জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন ১০জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়াশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েক ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ ছিলেন ইউএনও নুরুল ইসলাম। ফলশ্রুতিতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ ছিল।
মঙ্গলবার(১২ সেপ্টেম্বর) শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিলেন পাটগ্রাম ইউএনও নুরুল ইসলাম। স্থানীয় ও শ্রমিকরা জানান, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের পন্য লোড আনলোডে শ্রমিকদের পাওনা টাকা শ্রমিক সর্দাররা পকেটস্থ করেছেন বলে দীর্ঘ দিন ধরে সেই পাওনা আদায়ে আন্দোলন করে আসছেন সাধারন শ্রমিকরা। বেশ কয়েক দফায় মানববন্ধন আর অবরোধ করেন শ্রমিকরা। প্রতিবারই আশ্বাস দেয়া হলেও সাধারন শ্রমিকদের ঘাম ঝড়ানো মজুরীর বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ফলে ভুসে উঠেন সাধারন শ্রমিকরা।
এর আগে সোমবার(১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পন্য লোড আনলোড বন্ধ করেন শ্রমিকরা। ফলে বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ী আর ভারতীয় ট্রাক চালকরা। পাওয়া আদায় ও শ্রমিক সংগঠনের নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে মঙ্গলবার (১২সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মত পন্য লোড আনলোড বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যান সাধারন শ্রমিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাধারন শ্রমিকদের উপর হামলা চালায় সর্দার গ্রুপের লোকজন। পরে তা লাঠিসোটা আর দেশি অস্ত্রের সংঘর্ষে রুপ নেয়। চলে দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। দুই গ্রুপেই পাথর ছুড়ে মারে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এক পর্যেয় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুরেট ছুড়ে বলে দাবি স্থানীয়দের। এ সময় পাথরের আঘাতে সাংবাদিকসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রথমে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে আশংকা জনক অবস্থায় তাদের ৩জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম চলে যান সেখানে। তাকে উদ্দিন সংঘ নিরোধ অফিসে দুপুর ১২টা থেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন সাধারন শ্রমিকরা। বিকেল ৪-৪৭ মিনিট পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিলেন ইউএনও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ লাঠি চার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে বলেও জানা যায়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইউএনও এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার(ভুমি) ভুমিকা রাখেন।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) নুরুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে সেখানে তিনি নিজে কয়ে ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন। তিনি নিজেও দুপুর ১২টার পর থেকে অবরুদ্ধ ছিলেন। এসি ল্যান্ডসহ পুলিশ বাহিরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। কি পরিমান রাবার বুলেট বা টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এ মুহুর্তে বলতে পারছি না। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ১১:১৯