শান্তা ইসলাম নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের ধলিমাটি সরকারি জলমহাল দখল করে মাছ ধরার অভিযোগ ওঠেছে উপজেলা আওয়মী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবান উল্লাহসহ স্থানীয় কিছু লোকের ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের ও এলাকার প্রভাবশালীদের সাথে নিয়ে অবৈধভাবে চলতি বছর আহরন করছেন। অদৃশ্য কারণে উপজেলা প্রশাসন নীরব। ওই নেতার দাবি সরকার টাকা পাচ্ছে ঠিকি মাঝখানে ইজারায় অংশ নিয়ে তাদের টাকা গচ্ছা যাচ্ছে। তবে স্থানীয়দের দাবি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বল্লী গ্রামের প্রভাবশালী জুয়েল গ্রুপ ও জসিম গ্রুপ দখলে রেখে ধলিমাটি জলমহালটি ফিশিং করছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসন খালিয়াজুরীর ধলিমাটি জলমহালের ইজারার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তখন উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের বল্লী গ্রামের দুইটি সমবায়ের রেজিঃকৃত সমিতি দরপত্র ক্রয় করে। এদের একটি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবান উল্লাহর তত্বাবধানে জিলিক মৎসজীবী নামে দরপত্র ক্রয় করে। অন্যটি জসিম মিয়ার গ্রুপ মদীনা মৎসজীবী সমিতির নামে দরপত্র ক্রয় করে।
জিলিক মৎসজীবী সমিতি ভ্যাট ইনকামটেক্স সহ ৮৪ লাখ টাকা ও মদীনা মৎসজীবী সমিতি ভ্যাট ইনকামটেক্স সহ ৬৬ লাখ টাকা উন্নয়ন প্রকল্প করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে দরপত্র অনলাইনে জমা দেয়। জিলিকের দাখিলকৃত দরপত্র ভূমি মন্ত্রণালয়ে জমা হয়নি। ফলে মদীনা মৎসজীবী সমিতির নামেই মন্ত্রণালয় থেকে ইজারার চিঠি প্রেরণ করা হয়। কম মূল্যে প্রতিপক্ষ ইজারা পাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে জিলিক সমিতির লোকজন ২০২৩ সালে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ ১২ জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে।
এটি বিচারাধীন থাকায় কেউ আইনগতভাবে মাছ আহরণ করতে পারে না। কিন্তু সব কিছু উপেক্ষা করে ওই দুই সমিতির লোকজন মিলে ধলিমাটি জলমহালটি ভোগ দখল করে মাছ আহরণ করছে। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ধলিমাটি জলমহাল এলাকায় স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, জুয়েল চৌধুরী, সাবান উল্লাহ ও জসিম মিয়ার গ্রুপ এক হয়ে ধলিমাটি ফিশারি দখল করে ফিশিং করছে। কাউকে ফিশারির কাছেও যাইতে দেয় না। তারা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। এলাকার মানুষও মাছ ধরতে পারে না।
প্রশাসনকে জানানোর পরেও তারা কোনদিন ফিশারিতে আসেনি। আবার সরকারও খাজনার টাকা পাচ্ছে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা ফিশিং করছে। জসিম মিয়া জানান, ধলিমাটি ফিশারি তারা ইজারা পেয়েছিলেন। জিলিক মৎসজীবী সমিতির লোকজন হাইকোর্টে মামলা করে আটকে দিয়েছে। এতে করে তারাা ক্ষতি মধ্যে পড়েছেন। জিলিক সমিতির লোকজনের সাথে মিলে অবৈধভাবে ধলিমাটি জলমহালটি ফিশিংয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ধলিমাটি জলমহালে মাছ আহরণের কথা অস্বীকার করে খালিয়াজুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মো. জুয়েল চৌধুরী বলেন, ওই জলাশয়ে মাছ ধরার ব্যাপারে আমার কোন হাত নেই। সাবান উল্লাহ ও জসিমের মধ্যে ইজারা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। জলাশয়ে কারা কিভাবে মাছ ধরছে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে প্রশাসনের লোকজন ভাল বলতে পারবে।
চাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অবৈধভাবে ধলিমাটি জলাশয়ে মাছ ধরার ব্যাপারে ইউএনও এবং ডিসি সাহেবকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম মিয়া বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। ধলিমাটি জলমহালে ইজারা ও মাছ ধরার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪/সন্ধ্যা ৬:৪৬