এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছা পৌর শহরে এখন নিত্যদিনের সমস্যা যানজট। শহরবাসী যানজটের নাকালে পড়ে নাজেহাল হয়ে উঠেছে। শহরের বিভিন্ন ব্যস্তসড়ক দীর্ঘ সময় বন্ধ রেখে পৌরসভার ড্রেন ও পানির লাইনের কাজ করায় বেড়েই চলেছে যানজট। এ ছাড়া রাস্তা দখল করে (মালিকানা) মার্কেট নির্মাণ কাজ, চলাচলের রাস্তা দখল করে নির্মান সামগ্রী রাখা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। পৌর শহরে পুটপথে দোকানপাট, যত্রতত্র ভ্যান, ট্রাক, সিএসজি, ইজিবাইক ও বাস পাকিং করে রাখায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শহরবাসীর চলাচল করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে যেন দেখার কেউ নেই।শহরের চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কের পিটলীতলা এলাকায় সিএসজি স্ট্যান্ড, স্বর্ণপট্রির মোড়ে ভ্যান স্ট্যান্ড, ব্রীজ ঘাট এলাকায় ভ্যান, আলমসাধু, সিএসজি ও লোকালবাস স্ট্যান্ডসহ পুরো শহরেরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। এ ছাড়াও যেখানে সেখানে যানবাহনে মালামাল লোড-আনলোডিংয়ের কারণে যানজট লেগে থাকে।
ব্যবসায়ীসহ পথচারীরা বলেন, যত্রতত্র ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পাকিং, বাজারের ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে দোকানপাট বসানো, হাটের দিনসহ বিভিন্ন দিনে ট্রাকে মালামাল লোডিং আনলোডিং, যেখানে সেখানে পাকিংসহ নানান কারণে এই শহরে যানজট কমছেই না। এছাড়া বাজারের একমাত্র বাইপাস সড়ক যশোর স্ট্যান্ড মোড় থেকে চৌগাছা-মহেশপুর রোড়ে পৌরসভার নতুন ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার কাজে ধীরগতির ফলে সেখানে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ রয়েছে। ফলে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী পরিবহনসহ সমস্ত ভারি যানবাহন গুলো বাজারের মধ্যে দিয়ে চলাচল করার কারণে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ঘন্টা পর ঘন্টা শহর জুড়ে যানজট লেগেই থাকে।বাজারের সড়ক ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী, পথচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা যানজটের কারণে অতিষ্ট। মাঝে মাঝে রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স ও এই যানজটের কবলে আটকা পড়েন। সম্প্রতি যানজটের কবলে পড়ে পৌর মেয়র নিজেই মোটরসাইকেল থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
সাধারণ পথচারীদের অভিযোগ বাজারে যানজটের এই মানবসৃষ্ট কারণ ছাড়াও রয়েছে হাট ইজারাদারের অতি মুনাফা ওসরকার নির্ধারিত খাজনার চেয়ে সাত গুণ বেশি হারে খাজনা আদায়ের মানসিকতা। এই হাটের ইজারাদাররা ব্যাপক বেশি হারে খাজনা আদায় করে থাকেন। তার ওপর আরও বেশি টাকা আদায়ের জন্য যেখানে সেখানে ভ্রাম্যমাণ দোকান ও হকার বসিয়ে যানজটের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন।
তবে পৌর শহরকে যানজট মুক্ত করতে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদৎ হোসেন ফুটপথ দখল মুক্ত করতে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে থাকেন।শহরের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, এ সমস্যা সমাধানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যশোর বাসস্ট্যান্ড মোড়থেকে চৌগাছা-মহেশপুর বাইপাস সড়কটিতে চলা নতুন ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে ওই পথে ট্রাকসহ ভারি যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দিলে বাজারের যানজট অনেকটা কমে আসবে।চৌগাছা এবিসিডি কলেজের প্রভাষক রেজাউল করিম জানান, এখানে পরিকল্পনার ক্রুটি রয়েছে। এছাড়া দায়িত্বশীলরা চরমভাবে উদাসীন।
চৌগাছা সকারি কলেজের প্রভাষক জাফর ইকবাল লিটন বলেন, আপতত যানজট প্রবণ এলাকা থেকে ভ্যান, ইজিবাইক সরিয়ে শহরের বাইরে দিয়ে সাময়িক যানজট মুক্ত করা সম্ভব। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।চৌগাছা বাজার ব্যবসাযী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদৎ হোসেন বলেন, এ সমস্যা সমাধানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যশোর বাসস্ট্যান্ড মোড়থেকে চৌগাছা-মহেশপুর বাইপাস সড়কটিতে চলা নতুন ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে ওই পথে ট্রাকসহ ভারি যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দিলে বাজারের যানজট অনেকটা কমে আসবে। এ ছাড়া শহরের ভিতরে রাস্তার উপর নির্মাণ সামগ্রী রাখা বন্ধ করতে হবে।
পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী এস এম রুহুল আমিন বলেন, চৌগাছা-মহেশপুর রাস্তার নতুন ড্রেন নির্মান ও সংস্কার কাজ করছেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বিশেষ তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কাজ চলছে বেশী শ্রমিক খাটিয়ে দ্রুতই শেষ করা হবে।পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) গাজী আবুল কাশেম বলেন, দ্রুতই পৌর শহরের চলোমান কাজ শেষ করা হবে। চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের নতুন ড্রেন নির্মানের কাজ দ্রুত চলছে। শহরের ভিতরে রাস্তার উপর নির্মাণ সামগ্রী রাখা বন্ধ করতে সকলকেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহরের উন্নয়নে একটা মাস্টার প্লান করা হয়েছে। অচিরেই এই কাজ শুরু হবে। ফলে মাস্টার প্লানের কাজ করা হলে এ শহরের যানজট কমে আসবে।
কিউএনবি/অনিমা/২৮ জুলাই ২০২৩,/রাত ৮:০২