জালাল আহমদ, আদালত প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন,”শুধুমাত্র আইন তৈরি করে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়,দুর্নীতি দমনে জনগণের মধ্যে জনসচেতনতা দরকার। পারিবারিক পর্যায় থেকেই দুর্নীতি দমন শুরু করতে হবে”।আাজ ২৫ মে শনিবার, সকাল দুপুরে Human Rights And Peace For Bangladesh (HRPB) এর উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দুর্নীতি দমনে নাগরিকদের ভুমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (HRPB) এর প্রেসিডেন্ট সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব , সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামিম হায়দার পাটোয়ারী এবং এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন HRPB সেক্রেটারি এডভোকেট মোঃ ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট এডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়া।প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ আরো বলেন ,”দুর্নীতি রেখে উন্নয়ন হলেও তা কখনও টেকসই হবে না। নাগরিকরা যদি দায়িত্ব পালনে সচেতন হন এবং পারিবারিক পর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখেন, তবে ফলাফল আশাপ্রদ হবে”।তিনি বলেন,”অধিকাংশ অভিযোগে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য থাকে না, যার কারণে কোন প্রমান ছাড়া মামলা দায়ের সম্ভব হয়না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন হয় ,তবে দুদকে অভিযোগই আসবে না। নাগরিকরা সচেতন না হলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে না। দুর্নীতি দমনে দুদক ইতিমধ্যেই স্কুল ছাত্রদের মাঝে প্রচারণা, স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সততা ষ্টোর স্থাপন করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করছে”।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন রশিদ বলেন, “বর্তমানে কতিপয় নতুন ব্যবসায়ী যারা আগে কখনও ব্যবসা করেননি, তারা প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছেন।মানি লন্ডারিং এর সাথে ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী, আমলা, রাজনীতিবিদ অনেকেই জড়িত”। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন,”গবেষকরা শত বছর পুর্বেই বলেছেন যে, দুর্নীতি হল আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য। স্বাধীনতার তিন বছর পরেই বঙ্গবন্ধু দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে উপলব্ধি করে জনসভায় তার বক্তৃতায় বলেছেন,”চোররা সব খেয়ে ফেলছে”।প্রাক্তন সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামিম হায়দার পাটোয়ারী বলেন,”দুর্নীতির ছোট ঘটনা তদন্ত না করে বড় ঘটনা তদন্ত করা প্রয়োজন।ব্যাংক লোন এর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে কতিপয় প্রভাবশালীই সবচেয়ে বড় দর্নীতির ঘটনা সৃষ্টি করেছেন”।এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন মামুন বলেন,” কতিপয় ক্ষেত্রে মিডিয়া দুর্নীতি প্রতিরোধে যথাযথ ভুমিকা পালন করতে পারছে না। কারণ ঢাল তলোয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা বিদ্যমান। প্রভাবশালীদের প্রভাবের কারণে সাংবাদিকরা অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্টি এ ভয়ভীতির সন্মুখীন হচ্ছেন”।অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে HRPB এর প্রেসিডেন্ট সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, “দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণে সফল হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ রাঘব-বোয়ালরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধরাছোয়ার বাইরে থাকেন”।তিনি বলেন,”ক্ষমতাসীনরা যদিও দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স এর কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়।ক্ষমতার আশেপাশে থেকে অনেকেই দুর্নীতি করলেও তা আমলে নেয়া হয় না”। তিনি দুর্নীতি দমনে সংগঠনের পক্ষ হতে ১৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন।
কিউএনবি/অনিমা/২৫ মে ২০২৪,/রাত ৮:৫৪