মোঃ সালাহউদ্দিন আহমেদ : তাদের কাছে অতি অল্প দামে মিলতো ক্রিম-পাউডার, চুলের ফিতা, ক্লিপ, চুলবাঁধার অলংকৃত কাঁটা, রাবার ব্যান্ড, সেফটিপিন, চুড়ি, পুঁতিরমালা, ইমিটেশনের গয়না, জেড পাথর ও আর্টিফিশিয়াল মুক্তার মালা। চাই কী সাজগোজ করার উপটান, আই লাইনার, খোঁপার কাঁটা, শীতের দাওয়াই ভ্যাসেলিন, চুলে মাখার সুগন্ধী তেল, নানা ব্র্যান্ডের দেশি-বিদেশি গোসল করার সুগন্ধী গ্লিসারিন সাবান, নারীদের পরিধেয় কাপড় অলংকৃত করতে জরির লেইসসহ আরো কতো কি।
এসব লেইস ফিতা ওয়ালারা কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন মালামালের বিশাল বোঝা, হাতে কাচ বাঁধানো একটি ভ্রাম্যমাণ শো-কেস নিয়ে সেই আগেকার মতো পাড়ায়-মহল্লায়, বাড়ির আঙিনায় এসে হাঁক দিতে দেখা যায় না – ‘লেইস ফিতা লেইস’ ‘এই লেইস ফিতা’। নারী, গৃহবধূরা এসে ভিড় করতেন ঘরের দুয়ারে, লেইস ফিতা ওয়ালার কাছ থেকে দরদাম করে কিনে নিতেন যার যার প্রয়োজনীয় সামগ্রী। বধূ-কন্যা-মাতাদের জটলায় ঘরের দুয়ারে যেন কেনাকাটার উৎসব শুরু হয়ে যেত। এই দৃশ্যটি নরসিংদীর প্রত্যেকটি গ্রামের সাধারণ মানুষের বসতবাড়ির দুয়ারে-আঙিনায় দৃশ্যমান ছিলো ।
গৃহবধূ শারমিন জানান ছোটবেলায় দেখতাম সপ্তাহে দুইদিন লেইসফিতা ফেরিওয়ালারা সকাল ৮ টা থেকে ৯ টার সময় লেইসফিতা লাগবে নাকি বলে হাঁক দিতেন মা-চাচিরা তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে রাখতেন সেই সাথে আমাদের আবদারও রাখতে চুলের ফিতা নেলপলিশ ক্লিপসহ অনেক কিছু কিনে দিতেন সেই দিনটাকে আমরা অনেক মনে করি।
আনৈবাড়ি গ্রামের একসময়ের সবার পরিচিত মুখ ষাটোর্ধ ফেরিওয়ালা নজুমুদ্দিন বলেন, আশপাশের গ্রামসহ দশ গ্রামে ফেরি করে বেড়াতাম আমরা যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় কসমেটিকসসহ আমাদের ফেরি করে বিক্রি করা পণ্যগুলো বাজারেই পাওয়া যায় এখনকার মেয়ে বউরা আমাদের ফেরিকরা পণ্যগুলো কিনতে চায়না বলেই সেই আগেকার লেইসফিতা ওয়ালাদেরকে এখন আর দেখা যায় না।
কিউএনবি/আয়শা/২৬ এপ্রিল ২০২৪,/দুপুর ২:৫২