বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : কেন্দ্রের নমনীয়তার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ লড়তে পারেন। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য মনোনয়ন বোর্ডের সভার পর প্রার্থী ঘোষণা হলে অনেকেই স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দু’একজন প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলেও বাকিরা ভেতরে ভেতরে তাদের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে জেলার ছয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই পুরোনোতে আস্থা রেখেছে আওয়ামী লীগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুলকে বাদ দিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। জাতীয় পার্টি কিংবা অন্য দলের সঙ্গে জোটগত নির্বাচন হলে এক থেকে দু’টি আসন ছাড়তে হতে পারে আওয়ামী লীগকে। আওয়ামী লীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে উপ-নির্বাচনে সদ্য জয়ী শাহজাহান আলম সাজু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে আনিসুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। প্রায় ৭০ জনের মতো নেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দাবি করেছিলেন।
এদিকে নির্বাচনে অংশ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ফিরোজুর রহমান ওলিও। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে গত মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন ওলিও। এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী তিনি। তিনি পাঁচবার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ আসন থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকেও আওয়ামী লীগের এধাধিক প্রার্থী মাঠে থাকার আভাস পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে বিএনপি নেতা এ কে একরামুজ্জামান যদি মাঠে থাকেন তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। একরামুজ্জামান কি করেন সেই দিকেও তাকিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী।উপ-নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে সামান্য ভোটে হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাঈনুদ্দিন মঈন এবারও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মাঈনুদ্দিন মঈন জানান, জনগণ তো চাচ্ছে।
আমার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য নিয়ম অনুসারে যে এক পার্সেন্ট ভোটারের স্বাক্ষর লাগে সেটি নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন তার সমর্থকরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহ আলম ও সাবেক যুবলীগ নেতা শ্যামল কুমার রায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মো. শাহ আলম সাংবাদিকদেরকে জানান, দলীয় সভানেত্রী বলে দেওয়ার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন। শ্যামল কুমার রায় জানান, কর্মী-সমর্থকসহ শুভাকাংখীদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। মনোনয়ন বঞ্চিত এবাদুল করিম বুলবুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন কিনা সে বিষয়টি আলোচনা আছে। তবে মনোনয়নবঞ্চিত একাধিক নেতা ইতিমধ্যেই ভেতরে ভেতরে দলের প্রার্থী ফয়জুর রহমানকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনেও আওয়ামী লীগের একাধিক মনোয়নবঞ্চিত নেতা ভোটের মাঠে থাকার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তারা কি সিদ্ধান্ত নেন সেটিই দেখার বিষয়। হেভিওয়েট কোনো প্রার্থী না থাকলেও ডামি হিসেবে একাধিক প্রার্থী থাকার গুঞ্জন রয়েছে।
কিউএনবি/অনিমা/২৮ নভেম্বর ২০২৩/সকাল ১০:৪৬