বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

পাখিমারা বিলে টিআরএম চালুসহ কৃষকের ক্ষতিপূরণ দাবিতে পানি কমিটির সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এস আর সাঈদ, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ২৬ জুন, ২০২৩
  • ৭৮ Time View

এস আর সাঈদ, কেশবপুর (যশোর) : কপোতাক্ষ অববাহিকার পাখিমারা বিলে পুনরায় টিআরএম চালু না হলে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ নদী পলিতে ভরাট হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হবে। কৃষকদের ক্ষতিপূরণের ৪ বছরের বকেয়া পরিশোধ করে পাখিমারা বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কারসহ পুনরায় (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) টিআরএম চালু করতে হবে। তানা হলে শেষ ভরসাস্থল শিবসা, খোলপেটুয়া নদীসহ সুন্দবনের নদী-খাল পলিতে ভরাট হয়ে সুন্দরবনের মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে। রোববার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উত্তরনের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে পানি কমিটির নেতৃবৃন্দ এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাশেম আলী ফকির।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত আশির দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ড উপকুলীয় বাঁধ প্রকল্পের আওতায় পোল্ডার নির্মাণের নামে জোয়ার ভাটাবাহী অসংখ্য নদ-নদীকে আবদ্ধ করে ফেলে। এতে জোয়ার ভাটার প্লাবন ভূমি বিল-খাল থেকে নদীকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফলে জোয়ারের পলি নদী বক্ষে জমে নদী ভরাটসহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে কপোতাক্ষ, বেতনা, মরিচ্চাপ, হরি, ভদ্রা, হরিহর, শৈলমারি, হামকুড়া, শালতা নদী পলীতে ভরাট হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে। শেষ ভরসাস্থল শিবসা, খোলপেটুয়া ও সুন্দরবনের নদী-খাল পলিতে ভরাট হলে জলাবদ্ধতা স্থায়ী আকার ধারণ করবে। জলাবদ্ধতায় ফসল, মৎস্য, পশুপালন, ঘরবাড়ি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হচ্ছে। চরম খাদ্য সংকট ও রোগ ব্যধির প্রাদুর্ভাব ঘটছে। জলাবদ্ধতা মোকাবিলায় সরকারিভাবে নদী, খাল খনন ও উপকুলীয় বাঁধ, স্লুইচ গেট নির্মাণ অব্যাহত আছে। এতে পলি সমস্যার সমাধান না হয়ে ১/২ বছর যেতে না যেতেই পলিতে ভরাট হচ্ছে নদ-নদী। ইতোপূর্বে ভবদহের বিল কেদারিয়া, বিল খুকশিয়া বিলে সরকারিভাবে টিআরএম চালু করে জনগণ সুফল পেয়েছে। একারণেই টিআরএম চালুর দাাবি এলাকাবাসির।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, কপোতাক্ষ নদ দর্শনা থেকে উৎপত্তি হয়ে যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরার সুন্দরবন পর্যন্ত বিস্তৃত। এর আববাহিকায় ২০ লাখ মানুষের জীবিকার জন্যে ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। ৯০ দশক থেকে কপোতাক্ষ অববাহিকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সরকার ২০১১-১২ অর্থবছরে কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প নামে ৪ বছর মেয়াদী ২৬২ কোটি টাকার পুনর্খনন প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়ন করা। এরফলে এলাকা জলাবদ্ধতা মুক্ত হয়, নদ নাব্য ফিরে পায়, বিল উঁচুসহ এলাকার উন্নয়ন ঘটে। কিন্তু ২০২১ সালের এপ্রিলে পাখিমারা বিলের বিধ্বস্ত হওয়া পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কারের নামে টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে ২ বছরেই নদে পলি জমে আবারও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ টিআরএম বিলের সংযোগ খালটি ভরাট হওয়ায় নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। ২০২০ সালের জুনে সরকার ২য় পর্যায়ে পাখিমারা বিলে পুনরায় টিআরএম চালু করতে ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ৩ বছরে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া, এ প্রকল্পে পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কারে কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। এখনও জমির মালিকের ক্ষতিপূরণের বকেয়া ৪ বছরের অর্থ বিতরণের কাজ শুরু হয়নি। ফলে টিআরএম চালু অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছে। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, উত্তরনের নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম, পানি কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মঈনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, প্রকল্প সমন্বয়কারী দীলিপ কুমার, কেশবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস আর সাঈদ প্রমুখ।

কিউএনবি/অনিমা/২৬ জুন ২০২৩,/দুপুর ১২:৫১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit