সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
“লালমনিরহাট রাজনীতিতে ‘ভূমিকম্প” দুর্গাপুরে ৪ জুলাই যোদ্ধার স্মরণেফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ফুলবাড়ীতে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে মিথ্যা মামলা দিয়ে একটি পরিবারকে হয়রানি করছে লঘুচাপের আভাস, হতে পারে নিম্নচাপ ডোমারে বোড়াগাড়ী ইউনিয়ন কৃষকদলের গণ সংযোগ ও লিফলেট বিতরণ ডোমারে ওসি’র অপসারণের দাবীতে সাংবাদিকদের কলম বিরতি যুবদলের আহ্বায়কের নেতৃত্বে পুলিশের গাড়িতেই যুবককে পেটালেন নেতাকর্মিরা রাঙামাটিতে মারমা নারীকে গণধর্ষণে জড়িতদের বিচারের দাবিতে পিসিসিপি’র মানববন্ধন পাবনায় জমে উঠেছে সপ্তাহব্যাপী পাবনা উৎসব ও উদ্যোক্তা মেলা সল্ট ও ব্রুকের তাণ্ডবে কিউইদের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সহজ জয়

রাসুল (সা.)-এর শাসনামলে রাজস্ব আয়ের উৎস

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৮৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরতের পর রাষ্ট্রের সংস্কারের কাজে লেগে পড়েন এবং একটি শান্তিময় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেন। সুন্দর, শান্তিময়, শৃঙ্খলাময় নীতিমালায় সমৃদ্ধ ছিল এ ইসলামি রাষ্ট্র । রাসুল (সা.) নব-প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রকে সুদৃঢ়ীকরণের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থার প্রচলন করেন। তাঁর শাসনামলে রাজস্ব আয়ের বিভিন্ন উৎস ছিল। এই উৎসসমূহের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পদে জনসাধারণের অধিকার ও ভোগ করার সুযোগ নিশ্চিত করেন। রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে এবং দেশের প্রতিরক্ষাকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন। উল্লেখিত খাতসমূহ থেকে উপার্জনকৃত অর্থ গরিব জনগণ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে ব্যয় করতেন। রাষ্ট্রের জন্য বায়তুলমাল প্রতিষ্ঠা করেন এবং কৃষি ও ব্যবসার উন্নতি নিশ্চিত করেন। সেসব উৎস থেকে প্রধান পাঁচটি উৎস নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো- ১. জাকাত ২.খারাজ ৩. জিজিয়া ৪. গনিমত ৫. আল-ফে

এক. জাকাত

ইসলামী রাজস্ব ব্যবস্থায় ইসলামী বিধান অনুসারে সচ্ছল মুসলমানদের অবশ্যই প্রদেয় কর হচ্ছে জাকাত। নামাজের পরেই জাকাতের স্থান। জাকাত অর্থ পবিত্রকরণ এবং প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমকে তার স্থাবর সম্পত্তির কিয়দংশ রাজকোষ বা বায়তুল-মালে প্রদান করতে হতো। সম্পদশালী মুসলমানদের ওপর জাকাত প্রযোজ্য। বাৎসরিক খরচ বাদে এবং ঋণ বাদে বহনযোগ্য মাল নির্দিষ্ট পরিমাণে পৌঁছালে তার ওপর দেয় কর জাকাত শরয়ী নীতি অনুযায়ী জাকাত বণ্টিত হতো। জাকাত ও সাদকা বাবদ যে অর্থ বা মাল (সংগৃহীত হতো রাসুল (সাঃ)-এর নির্দেশে তার হিসাব কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করতেন জোবায়ের ইবনে আল আওয়াম ও যুহাহির ইবনে আল সালাত। পরবর্তীতে মুহাম্মদ (সাঃ) প্রত্যেক অঞ্চলের জন্য স্বতন্ত্র আদায়কারী নিযুক্ত করেন। এই আদায়কারী সাহাবিদের সাময়িকভাবে নিযুক্ত করা হয়। প্রয়োজনে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হতো।

জাকাত প্রধানত সোনা, রুপা, খাদ্য-শস্য, গৃহপালিত জন্তু ও বাণিজ্য দ্রব্যের ওপর অর্পিত হতো। নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনা-রুপা অথবা সঞ্চিত অর্থের ঊর্ধ্বে সম্পদ থাকলে জাকাত প্রদান বাধ্যতামূলক। ২০০ দিরহামের ঊর্ধ্বে জাকাত প্রদান অপরিহার্য। সেই ক্ষেত্রে শতকরা ২.৫ ভাগ জাকাত দিতে হয়। জাকাত হিসেবে গৃহীত কর বিভিন্নভাবে ব্যয় করা হয়; যেমন- দুস্থ ও অক্ষম ব্যক্তিদের সাহায্যে অভাবগ্রস্তদের অভাব দূরীকরণ, কর আদায়কারীদের বেতন, দাস ও বন্দীদের মুক্তিপণ, ঋণগ্রস্তদের সাহায্যে, জিহাদ ও আল্লাহর পথের পথিকদের সাহায্য। জাকাত হিসেবে প্রদত্ত অর্থকে নিসাব বলে। আয়করের সঙ্গে পার্থক্য এই যে, এটি বাৎসরিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল নয়।

দুই. খারাজ

খারাজ বা ভূমি রাজস্ব। অমুসলিম ভূ-স্বামীদের ওপর রাসুলে (সা.) এই কর ধার্য করেন। রোমীয় সাম্রাজ্য (ট্রাইবিউটান সোলি) এবং পারস্যের ‘খাবাগ’ হতে খারাজের উৎপত্তি। রাসুল (সা.) খাইবার যুদ্ধের পর এই ভূমি কর প্রচলন করেন। বিশেষ করে বিত্তশালী ইহুদি সম্প্রদায় ভূমির উৎপন্ন দ্রব্যের অর্ধেক সরকারকে প্রদান করত। ‘খারাজ’’ হতে গৃহীত রাজস্ব সেনাবাহিনীদের বেতনের জন্য খরচ করা হতো।

তিন. জিজিয়া

অমুসলমানদের ওপর আরোপিত কর ‘জিজিয়া’ নামে পরিচিত। কোরানের নির্দেশ অনুযায়ী রাসুল (সা.) অমুসলিমদের ওপর এই কর ধার্য করেন। এর পরিবর্তে তারা ইসলামী রাষ্ট্রের জিম্মিতে পরিণত হয় এবং রাষ্ট্রের নিকট হতে জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করত; উপরন্তু, তাদেরকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হত না। সাধারণভাবে সকল সক্ষম অমুসলমানকে মাথাপিছু এক দিনার ‘জিজিয়া’ দিতে হত। অবশ্য অপ্রকৃতিস্থ, শিশু, অসুস্থ, দরিদ্র ধর্মযাজকদের ‘জিজিয়া’ হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। জিজিয়ার অর্থ মূলত সেনাবাহিনীর সাজসজ্জা, রসদ ও বেতন বাবদ খরচ করা হত।

চার. গনিমত

যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু পক্ষের নিকট হতে প্রাপ্ত মালকে গানীমাত বলে। ‘গনিমত’ বা ‘খুমস’ অথবা এক-পঞ্চমাংশ কর যুদ্ধ লব্ধ দ্রব্য-সামগ্রী হতে গ্রহণ করা হত। গনিমত লুণ্ঠিত দ্রব্যাদিকে বোঝায় এবং বিজিতরা যুদ্ধক্ষেত্র হতে যে সমস্ত সম্পদ আহরণ করত তার এক-পঞ্চমাংশ বায়তুল মালে প্রদান করে অবশিষ্ট চার-পঞ্চমাংশ সৈনিকেরা নিজেরা বণ্টন করে নিতেন। এখানেও শ্রেণিবিভাগ ছিল; যেমন- অশ্বারোহী পদাতিক অপেক্ষা দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ পেত। এক-পঞ্চমাংশ সম্পদের মধ্যে নবী সা. ও তাঁর পরিবার বর্গ ও অনাথদের ভরণপোষণের জন্য ব্যয় করা হত। এ ছাড়া মুসাফির ও দুস্থরাও কিয়দংশ পেত।

৫. আল-ফে :

মুসলিম রাষ্ট্রের আয়ের পঞ্চম উৎস ছিল আল-ফে। বিজিত দেশের আবাদী ভূমির কতকাংশ সরাসরি রাষ্ট্রের দখলে নেয়া হতো। এই ভূমিকে রাষ্ট্রীয় ভূ-সম্পত্তি বলা হতো। এই ভূমি হতে যা আয় হতো তা গরীব-দুঃখীদের মাঝে ও জনহিতকর কাজে ব্যয় করা হতো। বিজিত অঞ্চলে মুসলিম ভূ- স্বামীদের ভূমিকর ‘আল-ফে’ নামে পরিচিত। এই ভূমি রাজস্ব নবিজির আত্মীয়-স্বজন, দুস্থ পরিবার ও মুসাফিরদের মধ্যে বিতরণ করা হত। খারাজ ও আল-ফে-এর মধ্যে প্রভেদ হচ্ছে এই যে, ভূমিকর হওয়া সত্ত্বেও প্রথমটি অমুসলিম এবং পরেরটি মুসলিম ভূস্বামীগণ প্রদান করতেন।

লেখক: শিক্ষক ও অনুবাদক

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৪:৪৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit