সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন

অভিনয়ের ‘গুরুর’ চলে যাওয়ার ১১ বছর

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১১৭ Time View

বিনোদন ডেস্ক : বাংলা সিনেমা ও নাটকের উজ্জলতম নক্ষত্র হুমায়ুন ফরীদি। অভিনয়কে যিনি নিয়ে গিয়েছিলেন শিল্পের পর্যায়ে। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন অভিনয়ের এই ‘গুরু’। এই বারবার তার কথা মনে পড়ে।

মৃত্যু নিয়ে হুমায়ুন ফরীদির দর্শন ছিল। ‘মৃত্যুর মতো এত স্নিগ্ধ, এত গভীর সুন্দর আর কিছু নেই। কারণ মৃত্যু অনিবার্য। তুমি যখন জন্মেছ, তখন মরতেই হবে। মৃত্যুর বিষয়টি মাথায় থাকলে কেউ পাপ করবে না। যেটা অনিবার্য, তাকে ভালোবাসাটাই শ্রেয়।’

তিনি আরও বলে গেছেন, ‘মৃত্যুকে ভয় পাওয়া মূর্খতা। জ্ঞানীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করো, গ্রহণ করো, বরণ করে নাও। তাহলে দেখবে জীবন কত সুন্দর।’

১৯৫২ সালের ২৯ মে তিনি ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন। প্রখ্যাত এই অভিনেতা অভিনয় মাধ্যমের সবকটা শাখায় অভাবনীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

হুমায়ুন ফরিদীর ক্যারিয়ার শুরু মঞ্চ থেকে। এরপর ছোটপর্দা, তারপর বড়পর্দা। সব জায়গায় তিনি ছড়িয়েছেন দ্যুতি। তিনি তার নান্দনিক অভিনয় নৈপুণ্যে হয়ে ওঠেন গুণীদের একজন।

তিনি তার অভিনয়ে বরাবরই প্রবেশ করতেন গভীরে। তাইতো কোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এক কথায় অসাধারণ অভিনেতা ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি।

হুমায়ুন ফরীদির অভিনয়ের শুরুটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলে থাকতেন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নাট্য প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নাট্যচার্য সেলিম আল দীনের নজরে পড়েন তিনি।

এরপর যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারের নাট্যচর্চার সঙ্গে। ঢাকা থিয়েটারের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন কিত্তনখোলা, মুন্তাসির ফ্যান্টাসি, কেরামত মঙ্গল, ধূর্ত উই প্রভৃতি নাটকে।

কেরামত মঙ্গল নাটকে কেরামত চরিত্রে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় এখনও আলোচিত হয় ঢাকার মঞ্চে।

টিভি নাটকে হুমায়ুন ফরীদি আলোচনায় আসেন শহিদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। নাটকটিতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন হুমায়ুন ফরীদি। এরপর দীর্ঘ সময় তিনি ছোটপর্দায় সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেছেন।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক ‘শকুন্তলা’, ‘ফণীমনসা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘মুন্তাসির ফ্যান্টাসি’, ‘কেরামত মঙ্গল’ প্রভৃতি। ১৯৯০ সালে নিজের পরিচালনায় ‘ভূত’ দিয়ে শেষ হয় ফরীদির ঢাকা থিয়েটারের জীবন।

আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’ ফরীদির অভিনীত প্রথম টিভি নাটক। তাঁর অন্য নাটকগুলোর মধ্যে ছিলো ‘সংশপ্তক’, ‘হঠাৎ একদিন’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘নীল নকশার সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘কাছের মানুষ’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মোহনা’, ‘ভবেরহাট’, ‘জহুরা’, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস’ ইত্যাদি।

ফরীদির প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু হয় তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’র মধ্য দিয়ে। এরপর, তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘সন্ত্রাস’, ‘বীরপুরুষ’, ‘দিনমজুর’, ‘লড়াকু’, ‘দহন’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘কন্যাদান’, ‘আঞ্জুমান’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’ প্রমুখ।
২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কয়েক ডজন টিভি নাটকে অভিনয় করে গেছেন তিনি।

কিউএনবি/অনিমা/১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/দুপুর ১:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit