী শিবির থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং ইসরাইলের ত্রাস

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪
  • ১২৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইসরাইলের কাপুরুষোচিত গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। বুধবার সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরাইলি হামলায় নিজের বাসভবনে দেহরক্ষীসহ নিহত হন। 

গত ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু পর এ নিয়ে হামাসের দুজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ইসরাইলি গুপ্ত হত্যার স্বীকার হলেন। নিহত দুই হামাস নেতা হলেন- ইসমাইল হানিয়া এবং সালেহ আল-আরুরি, যিনি লেবাননে অবস্থান করছিলেন। ইসমাইল হানিয়া ১৯৬২ সালে গাজা উপত্যকার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। ইসরাইল অধিকৃত আশকেলন শহর থেকে তার মা-বাবা আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। তিনি ১৯৮৭ সালে গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক সম্পন্ন করেন। 

ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রথম ও দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় হানিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এজন্য তাকে কয়েকবার ইসরাইলের কারাগারে যেতে হয়। ১৯৯৭ সালে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ইসমাইল হানিয়া হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমদ ইয়াসিনের কার্যালয়ের প্রধান নিযুক্ত হন। শেখ ইয়াসিনের সঙ্গে ইসমাইল হানিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ইসরাইলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কয়েক বছরের রাজনৈতিক তৎপরতার পর, হানিয়া ওই বছরই হামাসের অন্যতম শীর্ষনেতা হিসেবে নিযুক্ত হন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি এক পর্যায়ে হামাসের প্রধান নির্বাচিত হন। 

হানিয়া দখলদার বাহিনীর বহু গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন। ২০০৩ সালে তাকে বোমা হামলার মাধ্যমে হত্যা করার চেষ্টা করে দখলদার ইসরাইল। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনে হামাস রাজনৈতিক দল হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়। বিজয়ের মধ্য দিয়ে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু ফিলিস্তিনি স্বশাসন (ফাতাহ) কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ২০০৭ সালে হামাসের সরকার ভেঙে দেন। 

২০০৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ইসমাইল হানিয়া গাজা উপত্যকায় হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ৬ মে তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন এবং হামাস নেতা খালেদ মেশালের জায়গায় দায়িত্ব পালন শুরু করেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামাসসহ অন্যান্য প্রতিরোধ যোদ্ধারা অভিযান চালানোর পর, হানিয়া তার রাজনৈতিক দপ্তরকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গ্রুপগুলোকে রক্ষার কাজে বিশেষভাবে ব্যবহার করেন। 

ফিলিস্তিনিদের ওই অভিযানের পর ইসমাইল হানিয়া বলেছিলেন, ‘আমরা বহুবার তোমাদের সতর্ক করেছি যে, ফিলিস্তিনি জনগণ ৭৫ বছর ধরে শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে। অথচ তোমরা আমাদের জনগণের অধিকারকে অস্বীকার করে চলেছ।’গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসমাইল হানিয়ার পরিবারের ১৪ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে তার তিন ছেলে ও ৮০ বছর বয়সি বোনও রয়েছেন। গত নভেম্বরে তার দুই নাতি ও নাতনি ইসরাইলি হামলায় নিহত হন। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই ইসমাইল হানিয়া নিজেও বর্বর ইসরাইলি বাহিনীর গুপ্ত হত্যার শিকার হলেন এবং এর মধ্যদিয়ে শেষ হলো তার বর্ণাঢ্য সংগ্রামী জীবন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩১ জুলাই ২০২৪,/রাত ১১:২১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit